জাস্ট দুনিয়া ডেস্ক: হায়দ্রাবাদ হাইকোর্টের জজ বধূ নির্যাতনের দায়ে অভিযুক্ত। তাঁর হাত দিয়েই কত বিচার হয়েছে। তিনিই কারও শাস্তির কারণ হয়েছে বা কারও সাজার। কিন্তু তাঁকে কে সাজা দেবে? প্রশ্নটা আজ উঠছে যখন সামনে এসেছে এক ভয়ঙ্কর ভিডিও। যেখানে স্পষ্ট দেখা যাচ্ছে বধূ নির্যাতনের ভয়ঙ্কর সেই দৃশ্য। আর কে ঘটিয়েছেন সেই ঘটনা? সেটা শুনলে তাজ্জব হয়ে যেতে হবে। তিনি হায়দ্রাবাদ হাইকোর্টের অবসর প্রাপ্ত বিচারক নুটি রামামোহনা রাও। ২০১৭তে তিনি অবসর নেন।
যে ভিডিওটি এই মুহূর্তে সোশ্যাল মিডিয়ায় ঘুরছে সেটি একটি সিসিটিভি ফুটেজ। সেখানে দেখা যাচ্ছে ২০ এপ্রিল ২০১৯ রাত এগারোটার পরের ঘটনা।
প্রথমে সেই ভিডিওতে দেখা যাচ্ছে একজন অল্প বয়স্ক লোক একজন অল্প বয়স্ক মহিলাকে টেনে এনে ফেলছে এবং তাঁকে মারছে। তার সঙ্গে তার পরই যোগ দিচ্ছে আরও দু’জন মানুষ। একজন বয়স্ক মহিলা ও বয়স্ক লোক। এই বয়স্ক লোকটিই হচ্ছে হায়দ্রাবাদ হাইকোর্টের অবসর প্রাপ্ত বিচারক। আর বয়স্ক মহিলা তার স্ত্রী। স্ক্রীনে প্রথম যাদের দেখা গিয়েছিল তারা হল এই দম্পতির ছেলে ও পুত্রবধূ। এটা আসলে পুত্র বধুর উপর নির্যাতন চলছে।
এরপর দেখা যায় সেই অবসরপ্রাপ্ত বিচারক বধূ নির্যাতনের পুরো দায়িত্বটাই নিজের কাঁধে তুলে নেন। এর মধ্যেই তাদের দলে ঢুকে পড়ে আরও একজন মহিলা। সকলে মিলে চালাতে থাকে অত্যাচার। এর মধ্যেই দেখা যায় সেই দৃশ্য যা দেখলে কষ্টে দুমরে মুচরে যাবে যে কোনও স্বাভাদিইক মানুষ। ছোট একটি বাচ্চা সেই ঘরে ঢুকে পড়ে সেই নির্যাতিতাকে আঁকড়ে ধরতে চায়। বোঝাই যায় সে তাঁর মাকে বাঁচাতে চায়। কিন্তু ওই ছোট্ট প্রান বুঝতে পারে না কী হচ্ছে। এর মধ্যেই সেই ঘরে ঢুকে পড়ে আরও একটু বড় একটি বাচ্চা। সেও তাঁরই সন্তান। যদিও তাদের বাবা ধমকে সরিয়ে দেয় তাঁকে। সোফায় বসসে সে দেখতে থাকে তার মায়ের উপর অত্যাচারের দৃশ্য। যা ধরা পড়ে যায় বাড়িরই সিসিটিভি ক্যামেরায়।
দেখুন সেই ভয়ঙ্কর দৃশ্য যা দেখলে শিউরে উঠতে হয়
In the video you can see the retired Chief Justice of Tamil Nadu Justice Nooty Ram Mohan Rao bashing and manhandling his daughter in law with the support of his wife and son. pic.twitter.com/WZFEkRpbGS
— Pandit Ji (@panditjipranam) September 20, 2019
পড়ে সেই মহিলা মুখ খোলেন এবং জানা যায়, তাঁকে বাড়িতে একা রেখে সবাই মিলে সিনেমা দেখতে গিয়েছিল রাত। তারা যখন বাড়ি ফেরে তখন সে ঘুমোচ্ছিল। নাম সিন্ধু। এবং তাঁর স্বামী হঠাৎই তাঁর উপর চরাও হয় এবং তার প্রোমোশন না হওয়ার জন্য বৌকে দায়ী করে মারতে শুরু করেন। সাহায্যের জন্য চিৎকার করলে তাঁর শ্বশুর-শ্বাশুড়ি ছুটে এলেও বাঁচানোর বদলে আরও মারতে শুরু করে। এর পর অসুস্থ হয়ে পড়লে তাঁকে হাসপাতালে নিয়ে যায় তারাই।
হাসপাতালে বেডে শুয়ে সিন্ধু তাঁর কাহিনী সবাইকে জানিয়েছে। এবং অ্যাপোলো হাসপাতালের ডাক্তাররাই তাঁকে শেষ পর্যন্ত সাহায্য করেন। ২৬ এপ্রিল হাসপাতাল থেকে বাপের বাড়িতে ফিরে যান সিন্ধু। ২৭ এপ্রিল শ্বশুর বাড়ির সামনেই বাচ্চাদের ফেরৎ চেয়ে ধর্ণায় বসেন তিনি। বি-টেক ও এমবিএ করা একটি মেয়ের জীবনে যে এমন অন্ধকার নেমে আসতে পারে তা হয়তো কখনও ভুল করেও ভাবেননি সিন্ধু। কিন্তু কেউ কি এটাও ভাবতে পেরেছিল আজকে যুগে এই অকথ্য বধূ নির্যাতনের নজির রেখে যাবে সমাজের বিশিষ্ট মানুষরাই।
শেষ পর্যন্ত দুই সন্তানকেই নিজের কাছে আইনত পেয়ে গিয়েছেন সিন্ধু। ৪৯৮এ, ৩২৩, ৪০৬ ধারায় মামলা করা হয়েছে সকলের বিরুদ্ধে। ভিডিওই এই ঘটনার সব থেকে বড় সাক্ষী।
(দেশের আরও খবর পেতে ক্লিক করুন এই লিঙ্কে)
(জাস্ট দুনিয়ার ফেসবুক পেজ লাইক করতে ক্লিক করুন)