ত্রিপুরায় আবার আক্রান্ত তৃণমূল, পুলিশের সামনেই হামলার অভিযোগ

ত্রিপুরায় আবার আক্রান্ত তৃণমূল

জাস্ট দুনিয়া ডেস্ক: ত্রিপুরায় আবার আক্রান্ত তৃণমূল, পুলিশের সামনেই দলীয় কর্মীদের উপর হামলার অভিযোগ তোলা হল বিজেপির বিরুদ্ধে। রবিবার সকালে তৃণমূলের নেত্রী সায়নী ঘোষকে আগরতলা পূর্ব মহিলা থানায় জিজ্ঞাসাবাদের জন্য ডেকে পাঠানো হয়। তাঁর বিরুদ্ধে গাড়ি চাপার অভিযোগ উঠেছে— এই কারণ দেখিয়ে সায়নীকে থানায় ডেকে নিয়ে যাওয়া হয়। সায়নীর সঙ্গে যাওয়া তৃণমূল নেতা-কর্মীদের থানার সামনে পুলিশের উপস্থিতিতে বিজেপি মারধর করে বলে অভিযোগ।

আগামী কা‌ল অর্থাৎ সোমবার আগরতলা যাওয়ার কথা তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের। তার আগেই এমন ঘটনা ঘটায় গোটা তৃণমূল নেতৃত্ব ত্রিপুরার বিপ্লব দেবের সরকারের বিরুদ্ধে সরব হয়েছেন। টুইটারে একের পর নিন্দাবার্তা এবং বিপ্লব দেবের সরকারকে তুলোধনা করা হয়েছে। সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশ মুখ্যমন্ত্রী বিপ্লব এবং তাঁর প্রশাসন মানছে না বলেও অভিযোগ তুলেছেন খোদ অভি.এক। তিনি এ নিয়ে টুইটও করেছেন।

তৃণমূলের অভিযোগ, সায়নী যে হোটেলে উঠেছেন, শনিবার মধ্যরাত থেকেই সেটা ঘিরে ফেলে পুলিশ। রবিবার সকাল ১১টা নাগাদ পুলিশ হোটেলে ঢুকে সায়নীর খোঁজ করে। তাঁকে জোর করে থানায় নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করা হয় বলে তৃণমূলের দাবি। সেখানে তখন উপস্থিত ছিলেন পশ্চিমবঙ্গে তৃণমূলের রাজ্য সম্পাদক তথা মুখপাত্র কুণাল ঘোষ। তিনি পুলিশের কাছে জানতে চান, সায়নীকে থানায় নিয়ে যাওয়ার কোনও নোটিস আছে কি না? তৃণমূলের দাবি, পুলিশ কোনও নোটিস দেখাতে পারেনি। কিন্তু পুলিশ জানায়, সায়নীর বিরুদ্ধে গাড়ি চাপা দেওয়ার অভিযোগ রয়েছে। এর পর তৃণমূল সাংসদ সুস্মিতা দেব, কুণাল ঘোষ, অর্পিতা ঘোষ আগরতলা মহিলা থানায় সায়নীকে নিয়ে যান।

সায়নীকে যখন থানার ভিতর জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে, বাইরে তখন প্রবল উত্তেজনা। অভিযোগ, সায়নীর সঙ্গে যাওয়া তৃণমূল নেতা-কর্মীদের উপর পরিকল্পিত ভাবে হামলা চালায় বিজেপি। স্থানীয় তৃণমূল নেতা সুবল ভৌমিকের দাবি, ‘‘পুলিশকে কাজে লাগিয়ে তৃণমূলের রাস্তা আটকানোর চেষ্টা করছে বিজেপি। নেতা-কর্মীদের উপর ইটবৃষ্টি করা হয়। আর গোটা ঘটনা পুলিশ নীরব দর্শকের মতো দেখেছে।’’ কুণাল বলেন, ‘‘ত্রিপুরায় জঙ্গলের রাজত্ব চলছে। থানায় ডেকে এনে মেরে ফেলার পরিকল্পনা ছিল।’’ গোলমাল এমন পর্যায়ে পৌঁছয় যে, সায়নীকে জিজ্ঞাসাবাদ সাময়িক ভাবে বন্ধ রাখতে বাধ্য হয় পুলিশ। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে আশপাশের থানাগুলি থেকে বিরাট পুলিশ বাহিনী আনা হয়। মোতায়েন করা হয় আধা সামরিক বাহিনীও।

তৃণমূল নেতাদের অভিযোগ, শনিবার রাতে প্রচার সেরে হোটেলে ফেরার পথে আগরতলার পথে যানজটে আটকে যায় তাঁদের গাড়ি। গাড়িতে চালকের পাশে বসেছিলেন সায়নী ঘোষ। পিছনের আসনে ছিলেন অর্পিতা ঘোষ ও সুদীপ রাহা। আশেপাশের লোকজন সায়নীকে চিনতে পেরে হাত নাড়েন। তৃণমূল নেতাদের দাবি, জনতা সায়নীকে দেখে ‘খেলা হবে’ বলে স্লোগান তোলেন। পাল্টা তৃণমূল নেতারাও ‘খেলা হবে’ বলেন। তার পর হোটেলে ফেরেন সায়নীরা। অভিযোগ, এর পরেই পুলিশ ওই হোটেল ঘিরে ফেলে।

ত্রিপুরায় আবার আক্রান্ত তৃণমূল, এ দিনের ঘটনা নিয়ে টুইটারে সরব হন অভিষেক। টুইটে তিনি লেখেন, ‘বিপ্লব দেব এতই নির্লজ্জ যে, সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশকেও পাত্তা দিচ্ছেন না। অভিষেকের অভিযোগ, বিপ্লব বার বার তৃণমূল সমর্থক এবং মহিলা প্রার্থীদের নিরাপত্তা সুনিশ্চিত করার বদলে তাঁদের উপর হামলা চালাতে গুন্ডা পাঠাচ্ছেন। বিজেপির শাসনে গণতন্ত্রে প্রহসনে পরিণত হয়েছে।’


প্রতিদিন নজর রাখুন জাস্ট দুনিয়ার খবরে

(জাস্ট দুনিয়ার ফেসবুক পেজ লাইক করতে ক্লিক করুন)