#মিটু বিতর্কে এমজে আকবর আবার কাঠগড়ায়, ১৫তম অভিযোগের পর পদত্যাগ

আবার বিতর্কে এমজে আকবর

জাস্ট দুনিয়া ডেস্ক: #মিটু বিতর্কে এমজে আকবর আবার কাঠগড়ায়। যার জেড়ে শেষ পর্যন্ত পদত্যাগ করতে হল এমজে আকবরকে। এই নিয়ে ১৫তম মহিলা যিনি অভিযোগ আনলেন কেন্দ্রীয় মন্ত্রীর বিরুদ্ধে। ইতিমধ্যেই #মিটু বিতর্কে ১৪জন মহিলা অভিযোগ এনেছেন তাঁর বিরুদ্ধে। কিন্তু এই সব অভিযোগের দায় স্বীকার করে নিজের মন্ত্রীত্ব থেকে সরতে নারাজ ছিলেন এমজে আকবর, আগেই তা জানিয়ে দিয়েছিলেন। কিন্তু এই সব থামাতে পারেনি অভিযোগের লম্বা লাইনকে। আর সব অভিযোগই এসেছে তাঁর সাংবাদিকতার সময়ের।

১৫তম মহিলার অভিযোগ শারীরিক হেনস্তার। স্ক্রল ডট কমের এক আর্টিক্য়ালে তুষিতা প্যাটেল জানিয়েছেন তাঁর সঙ্গে কী কী ঘটিয়েছিলেন এমজে আকবর। জাতীয় সস্তরের খবরের কাগজ ‘এশিয়ান এজ’এর ১৫ বছর ধরে এডিটর ছিলেন এমজে আকবর। তাঁকে জোড় করে চুমু খাওয়া থেকে শুরু হোটেলের ঘরে অন্তর্বাস পরে তাঁকে দরজা খুলে দেওয়া। এই সবই রয়েছে সেই অভিযোগে।

তুষিতা বলেছেন, ‘‘আমি এতদিন ধরে সব শুনছিলাম, দেখছিলাম, পড়ছিলাম। কী ভাবে মিথ্যে কথা বলে যাচ্ছে আর যাঁর সঙ্গে অন্যায় হল তাঁকেই দোষী করার চেষ্টা চলছে কিছু বোকা বোকা মন্তব্য করে। এখন যদি আমি মুখ না খুলি তা হলে মনে হবে আমি আপনার অপরাধের ভাগিদার।’’

#মিটু ঝড়ে বিপর্যস্ত এ বার নরেন্দ্র মোদীর সরকারও

এমজে আকবরের সঙ্গে তুষিতার প্রথম দেখা কলকাতায়। ১৯৯২ সালে তিনি ট্রেনি হিসেবে যোগ দিয়েছিলেন টেলিগ্রাফে। সেই সময় সেখানেও বড় দায়িত্ব ছিলেন এমজে আকবর। বেশ কয়েকজন সহকর্মীর সঙ্গে এমজে আকবরের সঙ্গে তাঁর হোটেলে দেখা করতে গিয়েছিলেন তুষিতা। এর পর থেকে শুরু হয় আকবরের তাঁকে ফোন। এবং বার বার তুষিতাকে দেখা করতে বলা হয় সেই হোটেলের ঘরে।

একদিন বাধ্য হয়েই তুষিতাকে এমজে আকবরের সঙ্গে হোটেলের ঘরে দেখা করতে যেতে হয়। হোটেলর ঘরের কলিংবেল বাজানোর পরের দৃশ্য আজও ভুলতে পারেননি তুষিতা। দরজা খোলেন আকবর। সেই সময় তাঁর পরনে রয়েছে শুধু অন্তর্বাস। তুষিতা বলছেন, ‘‘আমি অবাক হয়ে দরজার বাইরেইই দাড়িয়ে ছিলাম। অস্বস্তি লাগছিল। কিন্তু সেই মানুষটি ভিআইপির মতো দাঁড়িয়েছিল। ওই ভাবে ২২ বছরের এক ট্রেনি জার্নালিস্টকে কেউ রিসিভ করতে পারে ভাবতে পারছিলাম না।’’

সে দিনের ঘটনা এর থেকে বেশি দূর গড়ায়নি তা পরিষ্কার তুষিতার কথায়। আবারও আর একদিন কাজের নাম করে তুষিতাকে তাঁর হোটেলের ঘরে ডেকে পাঠান আকবর। এর পর যা হল তা একজন নতুন কাজ করতে আসা মহিলার জন্য ভয়ঙ্কর অভিজ্ঞতা। তুষিতা বলেন, ‘‘হঠাৎই উঠে আমাকে জাপটে ধরে শক্ত করে চুমু খায়। ওর মুখের চায়ের গন্ধ আর গোঁফের সেই খোঁচা আমার স্মৃতিকে এখনও নাড়িয়ে দেয়। আমি ধাক্কা মেরে দৌড়তে শুরু করি। মূল রাস্তায় এসে থামি। একটা অটোয় উঠে হাউ হাউ করে কেঁদে ফেলেছিলাম।’’

পরের দিন সকালেও যে সেই ঘটনার পুনরাবৃত্তি ঘটবে তা কী ভুল করেও ভেবেছিলেন তুষিতা। বলেন, ‘‘খালি কনফারেন্স রুমে আবার আমাকে জাপটে ধরে কিস করে। হতাশায়, যন্ত্রণায়, লজ্জায়, অপমান অনেকক্ষণ ওখানেই বসে ছিলাম। যতক্ষণ না কান্না থেমেছে ততক্ষণ বাইরে যাইনি। আমি অপেক্ষা করছিলাম আকবরের বেরিয়ে যাওয়ার। তার পর নিজেকে শক্ত করে পেজ মেকআপের কাজ শেষ করতে বসি।’’

তুষিতার দাবি এমজে আকবর মিথ্যে বলা বন্ধ করে মেনে নিক। যে আইনি পথের ভয় দেখাচ্ছেন এমজে আকবর সেই পথের যে এই মেয়েরাও হাঁটতে পারে তাও জানিয়ে দিয়েছেন তুষিতা। ২০০০ সালে এশিয়ান এজ ছেড়ে দেন তুষিতা।