অসমে ৫ বাঙালিকে গুলি করে হত্যা, আলফা জঙ্গিদের দিকেই অভিযোগের তির

অসমে ৫ বাঙালিকে গুলি করে হত্যাঅসমে ৫ বাঙালিকে গুলি করে হত্যা

জাস্ট দুনিয়া ডেস্ক: অসমে ৫ বাঙালিকে গুলি করে হত্যা কেন করা হল? বৃহস্পতিবার মধ্যরাত পর্যন্ত অসম প্রশাসন সেই কারণই হাতড়ে যাচ্ছে। তবে, পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ইতিমধ্যেই এই ঘটনার সঙ্গে জাতীয় নাগরিক পঞ্জি বা এনআরসি-র কোনও যোগ আছে কি না তা নিয়ে প্রশ্ন তুলে দিয়েছেন।

বৃহস্পতিবার রাত পৌনে আটটা নাগাদ উচ্চ অসমের তিনসুকিয়া জেলায় পাঁচ জনকে গুলি করে হত্যা করা হয়। নিহতদের নাম, শ্যামল বিশ্বাস, অনন্ত বিশ্বাস, অভিনাশ বিশ্বাস, সুবল বিশ্বাস এবং ধনঞ্জয় নমশুদ্র। প্রাথমিক ভাবে জানা গিয়েছে, ইউনাইটেড লিবারেল ফ্রন্ট অব অসম (আলফা)-এর জঙ্গিরাই ওই ঘটনার সঙ্গে যুক্ত।

এ দিন সন্ধ্যায় তিনসুকিয়ার ধোলা-সাদিয়া সেতুর কাছে বেশ কয়েক জন বাঙালি নিজেদের মধ্যে তাস খেলছিলেন। সেই সময় জঙ্গিদের দলটি এসে অত্যাধুনিক আগ্নেয়াস্ত্র দিয়ে তাঁদের উপর নির্বিচারে গুলি চালায়। ঘটনাস্থলেই চার জনের মৃত্যু হয়। অন্য জনকে হাসপাতালে ‌নিয়ে যাওয়া হলে চিকিৎসকেরা মৃত বলে জানিয়ে দেন।

জম্মু-কাশ্মীরে গুলি করে মারা হল বিজেপির রাজ্য সম্পাদক ও তাঁর ভাইকে

ঘটনার কথা জানার পরেই একের পর এক টুইট করে ঘটনার তীব্র নিন্দা করেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তিনি নিহতদের নাম উল্লেখ করে প্রথমে লেখেন, ‘অসম থেকে ভয়ানক খবর এসেছে। আমরা তিনসুকিয়ার এই হত্যার ঘটনার তীব্র নিন্দা করছি। এটা কি এনআরসি নিয়ে অসমের সাম্প্রতিক ঘটনাক্রমের কোনও জের?’ পরে তিনি লেখেন, ‘ওই পরিবারগুলোর প্রতি সমবেদনা জানানোর কোনও ভাষা নেই। অপরাধীদের অবশ্যই দ্রুত শাস্তি হওয়া উচিত।’ আগামিকাল থেকে উত্তর এবং দক্ষিণবঙ্গের বিভিন্ন জায়গায় এই ঘটনার প্রতিবাদে প্রতিবাদে রাস্তায় নামবে বলেও টুইট করে জানিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী।

কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী রাজনাথ সিংও টুইট করে ঘটনার নিন্দা করেছেন। তিনি জানিয়েছেন, উচ্চ অসমে সাধারণ মানুষকে এ ভাবে হত্যা করার ঘটনায় ভীষণই উদ্বেগে আছি। এটা অত্যন্ত অমানবিক এবং নিন্দনীয় ঘটনা। অসমের মুখ্যমন্ত্রী সর্বানন্দ সনওয়ালের সঙ্গেও তিনি বিষয়টি নিয়ে কথা বলেছেন। অপরাধীদের বিরুদ্ধে কড়া ব্যবস্থা নেওয়ার নির্দেশও তিনি দিয়েছেন অসমের মুখ্যমন্ত্রীকে।

ঘটনার কথা শোনার পরেই সর্বানন্দ সনওয়াল রাজ্যের মন্ত্রী কেশব মহান্ত এবং তপনকুমার গগৈকে দ্রুত ঘটনাস্থলে পৌঁছনোর নির্দেশ দেন। অসম পুলিশের ডিজি কুলা সাইকিয়া এবং এডিজি মুকেশ অগরওয়াল্লাকেও ঘটনাস্থলে যাওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। এর আগেও আলফা জঙ্গিরা অন্য রাজ্য থেকে যাওয়া মানুষদের উপর হামলা চালিয়েছে। প্রায়ই এমন ঘটনার কথা প্রকাশ্যে আসে। গত ১৩ অক্টোবর গুয়াহাটির শুক্লেশ্বর ঘাট এলাকায় একটি বিস্ফোরণে ৪ জন অল্পবিস্তর আহতও হয়েছিলেন। ওই বিস্ফোরণের দায় নিয়ে আলফা পরে জানিয়েছিল, অসম বিরোধী কাজকর্মে জড়িত হিন্দু বাঙালিদের সতর্ক করতেই ওই বিস্ফোরণ ঘটানো হয়েছিল।