সাধ্বী প্রজ্ঞা সিংহ ঠাকুর ফের বিতর্কে, তাঁর ‘অভিশাপেই’ মারা গিয়েছেন হেমন্ত করকরে!

সাধ্বী প্রজ্ঞাসাধ্বী প্রজ্ঞা

জাস্ট দুনিয়া ডেস্ক: সাধ্বী প্রজ্ঞা সিংহ ঠাকুর ফের বিতর্কে। ভোপালের বিজেপি প্রার্থী সাধ্বী প্রজ্ঞা সিংহ ঠাকুর বৃহস্পতিবার রাতে দলীয় কর্মীদের বলেন, ‘‘আমার অভিশাপেই মরতে হয়েছে করকরেকে। আমি ওই পুলিশ অফিসারকে অভিশাপ দেওয়ার এক মাসের মধ্যে তাঁর শ্রাদ্ধে বসতে হয়েছে পরিবারকে!’’

২০০৮ সালের ২৬ নভেম্বর মুম্বই হামলায় জঙ্গিদের গুলিতে মারা গিয়েছিলেন মহারাষ্ট্রের অ্যান্টিটেররিস্ট স্কোয়াড (এটিএস)-এর প্রধান হেমন্ত করকরে। সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে অকুতোভয় পুলিশ অফিসার কারকারে বীর হিসেবে গণ্য হন দেশবাসীর কাছে। আর সন্ত্রাসের মামলায় জামিনে মুক্ত সাধ্বী প্রজ্ঞা সিংহ ঠাকুর ওই মন্তব্য করে বিতর্কে জড়িয়েছেন।

গত বুধবারই বিজেপি সাধ্বী প্রজ্ঞার নাম ভোপালের প্রার্থী হিসাবে ঘোষণা করে। তার পর থেকেই বিতর্ক তৈরি হয়। খুন, সন্ত্রাস, দাঙ্গার চক্রান্তের মতো গুরুতর ধারায় অভিযুক্ত প্রজ্ঞা মালেগাঁও বিস্ফোরণ ও অজমের দরগার সামনে বিস্ফোরণ মামলার প্রধান অভিযুক্ত। তিনি আপাতত জামিনে মুক্ত রয়েছেন।

ভোটের আরও খবর পড়তে এখানে ক্লিক করুন

এই প্রজ্ঞাকে গ্রেফতার করেছিলেন হেমন্ত করকরে। ওই কর্মীসভায় সাধ্বী প্রজ্ঞা বিজেপি কর্মীদের বলেন, ‘‘করকরে আমাকে জেরা করতে‌ন। বার বার জিজ্ঞেস করতেন, কে এই সব হামলা চালিয়েছে? আমি বলতাম, কী জানি, ভগবান জানে। সব কিছু তিনিই তো করান। করকরে জবাবে বলেছিলে‌ন, তা হলে প্রশ্নের জবাব জানতে আমাকে ভগবানের কাছে যেতে হবে নাকি? আমি বলেছিলাম, তাই যাবেন। আপনি ভগবানের কাছেই যাবেন। আপনি মরবেন, ধ্বংস হয়ে যাবেন। আমাকে কম হেনস্থা করেছেন উনি!’’

সাধ্বীর দাবি, তিনি এই অভিশাপ দেওয়ার এক মাসের মধ্যেই জঙ্গিদের গুলিতে খুন হন করকরে। তাঁকে বিশ্বাসঘাতক ও হিন্দুবিরোধীও বলেছেন সাধ্বী প্রজ্ঞা। সাধ্বীর প্রার্থীপদ খারিজের দাবি জানিয়ে শনিবারই আদালতের দ্বারস্থ হয়েছেন এক জন। একই দাবি জানিয়ে নির্বাচন কমিশনেও আবেদন জমা পড়েছে। তাঁর বিরুদ্ধে অভিযোগ আসার পর সাধ্বীর বিতর্কিত মন্তব্য নিয়ে তদন্ত শুরু হয়েছে বলে জানিয়েছিলেন মধ্যপ্রদেশের মুখ্য নির্বাচনী আধিকারিক।

হেমন্ত করকরেকে নিয়ে এমন মন্তব্যে সমালোচনার ঝড় ওঠে। ঘটনার তীব্র নিন্দা করে আইপিএস অফিসারদের সংগঠন। কংগ্রেস জানিয়েছে, একমাত্র বিজেপি নেতারাই ২৬/১১-র বীর শহিদকে বিশ্বাসঘাতক বলতে পারে। সন্ত্রাসের থেকে মাতৃভূমিকে রক্ষার জন্য যে সব জওয়ান প্রাণ দিয়েছেন, এমন উক্তি তাঁদের সকলের পক্ষে অপমান। অন্য দিকে, বিজেপি সাধ্বীর এই মন্তব্য সমর্থন করেনি। তাদের মতে, বিজেপি করকরেকে সব সময় শহিদের মর্যাদা দিয়েছে। সাধ্বী ব্যক্তিগত কারণেই এমন মন্তব্য করে থাকতে পারেন বলেই বিবৃতি দিয়ে জানিয়েছে বিজেপি।

লোকসভা ভোটের দ্বিতীয় দফা, রাজ্যে মোটের উপর শান্তিতে নির্বাচন

মালেগাঁও বিস্ফোরণের এক নম্বর অভিযুক্ত সাধ্বীকে ২০১৫ সালে ক্লিন চিট দিয়েছিল জাতীয় তদন্তকারী সংস্থা এনআইএ। তদন্তকারীদের যুক্তি ছিল, সাধ্বীর বিরুদ্ধে কোনও প্রমাণ পাওয়া যায়নি। কিন্তু আদালত তাতে সায় দেয়নি। আদালত বলেছিল, এটা মেনে নেওয়া কঠিন। কারণ বিস্ফোরণে সাধ্বীর মোটরসাইকেল ব্যবহার হয়েছিল। তবে তুলনায় কঠোর মহারাষ্ট্র কন্ট্রোল অব অর্গানাইজড ক্রাইম অ্যাক্ট (মোকা) আইনে দোষী সাব্যস্ত না করে আনলফুল অ্যাকটিভিটিজ প্রিভেনশন অ্যাকটিভিটজ (ইউএপিএ) ধারায় শাস্তি ঘোষণা করে আদালত। ২০১৭ সালে জামিনে মুক্তি পান সাধ্বী।

(জাস্ট দুনিয়ার ফেসবুক পেজ লাইক করতে ক্লিক করুন)