কাজিরাঙ্গা ন্যাশনাল পার্ক ভাসছে, বিপদে হাজার হাজার বন্যপ্রাণ

কাজিরাঙ্গা ন্যাশনাল পার্ক ভাসছে

জাস্ট দুনিয়া ডেস্ক: কাজিরাঙ্গা ন্যাশনাল পার্ক ভাসছে বক্ষ্মপুত্রের জলে। প্রতিবছর এই একই পরিস্থিতির মুখে পড়ে প্রাণ যায় কত প্রানীর। বিশেষ করে কাজিরাঙ্গা ন্যাশনাল পার্ক বিখ্যাত গন্ডারের জন্য। বন্যা থেকে প্রাণ বাঁচাতে তারা জঙ্গল ছেড়ে চলে আসে হাইওয়েতে আর সেখানে গাড়ির ধাক্কায়ও মৃত্যু হয় অনেকের। এই মুহূর্তে এমনই দৃশ্য দেখা যাচ্ছে কাজিরাঙ্গার জঙ্গল সংলগ্ন রাস্তায়। হাতির দল, হরিণ, গন্ডার তো আছেই। বেশ কয়েকটি বাঘকে উদ্ধার করে পাঠানো হয়েছে অন্যত্রও। এ এক কঠিন লড়াই।

করোনাভাইরাসে জর্জরিত দেশ। বাদ নেই অসমও। তার মধ্যেই এই বন্যায় বড় বিপদের মুখে উত্তর-পূর্ব ভারতের এই রাজ্য। প্রতিবার সব থেকে বেশি ক্ষতিগ্রস্থ হয় কাজিরাঙ্গা ন্যাশনাল পার্ক। কারণ অনেকটাই নিচু জঙ্গলের জমি। ব্রক্ষ্মপুত্র নদীর জল সবার আগে প্লাবিত হয়ে ঢুকে পড়ে এই জঙ্গলেই। এবং বিপদের মুখে পড়ে হাজার হাজার বন্য প্রাণ।

ফরেস্ট ডিপার্টমেন্টের কর্মীরা প্রতিনিয়ত কাজ করে চলেছেন বন্যপ্রানকে রক্ষা করার জন্য। সম্প্রতি একটি গন্ডারের শাবককে জলে ডুবে যাওয়া থেকে উদ্ধার করেছেন তাঁরা। এমন দৃশ্যও দেখা গিয়েছে, ক্লান্ত, বিধ্বস্ত একটি গন্ডার হাইওয়ের পাশে শুয়ে রয়েছে। তাঁকে বাঁচাতে রাস্তার একদিক দিয়ে গাড়ি চালানো হচ্ছে।

মর্মান্তিক এরকম অনেক ছবি, ভিডিও ছড়িয়ে পড়েছে সর্বত্র। যেখানে দেখা যাচ্ছে গলা জলে অসহায়ের মতো দাঁড়িয়ে রয়েছে গন্ডার, হরিণ, বাঘ, হাতি। হাতির উচ্চতা অনেকটা বেশি হওয়ায় কিছুটা স্বস্তি। কিন্তু বিরাট চেহারার গন্ডারের উচ্চতা খুবই কম।

এই সমস্যার সমাধান করার জন্য জঙ্গলের মধ্যেই কিছু জায়গাকে চিহ্নিত করে তার উচ্চতা বাড়ানোর কথা ভাবা হচ্ছে। যাতে এরকম পরিস্থিতিতে পশুরা সেখানে নিজেরাই গিয়ে আশ্রয় নিতে পারে। তাহলে এত মৃত্যু দেখতে হবে না। জল শুকিয়ে গেলে আসল হিসেবটা পাওয়া যাবে।

২৮টি জেলার ৩৬ লাখ মানুষ বন্যায় ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে। ধুবরি, দারাং, বঙ্গায়গাও, গোয়ালপাড়া এবং কামরূপ জেলায় গত শুক্রবার একজন করে মানুষের মৃত্যু হয়েছে বন্যার কবলে পড়ে। বন্যায় এই বছর এখনও পর্যন্ত মৃতের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ১০২-এ।

৭৬ জনের মৃত্যু হয়েছে বন্যায় এবং ২৬ জন মারা গিয়েছে ল্যান্ড স্লাইডে। যাঁরা কোভিড-১৯-এর কারমে সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দিয়েছিলেন তাঁরাই এখন বন্যকবলিতদের জন্য কোমর বেঁধে নেমে পড়েছেন। সর্ব খাওয়ার, পানীয় জলের সমস্যা দেখা দিয়েছে। এর মধ্যে একদিনে অসমে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছে ১২১৮ জন। পুরো রাজ্যে মোট আক্রান্ত ২১ হাজার।

পুলিশ প্রশাসনও রীতিমতো হিমশিম খাচ্ছে দুই দিক সামলাতে গিয়ে।

(দেশের আরও খবরের জন্য এখানে ক্লিক করুন)

(জাস্ট দুনিয়ার ফেসবুক পেজ লাইক করতে ক্লিক করুন)