কলেজ থেকে ফিরে বাজারে মাছ বিক্রি করেন এই ছাত্রী, নিতে হল পুলিশি নিরাপত্তা!

কলেজ পড়ুয়া এই ছাত্রী বাজারে মাছ বিক্রি করেকলেজ পড়ুয়া এই ছাত্রী বাজারে মাছ বিক্রি করে।

জাস্ট দুনিয়া ডেস্ক: সকালে কলেজ। বিকেলে বাজারে মাছ বিক্রি। সন্ধেবেলা পড়াশোনা। ফের সকালে কলেজ… এটাই প্রতি দিনের রুটিন হানান হামিদের।

কেরলের কোচির কাছে থাম্মানামে থাকে হানান। বয়স মেরেকেটে ২১। রোজ সকালে সে ৩০ কিলোমিটার সাইকেল চালিয়ে কলেজ যায়। ফিরতে ফিরতে সেই বিকেল। ফিরতি পথে ৩০ কিলোমিটার সাইকেল চালিয়ে বাড়িতে ফিরে যে একটু বিশ্রাম নেবে, তারও উপায় নেই। কারণ, সন্ধেবেলাতেই তো থাম্মানাম বাজারে তাকে মাছ নিয়ে বসতে হবে!

বাজারে দাঁড়িপাল্লায় মাছ চাপিয়ে কলেজ ইউনিফর্মে হানান তা বিক্রি করছে— এমন ছবি এবং ভিডিয়ো সম্প্রতি সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল হয়েছে। তার পর থেকেই হানান কার্যত সেলিব্রিটি। গল্পটা এখানেই থেমে যেতে পারত। কিন্তু, বাস্তবে তা হয়নি। এর পর সেই সোশ্যাল মিডিয়ার একটা অংশ তাকে ‘ভিলেন’ বানিয়েছে।

ঘটনাটা কী রকম?

এক দল মানুষ সোশ্যাল মিডিয়ায় ছড়িয়ে দেন, চলচ্চিত্র পরিচালক অরুণ গোপীর পরবর্তী ছবিতে কাজ করছেন হানান। বাজারে হানানের মাছ বিক্রি করার ছবি এবং ভিডিয়ো সেই ছবিরই প্রোমোশনের অংশ। ব্যস। এই ‘খবর’ জানার পর থেকেই নেটিজেনরা হানানের সমালোচনায় নেমে পড়েন। ওই ছাত্রীর বেঁচে থাকার সংগ্রাম নিয়ে ব্যঙ্গ শুরু হয় সোশ্যাল মিডিয়ায়।

প্রিয়ঙ্কা-নিক কি এনগেজমেন্টটা সেরেই ফেললেন?

হানান শেষমেশ সংবাদমাধ্যমে বলতে বাধ্য হয়, ‘‘আমার নামে কেউ কেউ অপপ্রচার করছেন। আমি সত্যিই কোনও ছবির প্রমোশনের জন্য মাছ বিক্রি করিনি। বাজারে মাছ বিক্রি করেই আমাদের রোজগার। আর কোনও পথেই রোজগার নেই আমাদের। পরিবারের পাশে দাঁড়াতেই আমি মাছ বিক্রি করি। এবং আমি পড়াশোনাও চালাতে চাই।’’

থোডুপুঝার একটি বেসরকারি কলেজে হানান বিএসসি পড়ছে। একটি মালায়ালম দৈনিক সংবাদপত্র হানানের জীবন কাহিনি নিয়ে সংবাদ প্রকাশ করে। তার পর থেকেই থাম্মানাম বাজারে ভিড় জমে যায় তাকে দেখার জন্য। কলেজ পড়ুয়া পড়াশোনা চালিয়ে যেতে মাছ বিক্রি করছে, এই খবরে চমকে ওঠে সোশ্যাল মিডিয়া। বাজারে এত ভিড় হয়ে যায় যে, হানানের নিরাপত্তায় পুলিশ নিয়োগ করতে হয় প্রশাসনকে।

কিন্তু, তার পরেই ‘গর্জে’ ওঠে সোশ্যাল মিডিয়ার একাংশ। তাদের মতে, হানানের ওই খবর ভুয়ো। একটি ছবির প্রচারেই ওই ছবি-ভিডিয়ো প্রকাশ করা হয়েছে। হানানকে বলতে হয়, ‘‘আমি মিথ্যাবাদী নই। আমার বিরুদ্ধে ওঠা সমস্ত অভিযোগ মিথ্যে। আমার সঙ্গে কোনও ছবি করিয়ের কোনও চুক্তি হয়নি।’’

পরিস্থিতি এমন জায়গায় গিয়েছে, কেরলের মুখ্যমন্ত্রী পিনারাই বিজয়ন পুলিশকে ব্যবস্থা নেওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন। যারা হানানকে ট্রোলড করেছেন সোশ্যাল মিডিয়ায়, তাঁদের বিরুদ্ধে আইনানুগ কড়া ব্যবস্থা নেওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী।