লিগামেন্ট ছিঁড়ে গেলে প্লেয়ারদের সার্জারি করতেই হবে

লিগামেন্ট

ফুটবল খেলতে গেলে চোট লাগবেই। তার মধ্যে অন্যতম লিগামেন্ট ছিঁড়ে যাওয়া। সেই চোট ঠিক করতে অনেক সময় অস্ত্রোপচারেরও প্রয়োজন হয়। কিন্তু, কোন কোন ক্ষেত্রে তার প্রয়োজন? জাস্ট দুনিয়াকে সে কথা জানাচ্ছেন অর্থোপেডিক সার্জেন ও স্পোর্টস ইনজুরি স্পেশালিস্ট ঋত্বিক গঙ্গোপাধ্যায়।

  • ফুটবলারদের প্রায়ই অ্যান্টেরিয়র ক্রুশিয়েট লিগামেন্ট (এসিএল) ছিঁড়ে যেতে দেখা যায়। কেন এমনটা হয়?
    প্রথমে বলি, ফুটবল হল একটা বডি কনট্যাক্ট গেম। এবং খুবই গতিশীল। ফলে এই খেলায় চোট-আঘাতের সম্ভাবনা প্রবল। এসিএল আমাদের হাঁটুর ফিমার আর টিবিয়ার মধ্যে সামনের দিক থেকে সংযোগ রক্ষা করে। এ বার খেলার সময় যদি কেউ হঠাৎ দিক পরিবর্তন করতে যায় বা কোনও কারণে যদি হাঁটু টুইস্ট হয়ে যায় বা কেউ যদি সরাসরি এসে হাঁটুতে আঘাত করে, তা হলে এসিএলে চোট লাগতে পারে।
  • কী ধরনের চোট হতে পারে এসিএলে?
    লিগামেন্ট স্প্রেইন হতে পারে। আংশিক ভাবে ছিঁড়ে যেতে পারে। আবার সম্পূর্ণও ছিঁড়ে যেতে পারে এসিএল।
  • আংশিক ছিঁড়ে গেলে চিকিৎসা কী?
    খেলোয়াড় বাদে সাধারণ মানুষের ক্ষেত্রে এসিএল আংশিক ছিঁড়ে গেলে অনেক সময় সার্জারির প্রয়োজন হয় না। কিন্তু, ফুটবলারদের সার্জারি করতেই হয়। কারণ, এতে লিগামেন্টের জোর অনেকটা কমে যায়। হাঁটুর স্টেবিলিটিও কমে যায়। তাই সার্জারি প্রয়োজন।

হাসপাতালের পাঁচতারা ব্যাবসা কী ভাবে চলে

  • তা হলে পুরো ছিঁড়ে গেলে তো সার্জারি আবশ্যিক?
    ঠিক তাই। এ ক্ষেত্রে সার্জারিটা মাস্ট।
  • কী ধরনের সার্জারি করতে হয়?
    অর্থোস্কোপিক সার্জারি করে লিগামেন্টের রিকনস্ট্রাকশন করতে হয়। এখানে বলা দরকার, হাঁটুর চোট নিয়ে কোনও খেলোয়াড় এলে প্রথমে দেখতে হয়, তাঁর কোনও ফ্র্যাকচার আছে কি না। যদি না থাকে, তা হলে তিন সপ্তাহের বিশ্রাম। এই সময়টায় তাঁর কোয়াড্রিসেপস, হ্যামস্ট্রিং— প্রভৃতি পেশীর জোর বাড়ানোর জন্য এক্সারসাইজ করতে হয়। তার পর, তাঁকে ক্লিনিক্যালি অ্যাসেস করতে হয়। এমআরআই করে দেখতে হয় লিগামেন্ট ছিঁড়েছে কি না। যদি ছিঁড়ে গিয়ে থাকে, তা হলে কতটা ছিঁড়েছে তা-ও দেখতে হয়।
লিগামেন্ট

এসিএল টিয়ার হলে কী হয়।

  • এর পর সার্জারি?
    হ্যাঁ। তবে সেটা প্রধানত মাইক্রোসার্জারি। সাধারণত হ্যামস্ট্রিং থেকে গ্রাফট নিয়ে রিকনস্ট্রাকশন করা হয়। এর পর ফিজিওথেরাপি। এটা যদি ঠিকঠাক করা যায়, তা হলে ৬ মাসের মধ্যে এক জন খেলোয়াড় মাঠে ফিরতে পারেন।
  • এমন কোনও কিছু কি করা যায়, যাতে এই চোট না লাগে?
    দেখুন, বডি কন্টাক্ট গেমে চোট তো লাগবেই। তবে, নিম্ন মানের কৃত্রিম মাঠে চোট লাগার সম্ভাবনা বেশি থাকে। আর একটা কথা, ট্রেনিংটা ঠিকঠাক হতে হবে। তা হলে চোটের সম্ভাবনাও কমবে।
  • যাঁরা গরিব খেলোয়াড় বা ছোট ক্লাবে খেলেন, তাঁদের পক্ষে তো এত টাকা খরচ করা কঠিন!
    এটা একেবারেই সত্যি নয়। বড় ক্লাবের ফুটবলাররা নামী-দামি হাসপাতালে যান। সেখানে খরচ বেশি। এর বাইরেও বহু জায়গায় উন্নত মানের সার্জারি হয়। এবং কম খরচে। সেখানে গেলে তাঁরা উপকৃতই হবেন। ফুটবলে চোট থাকবে। সার্জারিও থাকবে। গরিব বলে চিকিৎসা হবে না, এমনটা কখনওই নয়।