প্রাপ্তবয়স্ক মহিলাদের নিয়ে আদালতের রায়, তাঁদের সিদ্ধান্তই শেষ কথা

প্রাপ্তবয়স্ক মহিলাদের নিয়ে আদালতের রায়

জাস্ট দুনিয়া ডেস্ক: প্রাপ্তবয়স্ক মহিলাদের নিয়ে আদালতের রায় নতুন দিশা দেখাবে মেয়েদের। ভারতে অনার কিলিংয়ের পরিমান নেহাৎই কম নয়। শুধু কী তা গ্রাম্য ভারতে? একদমই নয়। বরং উচ্চবিত্ত, শহুরে সংস্কৃতির আনাচ-কানাচ ভীষনভাবে লুকিয়ে রয়েছে এই ভয়ঙ্কর সামাজিক রোগ। এদিন একটি মামলার রায় নতুন করে চোখ খুলে দিতে পারে এই ভারতের, এই মানুষদের। এদিন ইলাহাবাদ হাইকোর্টের একটি রায় চোখে আঙুল দিয়ে আবার দেখিয়ে দিল আজও চলছে মহিলাদের ইচ্ছের বিরুদ্ধে তাঁদের চালিত করার প্রথা।

আদালত এদিন রায় দিয়েছে, একজন প্রাপ্তবয়স্ক মহিলার অধিকার রয়েছে তাঁর নিজের মতো জীবন বেছে নেওয়ার। সেখানে কারও জোর করার কোনও অধিকার নেই। একটি ভিনধর্মী বিয়ের মামলার রায় দিতে গিয়ে এই মন্তব্য করেছে আদালত।

উত্তরপ্রদেশের সলমন বিয়ে করেছিলেন শিখাকে। কিন্তু শিখার পরিবার তা মেনে নেয়নি। তারা সলমনের বিরুদ্ধে অপহরণের মামলা করে। সেখানে তারা অভিযোগ করে তাদের মেয়েকে জোর করে বিয়ে করেছেন সলমন। এবং শিখাকে নাবালিকা বলা হয়।

সেই মতো মুখ্যবিচারবিভাগীয় ম্যাজিস্ট্রেট শিখাকে শিশু কল্যাণ কমিটিতে পাঠিয়ে দেয়। সেখানে কিছুদিন থাকার পর তাঁকে তাঁর পরিবারের হাতেই তুলে দেওয়া হয়। কিন্তু হাল ছাড়েননি সলমন। ভালবাসার মানুষকে ফিরে পেতে মরিয়া ছিলেন তিনি। তিনি পাল্টা মামলা করেন ইলাহাবাদ হাইকোর্টে।

সলমন অভিযোগ করেন, তাঁর স্ত্রীকে আটকে রাখা হয়েছে অন্যায়ভাবে। এবং শিখার মতের বিরুদ্ধে গিয়ে তাঁকে তাঁর পরিবারের হাতে তুলে দেওয়া হয়েছে। ন্যায় বিচার চান তিনি। সোমবার সেই মামলার শুনানি ছিল। সেখানেই ইলাহাবাদ হাইকোর্টের বিচারপতি পঙ্কজ নকভি ও বিবেক আগরওয়ালের ডিভিশন বেঞ্চ আগের রায়ের সমালোচনা করেন সঙ্গে বিচারবিভাগীয় ম্যাজিস্ট্রেটকে ভৎসর্ণা করেন। পুলিশেরও ভূমিকারও সমালোচনা করেন তাঁরা।

দুই বিচারপতি শিখার সঙ্গে আলাদা করে কথা বলেন। সেখানে শিখা তাঁর মতামত জানান। তিনি জানান, তিনি নিজের ইচ্ছেয় সলমনকে বিয়ে করেছিলেন। তিনি যে প্রাপ্তবয়স্ক সেই প্রমাণও তিনি আদালতে জমা দেন। সেখানে দেখা যায় তাঁর জন্ম ১৯৯৯ সালের ৪ অক্টোবর। সেই মতো তিনি তাঁর নিজের সিদ্ধান্ত নেওয়ার জায়গায় রয়েছে।

সলমনের সঙ্গে শিখা ফিরবেন তাঁর শ্বশুরবাড়ি ফিরবেন। ততদিন পর্যন্ত সলমন-শিখাকে পুলিশ নিরাপত্তা দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছে আদালত। ভিনধর্মে বিয়েকে সব সময়ই এই দেশে অপরাধ বলে ধরা হয়। অতীতে এর প্রমাণ বার বার পাওয়া গিয়েছে। বিশেষ করে মুসলিম ছেলে ও হিন্দু মেয়ের বিয়েকে ‘লভ জিহাদ’ আখ্যা দিয়ে এর বিরোধিতা করে চলেছে হিন্দুত্ববাদী সংগঠন।

(দেশের সব খবর জানতে এখানে ক্লিক করুন)

(জাস্ট দুনিয়ার ফেসবুক পেজ লাইক করতে ক্লিক করুন)