শবরীমালা মন্দির প্রাঙ্গনে যে কোনও বয়সের মহিলাই ঢুকতে পারবেন: সুপ্রিম কোর্ট

শবরীমালা মন্দিরশবরীমালা মন্দির

জাস্ট দুনিয়া ডেস্ক: শবরীমালা মন্দির প্রাঙ্গনে যে কোনও বয়সের মহিলাই এখন থেকে প্রবেশ করতে পারবেন। ঢোকার ক্ষেত্রে আর কোনও বাধা রইল না। শুক্রবার সুপ্রিম কোর্টের পাঁচ বিচারপতির বেঞ্চ এই রায় দিয়েছে।

এত দিন কেরলের শবরীমালা মন্দির প্রাঙ্গনে ১০ থেকে ৫০ বছর বয়সের মহিলাদের প্রবেশ নিষিদ্ধ ছিল। কারণটা খুবই আশ্চর্যজনক! ওই বয়সের মহিলারা ঋতুমতী হন। শবরীমালা মন্দির প্রাঙ্গনের প্রধান বিগ্রহ আয়াপ্পা স্বামী ব্রহ্মচারী। কাজেই ঋতুযোগ্য কোনও মহিলা শবরীমালা মন্দির প্রাঙ্গনে প্রবেশ করলে তাঁর কৌমার্য্যব্রত ভেঙে যেতে পারে। সে কারণেই ওই নিষেধাজ্ঞা।

এই নীতির বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে ২০১৬ সালে শীর্ষ আদালতে একটি জনস্বার্থ মামলা দায়ের হয়। প্রধান বিচারপতির নেতৃত্বে পাঁচ সদস্যের বেঞ্চে আট দিনের শুনানি শেষ হয় গত ১ অগস্ট। রায়দানের দিন নির্ধারিত হয় আজ ২৮ সেপ্টেম্বর। এ দিন সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতি দীপক মিশ্রের নেতৃত্বাধীন পাঁচ সদস্যের বেঞ্চ জানিয়ে দিল, বয়সের ভিত্তিতে এই বৈষম্য অসাংবিধানিক এবং বেআইনি। এই নিয়ম অস্পৃশ্যতার মতো। অনৈতিক, বেআইনি এবং সংবিধান-বিরোধী। যে কোনও মহিলাই মন্দিরে প্রবেশ করে পুজো দিতে পারবেন। রায়ে শীর্ষ আদালতের পর্যবেক্ষণ, ধর্মাচরণে সকলের সমান অধিকার রয়েছে। মন্দিরে ঢোকার ক্ষেত্রেও সকলের সমান অধিকার। ধর্মাচরণের ক্ষেত্রে কোনও বৈষম্য চলে না বলেই বেঞ্চের মত।

ইন্দোনেশিয়ায় আছড়ে পড়ল সুনামি

এই শবরীমালা মন্দির পশ্চিমঘাট পর্বতের উপরে সমুদ্রপৃষ্ঠ থেকে প্রায় ১ হাজার ২৬০ মিটার উপরে একটি পাহাড়ের উপর। চার দিকে ১৬টি পাহাড়বেষ্টিত গভীর অরণ্যের মধ্যে দিয়ে যেতে হয় ওই মন্দিরে। তার মধ্যেই রয়েছে পেরিয়ার ব্যাঘ্র সংরক্ষণ কেন্দ্রও। প্রতি বছর দক্ষিণের রাজ্যগুলি থেকে বহু পুরুষ ভক্ত ও পর্যটক এই মন্দিরে যান। ১০ থেকে ৫০ বছর বয়সি ঋতুমতি মহিলাদের মন্দিরে প্রবেশ সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ। এমনকি, মন্দিরে ঢুকতে গেলে মহিলাদের বয়সের প্রমাণপত্র পর্যন্ত দেখাতে হয় কর্তৃপক্ষকে।

বয়সের ভিত্তিতে এই বৈষম্য অসাংবিধানিক এবং বেআইনি। এই নিয়ম অস্পৃশ্যতার মতো। অনৈতিক, বেআইনি এবং সংবিধান-বিরোধী।

তবে এ দিন সর্বসম্মত ভাবে এই রায় সুপ্রিম কোর্টে পাশ হয়নি। বেঞ্চের পাঁচ বিচারপতির মধ্যে একমাত্র মহিলা বিচারপতি ইন্দু মলহোত্র বাকি ৪ জনের মত মেনে নেননি। তাঁর মতে, ধর্মীয় আচার-আচারণে আদালত এ ভাবে হস্তক্ষেপ করতে পারে না। তা নিয়েও বিতর্ক বাধে।