কেরল বন্যা: ১৪ দিনে ৭১৩ কোটি, সাধারণ মানুষের সাহায্য ছাপিয়ে গেল কেন্দ্রের অনুদানকে

কেরল বন্য়া

জাস্ট দুনিয়া ডেস্ক:  কেরল বন্যা , মানুষ হয়ত এই ভাবেই সাড়া দেয় মানুষের অসহায়তার ডাকে। খারাপ সময়ই যে বন্ধু চিনিয়ে দেয়। এই প্রবাদ বাক্য ছোটবেলা থেকে সকলেই শুনেছেন। কিন্তু প্রমাণ ক’জন পেয়েছেন? তাও আবার এতটা বিরাট পরিমাণে? যা দেখাল কেরলের বন্যার্তদের পাশে দাড়ানোর ক্ষেত্রে গোটা বিশ্ব। হ্যাঁ এমনটাই ঘটেছে কেরলের বন্যাত্রানে। সাধারণ মানুষের তরফে দেওয়া ত্রানের পরিমাণ ছাপিয়ে গিয়েছে সরকারি ত্রানকে। শুধু মুখ্যমন্ত্রীর ত্রান তহবিলের হিসেব দেখেই স্তম্ভিত সবাই। ১৪ দিনের ত্রানে আশা এই একটি তহবিলের টাকার পরিমান ৭১৩.৯২ কোটি।  যা কেন্দ্র সরকারের অনুদানের থেকে ২০ শতাংশ বেশি। দু’ভাগে সরকার দিয়েছে ৬০০ কোটি।

কেরলের বন্যার ভয়াবহতা সবাইকে নাড়িয়ে দিয়েছিল। যে  কারণে দেশ এবং দেশের বাইরে থেকেও আসতে শুরু করে ত্রান। গোটা বিশ্বকে এ ভাবে প্রাকৃতিক দূর্যোগের কারণে কেউ পাশে পায়নি। যে ভাবে পেল কেরল।  এই ৭১৩.৯২ কোটির  ১৩২.৬২ কোটি এসেছে বিভিন্নি ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টের মাধ্যমে। ৪৩ কোটি এসেছে পেটিম-এর মাধ্যমে। এ ছাড়া বিভিন্ন অন-লাইন ট্রান্সফার তো রয়েছেই। মুখ্যমন্ত্রীর ত্রান তহবিলের জন্য শুধু স্টেট ব্যাঙ্ক অব ইন্ডিয়ায় জমা পড়েছে ৫১৮. ২৪ কোটি টাকা। এ ছাড়া বিভিন্ন সরকারি অফিসে কত টাকা ত্রান তহবিলের জন্য জমা পড়েছে তা এখনও জানা যায়নি। যদিও মুখ্যমন্ত্রীর ত্রানতহবিলে এত কোটি টাকার হিসেব থাকলেও এখনও পর্যন্ত হাতে এসে পৌঁছেছে মাত্র ২০ কোটি।

এ বার বৃষ্টি শুরু হয়েছে উত্তর ভারতের বিভিন্ন অঞ্চলে

গত বছর যখন সাইক্লোন ওখি কেরলের সমুদ্র তীরর্বতী অঞ্চলকে তছনছ করে দিয়েছিল তখন মুখ্যমন্ত্রীর ত্রান তহবিলে ১০৪ কোটি টাকা উঠেছিল। সেই সময় কেন্দ্রের কাছে রিহ্যাবের জন্য রাজ্য় ৭৩৪০ কোটি টাকার মতো চেয়েছিল। কিন্তু কেন্দ্র দিয়েছিল মাত্র ১৩৩ কোটি। এ বার ক্ষতির পরিমাণ অনেক কিছুকেই ছাপিয়ে গিয়েছে। যদিও কেন্দ্র এটাকে জাতীয় বিপর্যয় বললতে নারাজ। বরং প্রধানমন্ত্রী ভয়ঙ্কর দূর্যোগ আখ্যা দিয়েই কাজ সেরেছেন। সঙ্গে অনুদান।

যদিও এই বন্যাকে এক কথা ম্যান মেডই বলা হচ্ছে। যে পরিস্থিতিতে এই বন্যা হয়েছে তাতে যা ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ তা চাইলেই কমানো যেত বলে মনে করা হচ্ছে। কারণ কেরলের বন্যা বৃষ্টির জন্য হয়নি। হয়েছে জলাধারগুলি থেকে বিপুল পরিমাণে জল ছেড়ে দেওয়ায়। সেই জল যদি হঠাৎ করে না ছেড়ে পরিকল্পনা করে ছাড়া হত তা হলে এত প্রাণ যেত না। ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণও কম হত। এই বন্যায় ভেসে গিয়েছে গ্রামের পর গ্রাম। ধ্বংস হয়ে গিয়েছে ঘর বাড়ি। ভেসে গিয়েছে গবাদি পশু, মানুষ। জল কমতেই দেখা যাচ্ছে বিষোধর সাপের আনাগোনা। সঙ্গে বন্যা পরর্বতী সময়ের রোগের সংকটও রয়েছে। তবে সব খারাপের মধ্যেই আরও একবার মানুষ প্রমাণ করে দিয়েছে মানুষ আজও রয়েছে মানুষের পাশে।