বিকাশ দুবে এনকাউন্টারে খতম, পুলিশের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্নে তোলপাড় গোটা দেশ

বিকাশ দুবে এনকাউন্টারে খতমউল্টে যাওয়া এই গাড়িতেই নিয়ে আসা হচ্ছিল বিকাশ দুবেকে।

জাস্ট দুনিয়া ডেস্ক: বিকাশ দুবে এনকাউন্টারে খতম, শুক্রবার সকালের এই ঘটনায় উত্তরপ্রদেশ পুলিশের ভূমিকা নিয়ে একাধিক প্রশ্ন উঠছে। সকাল থেকেই তোলপাড় গোটা দেশ। গত সাত দিনে বিকাশ দুবের ঘনিষ্ঠ সহযোগীদের বেশ কয়েক জনই পুলিশের সঙ্গে এনকাউন্টারে মারা গিয়েছে। তার পর এ দিন বিকাশও একই ভাবে মারা যাওয়ায় স্বাভাবিক ভাবেই প্রশ্ন উঠছে যোগী আদিত্যনাথের পুলিশের বিরুদ্ধে।

বৃহস্পতিবার সকালেই মধ্যপ্রদেশের উজ্জয়িনীতে মহাকাল মন্দির চত্বর থেকে গ্রেফতার করা হয় কানপুরের গ্যাংস্টার বিকাশ দুবেকে। মধ্য রাতেই মধ্যপ্রদেশ পুলিশের হাত থেকে বিকাশকে রিমান্ডে নিয়ে কানপুরে তাকে ফিরিয়ে আনছিল উত্তরপ্রদেশ পুলিশ। কিন্তু কানপুর পৌঁছনোর আগেই এ দিন সকালে পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষে মারা যায় বিকাশ। পুলিশের সঙ্গে এই সংঘর্ষ নিয়ে ইতিমধ্যেই বিভিন্ন মহলে প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে।


দেশের আরও খবরের জন্য এখানে ক্লিক করুন

উত্তরপ্রদেশ পুলিশ জানিয়েছেন, হাইওয়ে দিয়ে বিকাশকে কানপুর ফিরিয়ে আনার সময় পুলিশ-কনভয়ের যে গাড়িতে বিকাশ ছিল, সেটি উল্টে যায়। বৃষ্টিতে ভিজে যাওয়া রাস্তার এক জায়গায় বাঁক নিতে গিয়ে দুর্ঘটনা ঘটে বলে পুলিশের দাবি। গাড়ি উল্টে যেতেই এক পুলিশকর্মীর পিস্তল ছিনিয়ে নেয় বিকাশ। তার পর পালানোর সে চেষ্টা করে। পুলিশ তাকে আত্মসমর্পণ করতে বলে। কিন্তু তা না করে সে পুলিশকর্মীদের লক্ষ্য করে গুলি ছোড়ে। এর পরেই পুলিশ আত্মরক্ষার্থে পাল্টা গুলি চালায়। কানপুর (পশ্চিম)-এর পুলিশ সুপার সংবাদমাধ্যমকে জানিয়েছেন, গাড়ি দুর্ঘটনার পরেই এক পুলিশকর্মীর পিস্তল ছিনিয়ে পালানোর চেষ্টা করে বিকাশ দুবে। পুলিশ তাকে আত্মসমর্পণ করতে বলার পরে সে গুলি চালায়। বাধ্য হয়ে পাল্টা গুলি চালায় পুলিশ। এর পর গুলিবিদ্ধ হওয়া গুরুতর জখম বিকাশকে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে নিয়ে গেলে চিকিৎসকরা জানান, বিকাশ মারা গিয়েছে। তার বুকে ও হাতে গুলি লেগেছে। বিকাশ দুবে এনকাউন্টারে খতম হওয়ার পর কানপুরের আইজি মোহিত আগরওয়াল জানিয়েছেন, ওই ঘটনায় চার পুলিশকর্মীও আহত হয়েছেন।

গত শুক্রবার কানপুরের বিকরু গ্রামে বিকাশ দুবেকে একটি খুনের চেষ্টার মামলায় পাকড়াও করতে যায় বিশাল পুলিশ বাহিনী। কিন্তু অতর্কিতে হামলা চালায় বিকাশ ও তার দলবল। ওই ঘটনায় এক ডিএসপি পদমর্যাদার অফিসার-সহ আট পুলিশ কর্মীর প্রাণ যায়। এর পরেই বিকাশকে গ্রেফতার করতে মাঠে নামে উত্তরপ্রদেশ পুলিশ। বুধবার হরিয়ানার ফরিদাবাদের একটি হোটেলে পুলিশের নাকের ডগা থেকে পালিয়ে যায় সে। শেষে বৃহস্পতিবার উজ্জয়িনীর মহাকাল মন্দির চত্বর থেকে তাকে গ্রেফতার করে মধ্যপ্রদেশ পুলিশ। এর পর উত্তরপ্রদেশে ফিরিয়ে আনার সময়ে এনকাউন্টার।


(জাস্ট দুনিয়ার ফেসবুক পেজ লাইক করতে ক্লিক করুন)

তবে বিকাশ দুবে এনকাউন্টারে খতম হওয়ার পর এই এনকাউন্টারকে ‘ফেক’ হিসাবে বর্ণনা করে সোশ্যাল মিডিয়া দিনভর উত্তাল। আমজনতার পাশাপাশি পুলিশ-রাজনীতিক-তারকারাও উত্তরপ্রদেশ পুলিশের ভূমিকাকে প্রশ্নের মুখে দাঁড় করিয়েছেন। বিশেষ করে গত কয়েক দিন ধরে যে ভাবে বিকাশের ঘনিষ্ঠ সহযোগীদের এনকাউন্টারে মৃত্যু হচ্ছিল, তার পরে বিকাশের এই ঘটনায় প্রশ্ন আরও জোরদার হয়েছে। বিকাশের মৃত্যু নিয়ে উত্তরপ্রদেশ সরকারকে নিশানা করে টুইট করেছেন সমাজবাদী পার্টির নেতা অখিলেশ যাদব। তিনি লিখেছেন, “আসলে এই গাড়ি উল্টে যায়নি। এই গাড়ি না উল্টে গেলে সরকার উল্টে যেত।” কংগ্রেস নেতা দিগ্বিজয় সিংহ লিখেছেন, ‘‘আমরা যেটা সন্দেহ করছিলাম, সেটাই ঘটল। বিকাশ দুবের সঙ্গে কোন কোন রাজনৈতির নেতা ও পুলিশ অফিসাররা জড়িয়ে ছিল, তা আর জানা যাবে না।’’