পাহাড়েই হারিয়ে গেলেন পেম্বা শেরপা

পাহাড়েই হারিয়ে গেলেন পেম্বা শেরপাপেম্বা শেরপা।

জাস্ট দুনিয়া ব্যুরো: পাহাড়েই হারিয়ে গেলেন পেম্বা শেরপা । দার্জিলিংয়ের পাহাড় থেকে কাশ্মীরের পাহাড়ে গিয়ে হারিয়ে গেলেন পেম্বা। যাঁরা নিয়মিত পাহাড় চড়েন তাঁদের কাছে খুব জনপ্রিয় নাম পেম্বা শেরপা। অনেক কঠিন চড়াই উতরে দিয়েছেন তিনি। কিন্তু এ বার প্রকৃতির কাছে হার মানলেন।

বসন্ত সিংহ রায়ের নেতৃত্বে পুণে ও পশ্চিমবঙ্গ থেকে একটি দল গিয়েছিল সাসের কাংড়ি শৃঙ্গ জয় করতে। সাসের কাংড়ি ৪-এ পৌঁছেও গিয়েছিল পুরো দল। পেম্বা শেরপাও।  কিন্তু নামার সময় হঠাৎই পা পিছলে যায় পেম্বার। পাহাড়ের খাঁজে পড়ে যান। তার পর থেকে তাঁর আর খোঁজ মেলেনি।

সাসের কাংড়ি ৪ জয় করে ক্যাম্প ওয়ানে ফিরছিল পুরো দল। ১৩ জুলাই দুপুরের ঘটনা। দলের সঙ্গেই ছিলেন পেম্বার ভাই পাশাং। সারাদিন ধরে পেম্বাকে খুঁজলেও তাঁকে পাওয়া যায়নি। আটকে রয়েছেন হয়তো বরফের কোনও খাঁজে সবার চোখের আড়ালে। সাসের কাংড়ি ১-এর উচ্চতা ২৫ হাজার ১৭১ ফিট।

থাইল্যান্ডের গুহা থেকে উদ্ধার সকলেই

কারাকোরামের একদম পূর্বপ্রান্তের শৃঙ্গটি সাসের। যে শৃঙ্গতে বসন্ত সিংহ রায়রা উঠেছিলেন তার উচ্চতা ছিল ২৪ হাজার ৩৩১ ফিট। এখানে পৌঁছতে অনেকটা পথ পেড়তে হয় গ্লেসিয়ারের উপর দিয়ে। ফেরার সময় সেই গ্লেসিয়ারেই ফাটল ধরে এবং পা পিছলে সেই ফাটল দিয়েই পড়ে যান পেম্বা। তার পর আর তাঁকে খুঁজে পাওয়া যায়নি।

অনেকটাই  বয়স হয়ে গিয়েছিল পেম্বার। হয়তো আর কয়েক বছরের মধ্যেই অবসর নিতেন পাহাড় চড়া থেকে। কিন্তু তার আগেই ঘটে গল এত বড় দুর্ঘটনা। পেম্বার প্রথম বড় শৃঙ্গ জয় এভারেস্ট। তিনি এভারেস্টে উঠেছিলেন দু’বার। লোবুচে,  আমা দাবলামে একবার করে উঠেছিলেন। ইতালিয়ান ও অস্ট্রেলিয়ান আলপসেও ভারতের পতাকা উড়িয়ে এসেছিলেন পেম্বা।

২০১৩তে পাহাড়ে হারিয়ে যাওয়া দেহের সন্ধানে নেমেছিলেন তিনি। ২০১৪তে খুম্বুতে অস্বাভাবিক অ্যাভালাঞ্চ থেকে নিজের সঙ্গে সঙ্গে অনেককে বাঁচিয়েছিলেন পেম্বা। ২০১৫তে নেপালে ভূমিকম্পের জন্য তিনি এভারেস্টে চড়তে রাজি হননি। তাঁর এই সিদ্ধান্তের জন্য ন্যাশনাল জিওগ্রাফির লেখায় উঠে এসেছিল তাঁর নাম। সেই বছরই পশ্চিম নেপালের ডলপোতে দল নিয়ে গিয়েছিলেন তিনি। গিয়েছিলেন এভারেস্ট বেসক্যাম্পেও।

চেষ্টা চলছে এখনও যদি পাওয়া যায় পেম্বাকে। কিন্তু জীবিত অবস্থায় তাঁকে ফিরে পাওয়ার আর কোনও সম্ভাবনা নেই। পেম্বা শেরপার ফেসবুক ভড়ে গিয়েছে শুভেচ্ছায়। সবাই চাইছে পেম্বা আগের মতই উঠে দাড়াক। আবার পাহাড় চড়ুক।