ডেস্টিনেশন ওয়েডিং-এর বদলে অন-বোর্ড ওয়েডিং, শিকেয় উঠল কোভিড বিধি

ডেস্টিনেশন ওয়েডিং

জাস্ট দুনিয়া ডেস্ক: ডেস্টিনেশন ওয়েডিং করবেনই ভেবেছিলেন হয়তো কিন্তু কোভিড অতিমারিতে প্রায় গোটা দেশ লকডাউনে। দেশের বাইরে যাওয়ার উপায় নেই। এই অবস্থায় সাধের বিয়ে প্রায় হাতছাড়া হতে বসেছিল। কিন্তু এত সহজে কী করে সেটা হতে দিত এই জুটি। তাই ভেবে ফেললেন অভিনব এক বিয়ের পরিকল্পনা। না হোক ডেস্টিনেশন ওয়েডিং তা বলে অন-বোর্ড ওয়েডিং হতে তো কোনও বাধা নেই। তাই পাত্র-পাত্রী সপরিবারের উড়লেন আকাশে। আর ভাসতে ভাসতেই হয়ে গেল বিয়ে। সব আচার মেনেই। না এখানেই শেষ নয়। মধুরেণ সমাপয়েৎ হয়নি এক্ষেত্রে। বরং কোভিড বিধি না মেনে প্রচুর লোক নিয়ে অন-বোর্ড ওয়েডিং করে এবার প্রশাসনের রক্তচক্ষুর সামনে নব্য বিবাহিত জুটি ও তাঁদের সঙ্গে থাকা প্রত্যেকে। হানিমুনটা কি তাহলে শ্রীঘরেই!

তামিলনাড়ু-তেও চলছে লকডাউন। ৩১ মে পর্যন্ত তা বাড়ানো হয়েছে নতুন করে। তার মধ্যেই স্পাইস জেটের চার্টার্ড বিমানটি ভাড়া করা হয়েছিল বেঙ্গালোরের উদ্দেশে। মাদুরাই থেকে ব্যাঙ্গালোরের পথেই হল বিয়ে। বোইং ৭৩৭ বিমানে সেই সময় হাজির ছিলেন দুই পরিবারের লোকজন এবং অতিথিরা। বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষ বিয়ের কথা জানতই না বলে জানানো হয়েছে।

এর পরই সেই বিয়ের ছবি ছড়িয়ে পড়ে নেট মাধ্যমে। কোথাও দেখা যাচ্ছে পাত্রীকে মঙ্গলসূত্র পরাচ্ছেন পাত্র। কোথাও দু’জনে বিমানে বসে হাত নাড়ছেন আবার কোথাও বেশ খোশ মেজাজে নব্য বিবাহিত জুটি। সঙ্গে ছিল ফটোগ্রাফারও। আর তাতেই দেখা যাচ্ছে চারদিকে রয়েছে প্রচুর মানুষ। দক্ষিণী সাজে সেজেছিলেন দু’জনেই। ছিল ফুলের মালা। বিমানের মধ্যেই চলল বিয়ের সব আচার-অনুষ্ঠান।

বিয়ের যে সব ছবি সামনে এসেছে তাতে প্রায় বেশিরভাগের মুখেই কোনও মাস্ক নেই। নেই সোশ্যাল ডিস্ট্যান্সিংয়ের কোনও ব্যাপার। মাদুরাই বিমান বন্দরের ডিরেক্টর এস সেঁথিল ভালাভান এএনআইকে বলেন, ‘‘গতকাল মাদুরাই থেকে স্পাইসজেটের এই চার্টার্ড বিমানটি ভাড়া করা হয়েছিল। বিমান বন্দর কর্তৃপক্ষ মাঝ আকাশে বিয়ের অনুষ্ঠান সম্পর্কে কিছু জানত না।’’

এক বার্তায় স্পাইসজেট কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, এজেন্টের থেকে ২৩ মে এই বিমানটি বুক করা হয়েছিল এবং বলা হয়েছিল বিয়ের পর জয়রাইডের জন্য। ভাড়া করার সময় তাঁদের কোভিড বিধি সম্পর্কে পরিষ্কার করে জানানো হয়েছিল। এবং বিমানের মধ্যে কোনও কিছু করার অনুমতি দেওয়া হয়নি। সবাইকে বিষয়টি বোঝানো হয়েছিল লিখিতভাবে এবং মুখেও বলা হয়েছিল। তা স্বত্বেও বিমানে বার বার তাদের অনুরোধ করা হয়েছিল যেন কোভিড বিধি না ভাঙা হয় এবং তাহলে তাদের বিরুদ্ধে শাস্তিযোগ্য ব্যবস্থা নেওয়া  হবে। কিন্তু তাঁরা কিছুই শোনেনি।

ইতিমধ্যে তদন্তের নির্দেশ দিয়েছে ডিজিসিএ। বিমান সংস্থা ও বিমান বন্দর কর্তৃপক্ষের থেকে পুরো রিপোর্ট চাওয়া হয়েছে। ওই বিমানে বিমানকর্মীদের আপাতত কাজ থেকে বসিয়ে দেওয়া হয়েছে। এবং স্পাইসজেটকে বলা হয়েছে কোভিড বিধি না মানার জন্য তাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের করতে।

শেষ পর্যন্ত এই বিয়ের শেষ কোথায় হয় সেটাই দেখার। তবে যে দেশে প্রতিদিন কোভিডে আক্রান্ত হয়ে হাজার হাজার মানুষের মৃত্যু হচ্ছে। যে দেশে কত কত মানুষ খেতে পাচ্ছে না। যেখানে গোটা দেশ একে অপরের পাশে দাঁড়াচ্ছে একটু অক্সিজেন, একটু খাবার নিয়ে, তখন টাকা ওড়ানোর এই শো-অফ কোনও সচেতন নাগরিকের প্রতিচ্ছবি হয়ে উঠতে পারে না। শাস্তি না হোক, তবে সমাজের কাছে একটা বার্তা যাওয়া খুবই প্রয়োজন।

(প্রতিদিন নজর রাখুন জাস্ট দুনিয়ার খবরে)

(জাস্ট দুনিয়ার ফেসবুক পেজ লাইক করতে ক্লিক করুন)