হায়দরাবাদ ধর্ষণ-কাণ্ডের চার অভিযুক্ত এনকাউন্টারে মৃত, গোটা দেশ তোলপাড়

হায়দরাবাদ ধর্ষণ-কাণ্ডের চার অভিযুক্ত এনকাউন্টারে মৃতহায়দরাবাদ ধর্ষণ-কাণ্ডের চার অভিযুক্ত এনকাউন্টারে মৃত

জাস্ট দুনিয়া ডেস্ক: হায়দরাবাদ ধর্ষণ-কাণ্ডের চার অভিযুক্ত এনকাউন্টারে মৃত তেলঙ্গানা পুলিশের হাতে। এই ঘটনায় গোটা দেশ জুড়ে আলোচনার ঝড়। এক পক্ষ যেমন তেলঙ্গানা পুলিশের ভূমিকার ভূয়ষী প্রশংসা করছেন, অপর পক্ষ আবার এই এনকাউন্টারকে ভুয়ো আখ্যা দিয়ে তেলঙ্গানা পুলিশের সমালোচনা করেছেন। তবে এনকাউন্টারে এই মৃত্যুর ঘটনায় খুশি ধর্ষিতা তরুণীর পরিবার। তাঁর বাবা জানিয়েছেন, মেয়ের আত্মা শান্তি পেল।

হায়দরাবাদ পুলিশ জানিয়েছে, শুক্রবার ভোরে অভিযুক্ত চার জনকে ঘটনাস্থলে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল। গত ২৭ নভেম্বর কী ভাবে তারা অপরাধ সংগঠিত করেছিল, সেই ঘটনা পুনর্নির্মাণ করতেই ঘটনাস্থলে নিয়ে যাওয়া হয় মহম্মদ আরিফ (২৬), জল্লু শিবা (২০), জল্লু নবীন (২০) এবং চিন্তাকুন্তা চেন্নাকেশাভুলু (২০)-কে। এ দিন বিকেলে সাংবাদিক বৈঠকে সাইবেরাবাদের পুলিশ কমিশনার ভি সি সজ্জনার জানান, ঘটনাস্থলে পৌঁছনো মাত্র পুলিশ কর্মীদের হাত ছাড়িয়ে নেয় ওই চার জন। তার পর পাথর ছুড়ে মারতে থাকে। এর পর পুলিশকর্মীদের অস্ত্র ছিনিয়ে নেয় তারা। গুলিও চালায়। আত্মরক্ষার্থেই পুলিশ এর পর গুলি চালায়। ঘটনাস্থলেই মারা যায় ওই চার অভিযুক্ত।


দেশের আরও খবর পড়তে ক্লিক করুন

পুলিশের ১০ জনের একটি দল অভিযুক্তদের নিয়ে এ দিন ভোরে হায়দরাবাদ থেকে ৬০ কিলোমিটার দূরের সাদনগরে যায়। ওই জায়গাতেই গত ২৭ নভেম্বর পশুচিকিৎসক এক তরুণীকে গণধর্ষণের পর পুড়িয়ে খুন করা হয়। কিন্তু ঘটনাস্থলে পৌঁছতেই পুলিশের উপর আক্রমণ এবং অস্ত্র ছিনতাইয়ের কারণে আত্মরক্ষার্থে গুলি চালানো হয় বলে সজ্জনারের দাবি। তিনি এ দিন বলেন, ‘‘আইন তার কর্তব্য পালন করেছে।’’ সাংবাদিক বৈঠকে সজ্জনার আরও জানান, পুনর্নির্মাণের জন্য ঘটনাস্থলে নিয়ে গেলে অভিযুক্তরা পালানোর চেষ্টা করে, পুলিশের অস্ত্র ছিনিয়ে নিয়ে গুলি চালায়। পুলিশের পাল্টা গুলিতে মৃত্যু হয় তেলঙ্গানায় তরুণী চিকিৎসককে গণধর্ষণ ও খুনের অভিযোগে ধৃত চার অভিযুক্তের। যাঁরা এই ঘটনা নিয়ে প্রশ্ন তুলবেন বা তদন্ত করবেন, সবাইকে তথ্যপ্রমাণ-সহ জবাব দিতে হায়দরাবাদ পুলিশ যে তৈরি— সে কথাও জানিয়েছেন সজ্জনার।

এনকাউন্টারের এই ঘটনার কথা জানার পর ঘটনাস্থলে প্রচুর মানুষ পৌঁছন। তারা পুলিশের উপর পুষ্পবৃষ্টি করে। গোটা দেশে খবর ছড়িয়ে পড়তেই তোলপাড় শুরু হয়ে যায়। একটা পক্ষ চূড়ান্ত ভাবে সমর্থন করে হায়দরাবাদ পুলিশের এই ভূমিকাকে। ধর্ষকদের শাস্তি এ ভাবেই দেওয়া উচিত বলে মন্তব্য করে তারা। টুইট করতে থাকেন বলিউড থেকে রাজনীতির লোকজন। কিন্তু অন্য একটা অংশের মতে, বিচার ব্যবস্থাকে গুরুত্ব না দিয়ে হায়দরাবাদ পুলিশে এমন এনকাউন্টার ভুয়ো বলে দাবি করতে থাকে।

এ দিনের ঘটনা নিয়ে মন্তব্য করেছেন পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তিনি এ দিন বলেন, ‘‘এটা আইন নয় যে, আইনকে আমি নিজের হাতে তুলে নিলাম। আইন এটাই, পুলিশ তার কাজ করবে, আদালতে পেশ করবে। বিচারক বিচারকের কাজ করবেন।’’

অভিনেত্রী তথা বিজেপি নেত্রী লকেট চট্টোপাধ্যায়ের মতে, “এত বড় ঘটনার পরেও দোষীরা পালানোর চেষ্টা করেছে, এটা ভেবেই অবাক লাগছে। ধন্যবাদ জানাই হায়দরাবাদ পুলিশকে।”

পরিচালক তথা অভিনেত্রী অপর্ণা সেন প্রশ্ন তোলেন, ‘‘ওই চার জনই যে ধর্ষণ করেছিলেন, এটা নিশ্চিত হওয়া গেল কী ভাবে? আবার যদি তাঁরা অপরাধী হয়েও থাকে, তা হলে শাস্তি পেল কই, পুলিশ হেফাজতে থাকতেই তো মৃত্যু হল।’’


(জাস্ট দুনিয়ার ফেসবুক পেজ লাইক করতে ক্লিক করুন)