১৬ কোটির ইঞ্জেকশন কিনতে হাত মেলাল গোটা দেশ, প্রাণ পেল ৫ মাসের শিশু

১৬ কোটির ইঞ্জেকশন

জাস্ট দুনিয়া ডেস্ক: ১৬ কোটির ইঞ্জেকশন কোথা থেকে আসবে ভেবেই রাতের ঘুম উড়েছিল ছোট্ট শিশুটির। ১৬ কোটি টাকা কেন তাঁর সিকিভাগ টাকাও এক সঙ্গে চোখে দেখেননি শিশুটির বাবা-মা। ধরেই নিয়েছিল সন্তানের চিকিৎসা করা তাঁদের পক্ষে আর সম্ভব নয়। কিন্তু ১৬ কোটি টাকার সেই ইঞ্জেকশনই বাঁচাতে পারে তাঁদের সন্তানকে। কোনও রাস্তাই খুঁজে পাচ্ছিলেন না তাঁরা। কিন্তু এভাবে সব সমস্যার সমাধান হবে তা স্বপ্নেও ভাবেননি আহমেদাবাদের এই দম্পতি। এখানেই আরও একবার প্রমানিত হল এই দেশ দশের স্বার্থে আজও ঝাঁপাতে পারে একসঙ্গে। ঠিক যেভাবে প্রতিদিন করোনা আবহ এই প্রমান দিচ্ছে, একইভাবে।

৫ মাসের ধৈর্যরাজ সিং রাঠৌরের জন্য এগিয়ে এল গোটা দেশ থেকে ২ লাখের উপর মানুষের সাহায্য। সময়টা মাত্র ৪২ দিন। অর্থ দিয়েছেন ২.৬ লাখ মানুষ। ইমপ্যাক্ট গুরু এই কাজে সাহায্য করে। তারাই এই টাকা সংগ্রহ করে এবং শিশুটির চিকিৎসার জন্য তাঁর পরিবারের হাতে তুলে দেয়। কেন্দ্র সরকার এই বিপুল পরিমান টাকার জন্য যে ট্যাক্স দিতে হত তাতে ছাড় দিয়েছে।

ঠিক কী রোগে আক্রান্ত ছিল ছোট্ট ছেলেটি? এমন রোগ যা বিশ্বের প্রতি ১০ হাজার শিশুর মধ্যে ১ জনের হয়। জন্ম থেকেই স্পাইনাল মাসকুলার অ্যাট্রোফি টাইপ-১ নামে নিউরোমাসকুলার রোগে আক্রান্ত ছিল সে। জিনঘটিত রোগ, এতটাই বিরল যে ডাক্তাররাও সংশয়ে ছিলেন একটা সময় পর্যন্ত। এই রোগে মানুষের অঙ্গপ্রত্যঙ্গ অচল হয়ে যায় এবং সঠিক চিকিৎসা না হলে মৃত্যু অনিবার্য।

সেই থেকেই শুরু হয় লড়াই। জানা এর থেকে মুক্তির একমাত্র উপায় একটি টিকা। যা মাত্র দু’বছর আগে আমেরিকায় ছাড়পত্র পায়। অ্যাভেক্সিসের তৈরি এই ওষুধের মাধ্যমে মিসিং জিনকে প্রতিস্থাপন করা হয়। এসএমএন১ জিনকে প্রতিস্থাপন করতে সাহায্য করে এই ওষুধ যা এই রোগের ক্ষেত্রে থাকে না। তবে শরীরের সব পেশী স্বাভাবিকভাবে কাজ করতে পারে।

যখন শিশুটির বাবা রাজদীপ সিং রাঠৌরকে এই তথ্য জানানা হয় তখন তাঁর মাথায় আকাশ ভেঙে পড়েছি। কিন্তু সাধারণ মানুষ সেই অসাধ্যকে সাধন করেছে। যাঁরা এই বিপুল পরিমাণ টাকা জোগারে সাহায্য করেছেন তাঁরা কেউ বিশাল বড়লোক নন, প্রচুর টাকার মালিক নন। সবাই সাধারণ মানুষ। আর শেষ পর্যন্ত সেই ১৬ কোটি টাকার ইঞ্জেকশন এসেছে, শিশুটিকে দেওয়াও হয়েছে। এই ভয়ঙ্কর রোগ থেকে মুক্তি পেয়েছে ৫ মাসের শিশুটি। খুশির হাওয়া তার পরিবারে।

(প্রতিদিন নজর রাখুন জাস্ট দুনিয়ার খবরে)

(জাস্ট দুনিয়ার ফেসবুক পেজ লাইক করতে ক্লিক করুন)