উন্নাও গণধর্ষণ কাণ্ডের নির্যাতিতা পথ দুর্ঘটনায় গুরুতর জখম, অবস্থা আশঙ্কাজনক

উন্নাও গণধর্ষণ কাণ্ডের নির্যাতিতা পথ দুর্ঘটনায় গুরুতর জখমউন্নাও গণধর্ষণ কাণ্ডের নির্যাতিতা পথ দুর্ঘটনায় গুরুতর জখম

জাস্ট দুনিযা ডেস্ক: উন্নাও গণধর্ষণ কাণ্ডের নির্যাতিতা পথ দুর্ঘটনায় গুরুতর জখম হলেন। সপরিবারে তাঁরা রায়বরেলী যাচ্ছিলেন। সেই সময় পথে তাঁদের গাড়িতে সজোরে ধাক্কা মারে উল্টো দিক থেকে আসা একটি ট্রাক। ওই দুর্ঘটনায় দু’জনের মৃত্যু হয়েছে। গুরুতর জখম হয়েছেন ওই নির্যাতিতা। গাড়িতে থাকা এক আইনজীবীও ওই নির্যাতিতার সঙ্গে গুরুতর জখম হয়েছেন। তাঁদের লখনউয়ের একটি হাসপাতালে চিকিৎসা চলছে। তাঁদের অবস্থা আশঙ্কাজনক।

পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, নির্যাতিতার কাকা মহেশ সিং রায়বরেলীর জেলে বন্দি। তাঁর সঙ্গে দেখা করতে বৃষ্টির মধ্যেই রবিবার সকালে নির্যাতিতার পরিবারের সকলে রায়বরেলীর উদ্দেশে রওনা হয়েছিলেন। সঙ্গে ছিলেন পারিবারিক আইনজীবী মহেন্দ্র সিং। দুপুর ১টা নাগাদ পথে তাঁদের গাড়িতে এসে ধাক্কা মারে ওই ট্রাক। তাতে ঘটনাস্থলেই মৃত্যু হয় নির্যাতিতার মা এবং কাকিমার।

এই সংক্রান্ত আরও খবর পড়তে ক্লিক করুন…

দুর্ঘটনাগ্রস্ত ট্রাকটিকে আটক করেছে পুলিশ। কিন্তু তার চালকের হদিশ মেলেনি। দুর্ঘটনার পরেই তিনি ঘটনাস্থল থেকে চম্পট দেন বলে পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে। পুলিশ জানিয়েছে, তাঁর খোঁজে তল্লাশি চলছে। খোঁজ পাওয়ার চেষ্টা চলছে ওই ট্রাকের মালিকেরও। তবে কী ভাবে দুর্ঘটনা ঘটল সে বিষয়ে পুলিশের তরফে রবিবার রাত পর্যন্ত কিছু বলা হয়নি।

জেলার পুলিশ সুপার সুনীল কুমার সিং জানান, রায়বরেলী ও ফতেপুর জেলার সংযোগস্থলে দুর্ঘটনাটি ঘটেছে। আহতদের হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। তবে এই ঘটনার পিছনে কোনও ষড়যন্ত্র আছে কি না, প্রাথমিক তদন্তে তা নিয়ে কোনও প্রমাণ মেলেনি বলে পুলিশ সুপার জানিয়েছেন।

কেন ষড়যন্ত্রের তত্ত্ব উঠে আসছে?

২০১৮ সালে উন্নাও গণধর্ষণ কাণ্ড প্রকাশ্যে আসে। চাকরি দেওয়ার নাম করে ২০১৭-র জুন মাসে উত্তরপ্রদেশের বিজেপি বিধায়ক কুলদীপ সিং নিজের বাড়িতে ১৬ বছরের ওই কিশোরীকে ধর্ষণ করেন বলে অভিযোগ ওঠে। বিষয়টি নিয়ে বার বার থানায় অভিযোগ জানিয়েও লাভ হয়নি। উল্টে ওই কিশোরীর বাবাকেই থানায় তুলে নিয়ে যাওয়া হয়। উপায় না দেখে শেষমেশ মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথের বাসভবনের সামনে গায়ে আগুন লাগিয়ে আত্মঘাতী হতে যান নির্যাতিতা এবং তাঁর মা। তার পরেই থানার মধ্যে রহস্যজনক ভাবে মৃত্যু হয় তাঁর বাবার। কুলদীপ সেঙ্গারের ভাই অতুল সিং থানার মধ্যে তাঁকে পিটিয়ে খুন করেছে বলে অভিযোগ করে নির্যাতিতার পরিবার।

বিষয়টি নিয়ে দেশ জুড়ে নিন্দা শুরু হলে কুলদীপ সেঙ্গার, তাঁর ভাই অতুল এবং সহযোগীদের গ্রেফতার করে পুলিশ। তদন্তে নেমে তাদের বিরুদ্ধে ধর্ষণ, অপরাধমূলক ষড়যন্ত্রের মামলা দায়ের করে সিবিআই। শুরু হয় মামলাও। কিন্তু গত এক বছরে পরিস্থিতি অন্য দিকে মোড় নিয়েছে। বরং বয়স সংক্রান্ত ভুয়ো নথিপত্র জমা দেওয়ার অভিযোগ তুলে নির্যাতিতা ও তাঁর পরিবারের বিরুদ্ধেই মামলা দায়ের করেছে উত্তরপ্রদেশ পুলিশ।

বিজেপি বিধায়ক কুলদীপ সেঙ্গারের বিরুদ্ধে অভিযোগ আনায় লাগাতার হুমকি পাচ্ছিলেন বলে এর আগে একাধিক বার অভিযোগ করেছে নির্যাতিতার পরিবার। তবে এই দুর্ঘটনার সঙ্গে এ সবের কোনও যোগ আছে কি না, তা নিয়ে এখনও অন্ধকারে পুলিশ।

(জাস্ট দুনিয়ার ফেসবুক পেজ লাইক করতে ক্লিক করুন)