রাফাল যুদ্ধবিমান নিয়ে ওলাঁদের তোপ, ফের মোদীকে নিশানা রাহুলের

রাফা‌ল যুদ্ধবিমান

জাস্ট দুনিয়া ডেস্ক: রাফা‌ল যুদ্ধবিমান নিয়ে এ দেশের ভিতরেই যুদ্ধ বেধে গিয়েছে কংগ্রেস এবং বিজেপির মধ্যে। যুদ্ধের দামামাটা এ বার বাজিয়েছেন কংগ্রেস সভাপতি রাহুল গান্ধী

বেশ কিছু দিন ধরেই তিনি অভিযোগ তুলছিলেন। তবে, এ বার তাঁর সেই অভিযোগের বন্দুকে টোটা ভরে দিয়েছেন প্রাক্তন ফরাসি প্রেসিডেন্ট ফ্রাঁসোয়া ওলাঁদ। সম্প্রতি এক ফরাসি পত্রিকায় তিনি দাবি করেছেন, মোদী সরকারই অনিল অম্বানীর রিলায়্যান্স ডিফেন্স ইন্ডাস্ট্রিজকে রাফা‌ল যুদ্ধবিমান চুক্তিতে মনোনীত করতে অনুরোধ করেছিল ফরাসি সরকারকে। আর সেই কথা প্রকাশ্যে আসতেই ফের বিজেপি তথা নরেন্দ্র মোদীর বিরুদ্ধে তোপ দাগা শুরু করেছেন কংগ্রেস সভাপতি।

শনিবার নয়াদিল্লিতে এক সাংবাদিক বৈঠকে রাহুল অভিযোগ করেন, ‘‘প্রাক্তন ফরাসি প্রেসিডেন্ট আমাদের প্রধানমন্ত্রীকে চোর বলেছেন। কী এমন ঘটল যে, আমাদের প্রধানমন্ত্রী একেবারে চুপ করে গিয়েছেন। তাঁর মুখ থেকে একটি শব্দও বেরোচ্ছে না! এই মুহূর্তে প্রধানমন্ত্রীর জন্য সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ, হয় ফ্রাঁসোয়া ওলাঁদের কথা স্বীকার করে নেওয়া অথবা তাঁর বলা উচিত ওলাঁদ মিথ্যা কথা বলছেন। সত্যিটা তাঁর প্রকাশ্যে নিয়ে আসা উচিত।’’ যদিও রাহুল এবং ওলাঁদের বক্তব্যকে গুরুত্ব দিতে নারাজ বিজেপি। কেন্দ্রীয় মন্ত্রী রবিশঙ্কর প্রসাদ এ দিন জানিয়েছেন, রাহুলের এ সব মন্তব্য কুরুচিপূর্ণ।

ওই ফরাসি পত্রিকাটি দাবি করেছে, ওলাঁদ তাদের বলেছেন, ভারত সরকার ফরাসি সরকারের উপরে রিলায়্যান্সকে চাপিয়ে দিয়েছিল। তাঁদের সামনে কোনও বিকল্প ছিল না বলেই ওলাঁদের দাবি। ওলাঁদ প্রেসিডেন্ট থাকাকালীনই রাফা‌ল যুদ্ধবিমান চুক্তি হয়। ওলাঁদ ওই পত্রিকাকে যা বলেছেন, মূলত সেটাই কংগ্রেস সভাপতি দীর্ঘ দিন ধরে দাবি করে আসছিলেন। তাঁর দাবি ছিল, যুদ্ধবিমান তৈরির কোনও অভিজ্ঞতা ছিল না অনিল অম্বানীর সংস্থার। কিন্তু, বিপুল দেনায় জর্জরিত অনিলের সংস্থাকে রাফা‌ল যুদ্ধবিমান এর বরাত পাইয়ে দিয়েছেন মোদীই।

উত্তপ্ত কাশ্মীর ফের দু’দেশের কথাবার্তায় বাধা হয়ে দাঁড়াল

রাহুল আবারও অভিযোগ করেছেন, মোদী ব্যক্তিগত স্তরে রাফা‌ল যুদ্ধবিমান চুক্তির দর কষাকষি করেছেন। তাঁর টুইট, ‘ওলাঁদের দৌলতে জানলাম, প্রধানমন্ত্রী ব্যক্তিগত ভাবে কোটি কোটি ডলারের চুক্তি দেউলিয়া অনিল অম্বানীকে পাইয়ে দিয়েছেন। তিনি দেশকে ঠকিয়েছেন। জওয়ানদের রক্তকে অসম্মান করেছেন।’

২০১৫ সাল। ফ্রাঁসোয়া ওলাঁদ তখন ফরাসি প্রধানমন্ত্রী। সেই সময় নরেন্দ্র মোদী ফ্রান্স সফরে গিয়েছিলেন। আর আচমকাই ৩৬টি রাফা‌ল যুদ্ধবিমান কেনার চুক্তি ঘোষণা হয়। পরের বছর ওলাঁদ দিল্লি এলে সই হয় চুক্তি।

কংগ্রেসের দাবি, মোদী প্রায় তিন গুণ বেশি দামে ৩৬টি রাফাল কেনায় কোষাগারের ৪১ হাজার কোটি টাকা ক্ষতি হয়েছে। বাকি ৯০টি বিমান ভারতে তৈরির বরাত পেয়ে অনিলের সংস্থা কামাতে চলেছে প্রায় ৩০ হাজার কোটি টাকা।

শনিবার রাফা‌ল যুদ্ধবিমান চুক্তি নিয়ে মুখ খুলেছে ফরাসি সরকারও। তারা জানিয়েছে, রাফা‌ল যুদ্ধবিমান চুক্তিতে সহযোগী হিসেবে ভারতের কোন সংস্থাকে বেছে নেবে যুদ্ধবিমান নির্মাণকারী সংস্থা ‘দাসো অ্যাভিয়েশন’, সে ব্যাপারে তাদের কোনও ভূমিকা ছিল না। অর্থাত বর্তমান ফরাসি সরকার প্রাক্তন প্রেসিডেন্টের মূল বক্তব্যকে কিন্তু খণ্ডন করল না। ফলে, নরেন্দ্র মোদীর অস্বস্তি কমল না বলেই মনে করছে রাজনৈতিক শিবির।