কোভিডের দ্বিতীয় ঢেউ, প্রায় তিন মাসে দেশে দৈনিক সংক্রমণ সর্বোচ্চ

কোভিডের দ্বিতীয় ঢেউ

জাস্ট দুনিয়া ডেস্ক: কোভিডের দ্বিতীয় ঢেউ, প্রায় তিন মাসে দেশে দৈনিক সংক্রমণ সর্বোচ্চ। যত দিন যাচ্ছে, দেশের সার্বিক করোনা পরিস্থিতি ফের ততই উদ্বেগের কারণ হয়ে উঠছে। মহারাষ্ট্রে তো কোভিডের দ্বিতীয় ঢেউ কার্যত এসেই পড়েছে, আরও কয়েকটি রাজ্যেও সেই আশঙ্কা দেখা দিচ্ছে। কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য মন্ত্রকের হিসেব অনুযায়ী, গত ২৪ ঘণ্টায় দেশে নতুন করে সংক্রমিত হয়েছেন ২৬,২৯১ জন। গত ৮৫ দিনের মধ্যে এটাই সর্বোচ্চ।

ক্রমশ ঘোরালো হয়ে ওঠা করোনা-পরিস্থিতি সামাল দিতে বুধবার সমস্ত মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে ভার্চুয়াল বৈঠকে বসতে পারেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। প্রধানমন্ত্রীর দফতর থেকে এখনও এ বিষয়ে সরকারি ভাবে কিছু জানানো হয়নি। কিন্তু সূত্রের খবর, ওই দিন দুপুর সাড়ে ১২টা নাগাদ মুখ্যমন্ত্রীদের সঙ্গে ই-আলোচনায় বসতে পারেন মোদী।


দেশের সব খবর জানতে এখানে ক্লিক করুন

এই পরিস্থিতিতে কংগ্রেস নেতা রাহুল গাঁধীর টুইট, ‘‘আগেও সাবধান করেছি। কোভিড-১৯ এখনও বড় বিপদ। মাস্ক পরুন, করোনা-বিধি মেনে চলুন।’’

মহারাষ্ট্রে করোনা সংক্রমণ যেন অপ্রতিরোধ্য! স্বাস্থ্য মন্ত্রকের হিসেব অনুযায়ী, গত ২৪ ঘণ্টায় ওই রাজ্যে নতুন করে সংক্রমণের সংখ্যা ১৬ হাজার ছাড়িয়েছে। এ বছরের মধ্যে এটাই সর্বোচ্চ। মুম্বইয়েও দৈনিক সংক্রমণ ২ হাজার ছাড়িয়েছে। মহারাষ্ট্রের পরিস্থিতি এতটাই ঘোরলো যে ওই রাজ্য থেকে আসা ব্যক্তিদের সাত দিন করে নিভৃতবাসে থাকা বাধ্যতামূলক করেছে মধ্যপ্রদেশ সরকার। মধ্যপ্রদেশের আটটি জেলা মহারাষ্ট্রের সীমানা লাগোয়া।

মধ্যপ্রদেশের মুখ্যসচিব রাজেশ রাজোরা গত কাল বলেছেন, সীমানা লাগোয়া মহারাষ্ট্রের জেলাগুলি থেকে যাঁরা মধ্যপ্রদেশে আসেন, তাঁদের এক সপ্তাহ নিভৃতবাসে থাকার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। ওই জেলাগুলি দিয়ে নিত্যদিন দুই রাজ্যের লোক সীমানা পারাপার করে থাকেন। মহারাষ্ট্র থেকে যাঁরা মধ্যপ্রদেশে ঢুকছেন তাঁদের চিহ্নিত করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে সীমানালাগোয়া জেলা প্রশাসনগুলিকে।

কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য মন্ত্রক এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, মহারাষ্ট্র, তামিলনাড়ু, পঞ্জাব, মধ্যপ্রদেশ, দিল্লি, গুজরাত, কর্নাটক ও হরিয়ানায় ক্রমশ সংক্রমণ বাড়ছে। বর্তমানে দেশে যত অ্যাক্টিভ রোগী রয়েছেন তার ৭৭ শতাংশই মহারাষ্ট্র, কেরল ও পঞ্জাবে। সংক্রমণের তালিকায় দ্বিতীয় স্থানে থাকলেও গত এক মাস ধরে কেরলে আক্রান্তের সংখ্যা ক্রমশ কমছে। কিন্তু গত কয়েক দিন ধরে পঞ্জাবে নতুন করে সংক্রমণের সংখ্যা দেড় হাজারের আশেপাশেই ঘোরাফেরা করছে।

সংক্রমণ বৃদ্ধির পাশাপাশি জোরকদমে চলছে টিকাকরণের প্রক্রিয়াও। দেশে এখনও পর্যন্ত ৩ কোটি টিকার ডোজ দেওয়া হয়েছে। সুপ্রিম কোর্টে কেন্দ্র আজ হলফনামা দিয়ে জানিয়েছে, করোনা প্রতিষেধক দেওয়া হচ্ছে কে কোন পেশায় যুক্ত রয়েছেন তা দেখে, জাতীয় স্বার্থে নয়। বিচারপতি, বিচার বিভাগের কর্মী, আইনজীবীদের কেন অগ্রাধিকারের ভিত্তিতে কোভিড টিকা দেওয়া হবে না, তা নিয়ে শীর্ষ আদালতে একটি জনস্বার্থ মামলা দায়ের হয়েছিল। সেই মামলায় কেন্দ্র জানিয়েছে, পেশার উপর ভিত্তি করে টিকাকরণ প্রক্রিয়া চলছে। আইনজীবীদের জন্য পৃথক ভাবে টিকাকরণের ব্যবস্থা করা যাবে না। হরিদ্বারে কুম্ভমেলা উপলক্ষে জনস্বাস্থ্য ও চিকিৎসা পরিকাঠামো খতিয়ে দেখতে উচ্চপর্যায়ের কমিটি নিয়োগ করেছে কেন্দ্র।

ভারতে অনেকের গোড়া থেকেই প্রতিষেধক নেওয়ার প্রশ্নে প্রবল দ্বিধা রয়েছে। এমনকি, চিকিৎসক সমাজের এক অংশ এখনও টিকা নেননি। ফলে ভারতে গত দু’মাসে মাত্র ৩.১৫ কোটি ব্যক্তি টিকার আওতায় এসেছেন। ভারতে কোভিশিল্ড ও ভারত বায়োটেক সংস্থার তৈরি কোভ্যাক্সিন প্রতিষেধক দিয়ে টিকাকরণের কাজ চালু রয়েছে।


(জাস্ট দুনিয়ার ফেসবুক পেজ লাইক করতে ক্লিক করুন)