হ্যাপেনিং লাইফ রয়েছে আপনার হাতের মুঠোয়, ছুঁয়ে থাকুন একে অপরকে

হ্যাপেনিং লাইফ

জাস্ট দুনিয়া ব্যুরো: হ্যাপেনিং লাইফ কাটাতে কী লাগে বলুন তো? জীবনের গতি ক্রমশ বাড়ছে। তার সঙ্গে পাল্লা দিয়ে বাড়ছে দুরত্ব। যার ফলে একসঙ্গে থেকেও আজ মানুষ বড্ড একা। আর একাকিত্বই মানুষকে ক্রমশ হতাশার জগতে ঠেলে দিচ্ছে। অনেকেই বুঝতে পারছে কিন্তু রাস্তা জানা নেই। নিজের প্রতিদিনের চলায় একটু রদ বদল আবার ফিরিয়ে দিতে পারে সেই সুখের ভাল থাকা। যার স্বপ্ন দেখে প্রত্যেকটি মানুষ। যে ভাল থাকার জন্যই দিনরাত এক করে টাকা রোজগারের জন্য ছুটে চলা। কিন্তু সুখ আর শান্তি কি কেনা যায়? তাই একটু রদবদল করা যাক জীবনে।

সকালে ঘুম থেকে ওঠা রাতে শুতে যাওয়াটা কয়েকটি ভাগে ভাগ করে নেওয়া যেতে পারে। স্বামী-স্ত্রী-সন্তানের ছোট সংসারে এই ছোট ছোট পরিবর্তনগুলো করা যেতেই পারে।

সকালে যে সময় ওঠেন তার থেকে  এক ঘণ্টা আগে উঠে স্বপরিবারে নিজেদের সোসাইটি বা পাড়ার মধ্যে  মনিং ওয়াক করতে বেরিয়ে পড়ুন। তাতে স্বাস্থ্যও ভাল থাকবে সঙ্গে দিনের শুরুটাই পরিবারের সঙ্গে, কাছের মানুষদের সঙ্গে শুরু হবে। এর পর বাড়ি ফিরে একসঙ্গে ব্রেকফাস্ট করুন। বাড়িতে রান্নার লোক না থাকলে স্বামী-স্ত্রী এক সঙ্গেই ব্রেকফাস্ট বানান। তার পরটা তো চূড়ান্ত প্রফেশন্যাল দুনিয়ায় কেটে যাবে।

তবে এর মধ্যেও জুড়ে থাকা যায় কাছের মানুষের সঙ্গে। অফিস পৌঁছে একে অপরের খোঁজ নিন। জীবনসঙ্গী অফিস পৌঁছল কিনা জানুন। লাঞ্চের সময় নিজে যখন খাবেন তখন তাঁরও খোঁজ নিন তিনি খেয়েছেন কিনা। আসলে কাছের মানুষের সঙ্গে জুড়ে থাকা। এগুলো অবশ্য মন থেকে আসতে হবে। ভিতর থেকে না হলে কিন্তু জীবনসঙ্গীটি টের পেয়ে যাবেন।

হ্যাপেনিং লাইফ

বাড়িতে যদি বয়স্ক বাবা-মা থাকেন অফিসে থাকার সময় তাঁদেরও একবার খবর অবশ্যই নিন। তার সঙ্গে জেনে নিন আপনার সন্তানটি কী করছে। কথা বলার বয়স হলে তার সঙ্গেও কথা বলুন। শুনে মনে হচ্ছে অফিসের মাঝে এত কিছুর সময় কোথায়? কিন্তু সত্যিই কি এক মিনিটের একটা ফোন করতে গেলে কাজের ব্যাঘাত ঘটে?

একটুও না।

আর হোয়াটসঅ্যাপের যুগে কাছের মানুষের সঙ্গে সারাক্ষণই যোগাযোগ রাখা যায়। দিন কেটে যাবে এ ভাবেই। যে আগে বাড়ি ফিরবেন তিনি বাড়ি গিয়ে অপর জনের খবর নিন। বা যে পরে বাড়ি ফিরবেন, অপরজন বড়ি ফিরল কিনা একটা হোয়াটঅ্যাপ করে জেনে নিন। বাড়িই ফিরে সম্ভব হলে একসঙ্গে ডিনার করুন। তার পর আপনার প্রিয় ব্যালকনিতে কিছুটা সময় কাটান। তার সঙ্গী হতে পারে গরম গরম কফির কাপ। ভাগাভাগ করে নিন সারাদিনের কথা। হালকা মিউজিকও চলতে পারে যদি দু’জনেই গান শুনতে ভালবাসেন। মিউজিকের মত্য হিলিং পাওয়ার আর কিছুর নেই।

আসলে এ ভাবেই আজকের যুগে যোগাযোগ রাখতে হয় না হলেই ক্রমশ দুরত্ম বাড়তে থাকে। আর যখন টের পাওয়া যায় তখন হয়তো অভিমান, হতাশা গ্রাস করে ফেলেছে দু’জনকেই। যখনই বুঝতে পারবেন, যে বুঝতে পারবেন সেই এগিয়ে যান সমস্যার সমাধানে। এখানে কোনও অপমান, অসম্মান ইগো থাকে না। শুধু ভালবাসুন।

শেষে একটা কাজ অবশ্যই করবেন, সুযোগ পেলেই বেরিয়ে পড়ুন শহর থেকে বাইরে। উইকএন্ড কাটিয়ে ফিরুর। বছরে দু’বার প্রকৃতির কাছে বেড়াতে যান। সেটা পাহাড় হতে পারে, সমুদ্র, বা জঙ্গল। বা কোনও রেসর্টেই সময় কাটিয়ে আসুন। একে অপরকে পছন্দের জিনিস কিনে দিন। পছন্দের রেস্টুরেন্টে নিয়ে যান। রেঁধেও খাওয়াতে পারেন। জানবেন আপনাদের সম্পর্কের প্রভাব আপনার সন্তানের উপর যেমন প্রভাব ফেলবে তেমনই গোটা পরিবারের উপরও এর প্রভাব পড়বে।

আর একটা কথা মনে রাখবেন, স্বামী-স্ত্রী সম্পর্কের সব থেকে বড় সম্পদ স্পর্শ। একে অপরকে ছুয়ে থাকুন। সে শরীরে হোক বা মনে, স্পর্শ হারাবেন না। আজও যেন একে অপরের স্পর্শে শিহরণ জাগে শরীরে-মনে। আগের মতই মুখ দেখেই পড়ে ফেলুন মন। দেখবেনন আপনার মানুষটি আপনারই আছে। আপনিই বুঝতে পারছিলেন না। তবেই জানবেন বেঁচে আছেন আপনি। বেঁচে আছে সম্পর্ক। প্রেমে আছেন আপনারা। প্রেমের কোনও বয়স হয় না। কে বলেছে বিবাহিত জীবন এক সময় এক ঘেয়ে হয়ে যায়। জীবনকে হ্যাপেনিং করে রাখা যায় সারাজীবন। যা দেখে হিংসে করবে বাকিরা। চ্যালেঞ্জটা নিয়েই ফেলুন আজ থেকে।

(লাইফস্টাইলের আরও খবরের জন্য ক্লিক করুন এই লিঙ্কে)