ল্যাকমি ফ্যাশন উইকে এক টুকরো উত্তর-পূর্ব ভারত

এ বারের ল্যাকমে ফ্যাশন উইক মাতিয়ে রাখল উত্তর-পূর্ব ভারত। যেখানে জায়গা করে নিল মণিপুর, সিকিম, মেঘালয়, অসম, নাগাল্যান্ড ও ত্রিপুরা। মণিপুর থেকে এসেছিলেন ডিজাইনার রিচানা খুমানথেম। তিনি বোঝালেন, কী ভাবে সেখানে পরিধানে উঠে এসেছে মোটিভের ব্যবহার। শুধু তাই নয়, ঠিক কতটা সমস্যার মধ্যে দিয়ে সেই রাজ্যের মহিলাদের এই পেশায় টিকে থাকতে হয়েছে।
কারণ, সেখানে ফ্যাশন ডিজাইনিংকে পেশা করে এগোতে গেলে সব থেকে বড় সমস্যা কাঁচামালের জোগান। মণিপুরের বেশির ভাগ মানুষই সুতির জিনিস ব্যবহার করেন। যা আসে গুয়াহাটি থেকে। আর ওখানে তো যখন তখন কার্ফু বা বন্‌ধ হয়। এটা একটা নিত্য নৈমিত্যিক সমস্যা। তখন সব কাজ বন্ধ করে বসে থাকতে হয়। সেখান থেকেই উঠে এসে ল্যাকমি ফ্যাশন উইকে অংশ নিয়েছেন উত্তর-পূর্ব ভারতের ফ্যাশন ডিজাইনাররা।
কিন্তু, দু’দিন ধরে র‌্যাম্প মাতিয়ে রাখল সেই উত্তর-পূর্বের পোশাকই। খুমানথেমের সব পোশাকই ছিল সাদা সুতির কাপড়ের উপর। হ্যান্ডলুমের উপর ঘণ্টা-হাতা টিউনিক, স্কার্ট ও ড্রেস। মিতেই কমিউনিটির পোশাকের অনেকটাই ছিল তাঁর ডিজাইনে। মেঘালয় থেকে ল্যাকমে ফ্যাশন উইকে এসেছিলেন ডিজাইনার ড্যানিয়েল সিয়েম। যাঁর ডিজাইনার পোশাকের নাম ‘শাকিলুম’। তিনি নিয়ে এসেছিলেন রিভোই জেলার ফ্যাশন। বললেন, ‘‘আমরা সেই মেয়েদের নিয়ে কাজ করি, যাঁদের জীবনে অনেক সমস্যা। আমরা বিশ্বের সব ফ্যাশন উইকে অংশ নেওয়ার চেষ্টা করি। আমাদের ফেব্রিকের কাজ মানুষ পছন্দ করে। কিন্তু, বিভিন্ন সমস্যার জন্য একসঙ্গে অনেক অর্ডার নিতে পারি না।’’
অসম থেকে এসেছিলেন সোনম দুবাল, যিনি ফিরিয়ে আনার চেষ্টা করেছেন সেখানকার ঐতিহ্যশালী ডিজাইন। তাঁর বেশির ভাগ কাজই ছিল দেশিয় সিল্কের উপর। তিনি বললেন, ‘‘আমরা এমন একটা দেশে বাস করি যার অপার ঐতিহ্য। এবং তার অনেকটাই বেঁচে রয়েছে পোশাকের মধ্যে। এর মাধ্যমে যদি আমরা কিছুটা সময় ডিজাইনের ভাষায় কথা বলতে পারি যাটা আমাদের সংস্কৃতিকেই সমৃদ্ধ করবে।’’ তাঁর মতে, পুরো উত্তর-পূর্ব ভারত ভঙ্গুর অবস্থানের মধ্যে রয়েছে। যার উন্নতি হওয়া প্রয়োজন।
গোটা বিশ্ব জুড়ে ভারতের পোশাক নিয়ে প্রবল আগ্রহ। ভারতের বিভিন্ন প্রান্তেও উত্তর-পূর্ব ভারতের পোশাকের একটা চাহিদা রয়েছে। প্রায় লুকিয়ে থাকা ভারতের এতগুলো রাজ্যের ঐতিহ্যকে সামনে আনতেই ল্যাকমে ফ্যাশন উইকের এই উদ্যোগ।
ছবি: ল্যাকমে ফ্যাশন উইকে রিচানা খুমানথেমের সংগ্রহ।