জেট এয়ার ওয়েজ যাত্রীদের নাক-কান দিয়ে রক্ত মাঝ আকাশে! নামিয়ে আনা হল

জেট এয়ার ওয়েজজেট এয়ার ওয়েজ-এর সেই সময়কার ছবি। সোশ্যাল মিডিয়া থেকে নেওয়া।

জাস্ট দুনিয়া ডেস্ক: জেট এয়ার ওয়েজ এর বিমানটি সবে মুম্বইয়ের মাটি ছেড়েছে। বৃহস্পতিবার মুম্বই থেকে জেট এয়ারওয়েজ এর বোয়িং ৭৩৭ বিমানটি যাচ্ছিল জয়পুর। তখনও ৬টা বাজেনি। মিনিট পাঁচেক বাকি। কিন্তু, ওড়ার মিনিট দশেকের মধ্যেই যাত্রীদের সামনে উপর থেকে নেমে আসে অক্সিজেন মাস্ক। কোথাও কোনও ঘোষণা নেই। ফলে যাত্রীরা বেশ অবাকই হয়ে গিয়েছিলেন।

আশ্চর্যের আরও বাকি ছিল তখনও। কিছু ক্ষণের মধ্যেই যাত্রীরা গরমে হাঁসফাঁস করতে থাকেন। শ্বাসকষ্ট শুরু হয়ে যায় অনেকের। তাঁদের কারও কারও নাক এবং কান দিয়ে রক্ত বার হতে থাকে। সঙ্গে সকলেরই প্রচণ্ড মাথা যন্ত্রণা। এ বার অবাকের বদলে আতঙ্ক ছড়াতে থাকে যাত্রীদের মধ্যে। এর পরেই সব যাত্রীকে নিয়ে মুম্বইয়ের ছত্রপতি শিবাজি টার্মিনাসে ফিরে আসে জেট এয়ার ওয়েজ এর বিমানটি। অসুস্থ যাত্রীদের সঙ্গে সঙ্গে প্রাথমিক চিকিৎসার ব্যবস্থা করা হয়। হাসপাতালে পাঠানো হয় কয়েক জনকে।

পরে ওই উড়ান সংস্থার তরফে জানানো হয়, বিমানটির কেবিনের প্রেসারাইজেশন সিস্টেম চালু করতে ভুলে গিয়েছিলেন কর্মীরা। ওই সিস্টেম বিমান ওড়ার পর তার ভিতরের বায়ুচাপ নিয়ন্ত্রিত করে। কিন্তু, ওই সিস্টেম চালু না করেই বিমান আকাশে উড়তে থাকে বলে বায়ুচাপ নিয়ন্ত্রণে ছিল না। ফলে যাত্রীদের সমস্যা হয় বলে জেট এয়ার ওয়েজ সূত্রে জানানো হয়েছে। এ দিন সকালে মুম্বই থেকে জয়পুরের উদ্দেশে রওনা হয়েছিল জেট এয়ারওয়েজ এর বোয়িং ৭৩৭ বিমানটি। তাতে ১৬৬ জন যাত্রী ছিলেন। উড়ান সংস্থার পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, কেবিনের প্রেসারাইজেশন সিস্টেম চালু করতে ভুলে গিয়েছিলেন বিমানের কর্মীরা। সেটি চালু না করার জন্যই, ওই ঘটনা ঘটেছে। পরিস্থিতির কথা টের পেয়েই ১৬৬ জন যাত্রী ও ৫ বিমান সেবিকা-সহ বিমানটিকে মুম্বইয়ের ছত্রপতি আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে ফিরিয়ে আনা হয়।

ভাঙা সেতু দেখলেই ছবি তুলে হোয়াটসঅ্যাপ করুন মন্ত্রীর মোবাইলে

ওই বিমানের এক যাত্রী ওই সময়ের একটি ভিডিয়ো তুলে টুইট করেন। সেই ভিডিয়োতে দেখা যাচ্ছে, সব যাত্রীই অক্সিজেন মাস্ক পরে রয়েছেন। দেখেই মনে হচ্ছে সকল যাত্রীই আতঙ্কিত। ডিরেক্টর জেনারেল অব সিভিল এভিয়েশন (ডিজিসিএ) তরফে জানানো হয়েছে, এয়ারক্র্যাফট অ্যাক্সিডেন্ট ইনভেস্টিগেশন ব্যুরো তদন্ত শুরু করেছে। ডিজিসিএ-র জয়েন্ট ডিরেক্টর জেনারেল ললিত গুপ্ত জানিয়েছেন, ওই বিমানের কর্মীরা ব্লিড সুইচ চালু করতে ভুলে গিয়েছিলেন। যার ফলে কেবিনের এয়ার প্রেসার ঠিক ছিল না। তাতেই অক্সিজেন মাস্ক নেমে আসে। প্রাথমিক তদন্তে তাঁরা জানতে পেরেছেন, ৩০ জন যাত্রীর নাক দিয়ে রক্ত বেরোতে শুরু করেছিল। কারও কারও কান দিয়েও রক্ত বেরোয়। অনেকে মাথা যন্ত্রণার কথা জানিয়েছেন।

জেট এয়ার ওয়েজ এর মুখপাত্র জানিয়েছেন, ঘটনার সঙ্গে সঙ্গে মুম্বই বিমানবন্দরে ফিরিয়ে আনা হয় ফ্লাইট ৯ডব্লিউ৬৯৭-কে। সব যাত্রীকে বিমান থেকে নামিয়ে টার্মিনালে নিয়ে যাওয়া হয়। কয়েকজন যাত্রীর সেখানেই প্রাথমিক চিকিৎসা করা হয়। পাঁচ জনকে স্থানীয় হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। ১৬৬ জন যাত্রীর মধ্যে ১৪৪ জনকে অন্য বিমানে জয়পুর পাঠানোর ব্যবস্থা করা হয়েছে। ওই বিমানের দুই পাইলটকে সাসপেন্ড করা হয়েছে। যত দিন না তদন্ত শেষ হচ্ছে, তাঁরা আর উড়তে পারবেন না।