বুরারি কাণ্ডে নয়া মোর, তদন্তের কেন্দ্রে এ বার ‘৫১’ নম্বর

বুরারি কাণ্ডেবুরারির ভাটিয়া বাড়ির মৃত সদস্যরা।

জাস্ট দুনিয়া ডেস্ক: বুরারি কাণ্ডে নয়া মোর। ঘটনা কখনও মনে হচ্ছে মিটে গেল আবার কখনও উঠে আসছে জটিল সব প্রশ্ন। এ বার নতুন প্রশ্নের সামনে গোয়েন্দারা। তাদের ভাবাচ্ছে একটা সংখ্যা, ‘৫১’। বুরারির ভাটিয়া পরিবারের বাড়ির আনাচ-কানাচ থেকে এখন শুধুই উঁকি দিচ্ছে এই ৫১ নম্বর।

প্রশ্ন উঠছে এই ৫১ নম্বরের পিছনের রহস্য ঘিরে। অন্ধবিশ্বাসই যে এই মৃত্যুর কারণ সেটা পরিষ্কার হয়ে গেলেও কি সেই অন্ধবিশ্বাস তা নিয়ে সংশয়ে পুলিশ। তদন্তে উঠে এসেছে নতুন তথ্য। ঘটনার কয়েকদিন আগেই সন্ত নগরের এক মোবাইলের দোকানে গিয়েছিলেন বাড়ির ছোট ছেলে ললিত ভাটিয়া। সেখানে তিনি এমন ১০টি ফোন নম্বর চান যার শেষ ‘৫১’ থাকবে। দোকানদারের দেওয়া ২০০ সিমকার্ডের মধ্যে থেকে ১০টি সিম কার্ড বেছেও নেন ললিত। কিন্তু দেখা যাচ্ছে সেই ১০টির মধ্যে দু’টি নম্বরই চালু করা হয়েছিল।

এখানেই শেষ নয়। পরিবারের মৃত সদস্যদের ফোন কল রেকর্ড খতিয়ে দেখা যাচ্ছে মৃত্যুর আগের দিন সকলে মিলে মোট ‘৫১’ জনকে ফোন করেছিল। এমনকি বাড়ির বিভিন্ন অংশ থেকে ‘৫১’ লেখা চিরকূটও উদ্ধার হয়েছে বলে গোয়েন্দা সূত্রের খবর। এই সবের মধ্যে থেকে পুলিশ এবং গোয়েন্দারা একটি বিষয়ে নিশ্চিত হতে পেড়েছে যে এই পুরো ঘটনার পিছনে ছিলেন ললিত ভাটিয়া। ললিতের হাতে লেখা ডাইরিও উদ্ধার হয়েছে ওই বাড়ি থেকে। যা তিনি গত ২০০৭ সাল থেকে লিখতেন। তা থেকেও অনেক তথ্য পাওয়া যাবে বলে বিশ্বাস তদন্তকারীদের।

কী ভাবে বুরারির ভাটিয়া পরিবারের ১১ জনের একসঙ্গে মৃত্যু হল?

সেখান থেকেই জানা গিয়েছে, ললিত তাঁর মৃত বাবার সঙ্গে কথা বলতেন। আর সেটা গোটা পরিবার বিশ্বাস করত। বাবাই তাঁকে বিত্তশালী হয়ে উঠতে সাহায্য করেছেন। সেখান থেকেই ললিত পরিবারের সবাইকে বলেছিলেন, সবাই গলায় ফাঁস দিলে তাদের কিছু হবে না। ড্যাডি এসে সবাইকে উদ্ধার করবেন।

প্রসঙ্গত,  ভাটিয়া পরিবারের ১১ জন সদস্যকে বুরারির বাড়িতে মৃত অবস্থায় পাওয়া যায়। সেই তালিকায় ছিলেন ললিতও। ললিতের হাত বাঁধা ছিল। প্রশ্ন উঠছে ললিত যদি সবটা করিয়ে থাকেন তা হলে ললিতের হাত কে বাঁধল। দ্বাদশ ব্যাক্তির উপস্থিতি এখনই উড়িয়ে দিচ্ছে না গোয়েন্দারা। খতিয়ে দেখা হচ্ছে পাশের বাড়ির সিসি টিভি ক্যামেরার ফুটেজও। কিছুদিন আগেই সিসি টিভি ফুটেজ দেখে অনেকটাই পরিষ্কার হয়েছিল। এ বার আবার নতুন প্রশ্নের সামনে গোটা ঘটনা।

পুলিশ এখন ‘সাইকলজিক্যাল অটপসি’র পথে হাঁটছে। এর মাধ্যমে কথা বলা হবে এই পরিবারের আত্মীয়, বন্ধু ও ঘনিষ্ঠদের সঙ্গে। সেই ১৩ জনের সঙ্গে কথা বলা হবে যাঁরা ১৭ জুন প্রিয়ঙ্কা ভাটিয়ার এনগেজমেন্টে উপস্থিত ছিলেন। অতিথিরা ২৩ জুন চলে যায় ভাটিয়াদের বাড়ি থেকে। তার এক সপ্তাহ পরেই ঘটে এই ঘটনা। সেই অতিথিদের সঙ্গে কথা বলে পুলিশ বোঝার চেষ্টা করছে ওই পরিবারের ১১ জনের মানসিক অবস্থাআ কেমন ছিল। বিশেষ করে ললিতের।

ললিতের শেষ লেখা অবশ্য বুঝিয়ে দিচ্ছে তিনি জানতেন তিনি সবাইকে নিয়ে মৃত্যুর পথে পাড়ি দিচ্ছেন। যা তিনি তাঁর ডাইরিতে বিস্তারিত লিখেছেন। নাম দিয়েছিলেন, ‘রোড টু গড’। শুধু পরিবারের বাকি ১০ জন জানতেন না। তাঁরা বিশ্বাস করেছিলেন ললিতকে।