অ্যাংজাইটি মানসিক স্বাস্থ্যের উপর প্রভাব ফেলছে, কাটিয়ে ওঠার উপায় কী

অ্যাংজাইটি

জাস্ট দুনিয়া ডেস্ক: অ্যাংজাইটি (Anxiety) মানুষের জীবনীশক্তির অনেকটাই কেড়ে নিচ্ছে। কিন্তু কেন হয় এই সমস্যা, কী থেকে হয়, কীভাবেই বা মুক্তি সেরা রাস্তা খুঁজে পেতে হিমশিম খেতে হয় মানুষকে। আর এর থেকেই শুরু হয় মানসিক সমস্যার। বর্তমান সময়ে মেন্টার হেলথ একটা বড় ইস্যু সর্বত্র। সাধারণ মানুষ থেকে সেলিব্রিটি, সকলেই মানসিক স্বাস্থ্য সংক্রান্ত সমস্যার শিকার। যাঁদের উপর অনেকবেশি প্রত্যাশার চাপ তাঁরা ক্রমশ মানসিক অবসাদ, আতঙ্ক, অস্থিরতার শিকার হচ্ছেন। আর সেটাই তৈরি করছে অ্যাংজাইটি। যা সারাক্ষণ বয়ে চলেছে মানুষ। অ্যাংজাইটি আসলে কী? যা সারাক্ষণ একটা অস্বস্তি তৈরি করে কোনও কিছু নিয়ে। তার ফলে চাপ পড়ে মস্তিষ্কে এবং তার প্রভাব সরাসরি গিয়ে পড়ে শরীরে।

অ্যাংজাইটি কী কী থেকে হতে পারে? কোনও কিছু নিয়ে আতঙ্ক বা ভয় মনের মধ্যে গেঁথে বসা। আবেগের উপর নিয়ন্ত্রণ রাখতে না পারা। কথায় কথায় আঘাত পাওয়া। সামান্য কোনও খারাপ ব্যবহারে ভেঙে পড়া। কোনও লক্ষ্যে পৌঁছতে না পারা বা পৌঁছনোর লড়াই। কিছু হারানোর ভয়, সেটা চাকরি, সম্পর্ক, নিজের ভাললাগার জিনিসসহ অনেক কিছুই হতে পারে। সব কিছুই ভীষণভাবে প্রভাব ফেলে ব্রেনে। যার ফলে নার্ভ সারাক্ষণ সচল থাকে। অ্যাংজাইটিতে ভোগা মানুষগুলো সারাক্ষণই কিছু না কিছু নিয়ে ভেবেই চলে। যার ফলে ঘুম চলে যায়। যা শারীরিক স্বাস্থ্যের পক্ষে খুবই ভয়ঙ্কর রূপ নিতে পারে।

তবে মনের গভীরে পৌঁছে যাওয়া আতঙ্ক কাটানো খুব সহজ কাজ নয়। এই সমস্যা থেকে নিজেকেই যদি নিজে বের করে আনা যায় তার থেকে ভাল আর কিছু হতে পারে না। ভয় বা আতঙ্ক থেকে যদি না পালিয়ে আমরা সেটার মুখোমুখি দাঁড়াই তবেই এই আতঙ্ক কাটিয়ে ওঠা সম্ভব। কিন্তু নিজে নিজেই নিজের আতঙ্কের সামনে দাঁড়িয়ে পড়তে পারাটা কঠিন। তাতে কাছের মানুষরা সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দিলে অনেক সহজ হয়। তাঁর সঙ্গে তাঁর ভয়ের সরণিতে হাঁটুন, দেখবেন ভরসার মানুষ পাশে থাকলে কঠিন পথ পেরিয়ে যাওয়াটা সহজ হবে।

শারীরিক স্বাস্থ্যের পাশাপাশি মানসিক স্বাস্থ্যকেও সুস্থ রাখে ফিজিক্যাল অ্যাক্টিভিটি। যা এই করোনাকালে প্রায় হারিয়েই গিয়েছে। তাও সময় বের করে ঘরের মধ্যেই আধঘণ্টা ওয়ার্কআউট করতে পারলে অ্যাংজাইটি কাটিয়ে উঠতে নিজেকেই নিজে সাহায্য করা সম্ভব। এর সঙ্গে বর্তমানে বাঁচতে শিখুন। আমাদের জীবনে সত্যিই কি কোনও বর্তমান আছে? ভেবে দেখুন তো? ভবিষ্যতে কী হবে বা অতীতে কী ভু‌ল করেছি ভাবতে ভাবতেই আমরা বর্তমানটাকে হারিয়ে ফেলি। সত্যিই কি এই দুটো পরিবর্তন করা যায়? আমরা কী জানি ভবিষ্যতে কী হবে, জানি না। বা টাইম মেশিনে করে অতীতে ফিরে গিয়ে কি আমরা ভুলগুলো শুধৱে নিতে পারব, পারব না। তাই সেটা ভেবে বর্তমানটাকে কেন নষ্ট করব। ভেবে দেখুন আমাদের ৮০ শতাংশ অ্যাংজাইটি অতীত আর ভবিষ্যৎ নিয়েই।

আরও একটা কাজ খুব গুরুত্বপূর্ণ। নিজের ইচ্ছেকে, ভাবনাকে কখনও দমিয়ে রাখা উচিৎ নয়। যে ইচ্ছে অন্য কারও ক্ষতি করছে না তা চোখ বুঝে করে ফেলা উচিৎ। লোকে কী ভাববে তা না ভেবে। মানুষের মধ্যেই লোকে কী ভাববে এই বিষয়টিও খুব বেশি পরিমাণে প্রভাব ফেলে। মানুষের স্মৃতি খুব স্বল্প। আজ আপনাকে নিয়ে কাটাছেড়া করবে কাল অন্য কাউকে নিয়ে। তাই ‘লোকে কী ভাববে’ শব্দটা নিজের জীবন থেকে ছেটে ফেলনু। এটা ভাবতে গিয়েই আমরা আমাদের ইচ্ছে চেপে রাখি।

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, নিজের চিন্তা-ভাবনাকে দুই ভাবে ভাগ করুন, পজিটিভ ও নেগেটিভ। তার পর চেষ্টা করুন একটা একটা করে নেগেটিভ ভাবনাগুলো থেকে বেরিয়ে আসতে। আর উল্টোদিকে যে পজিটিভ ভাবনার তালিকা তৈরি হয়েছে সেগুলোতে আশ্রয় নিন। এমন অনেক ভয় হঠাৎ করে এসে মাথায় ভিড় করে যা আগে কখনও হয়নি। তাকে মাথায় জাঁকিয়ে বসতে দেওয়ার আগে আবিষ্কার করতে হবে কোথা থেকে সেটা এল। সেটা কোনও গল্প শুনে হতে পারে, কোনও খবর দেখে হতে পারে, বা কোনও সিনেমার প্রভাবও হতে পারে। তখন ভাবতে এই পৃথিবী শুরু এই সব নেগেটিভের উপর বেঁচে নেই বরং পজিটিভিটি এর থেকে অনেকগুন বেশি তাই আজও মানুষ আছে।

(প্রতিদিন নজর রাখুন জাস্ট দুনিয়ার খবরে)

(জাস্ট দুনিয়ার ফেসবুক পেজ লাইক করতে ক্লিক করুন)