সমকামিতা আইনি অপরাধ নয়, ঐতিহাসিক রায়ে জানিয়ে দিল সুপ্রিম কোর্ট

সমকামিতা আইনি অপরাধ নয়সমকামিতা আইনি অপরাধ নয়

জাস্ট দুনিয়া ডেস্ক: সমকামিতা আইনি অপরাধ নয়, ঐতিহাসিক রায়ে জানিয়ে দিল সুপ্রিম কোর্ট। রামধনু রঙা পতাকাকে মুক্ত করে বৃহস্পতিবার শীর্ষ আদালত ‘সমকামিতা আইনি অপরাধ নয়’ বলে রায় দিল।

ভারতীয় দণ্ডবিধির ৩৭৭ ধারায় বলা হয়েছিল, সমকামি যৌন সম্পর্ক আইনি অপরাধ। তাকে অসাংবিধানিক আখ্যা দিয়ে এ দিন খারিজ করে দিল সুপ্রিম কোর্ট। শীর্ষ আদালতের প্রধান বিচারপতি দীপক মিশ্ররের নেতৃত্বাধীন একটি সাংবিধানিক বেঞ্চ এ দিন রায় দিয়েছে, ৩৭৭ ধারা সমকামিদের সমানাধিকারে ধাক্কা দিচ্ছে। ওই বেঞ্চের মতে, যৌন পছন্দ মানুষের স্বাভাবিক প্রবৃত্তি। কেউ নিজস্ব সত্ত্বা থেকে পালাতে পারে না। তাই তার ভিত্তিতে ভেদাভেদ করা সংবিধানের ১৪-তম অনুচ্ছেদের বিরোধী। প্রধান বিচারপতি এ দিন তাঁর রায়ে বলেন, ‘টেক মি অ্যাজ আই অ্যাম’ অর্থাৎ ‘আমি যা, আমাকে সে ভাবেই গ্রহণ করো’।

সংবিধানের ৩৭৭ ধারায় বলা হয়েছিল, সমলিঙ্গের যৌন সম্পর্ক বা পায়ুকাম প্রকৃতি বিরুদ্ধ। তাই এ সব আইনত অপরাধ।

সমকামিতা আইনি অপরাধ নয়

সমকামিতা আইনি অপরাধ নয়

এ দিন প্রধান বিচারপতি দীপক মিশ্র-সহ পাঁচ বিচারপতির বেঞ্চের সদস্যেরা রায় দিয়েছেন, সমকামী, রূপান্তরকামী, উভকামী বা এলজিবিটি সম্প্রদায়ের মানুষেরও নিজের পছন্দ মতো সঙ্গী বেছে নিয়ে, ভালবাসা, যৌন তৃপ্ত হওয়ার অধিকার রয়েছে। রায় ঘোষণা করে প্রধান বিচারপতি বলেন, ‘‘৩৭৭ ধারা অযৌক্তিক, নিয়মবহির্ভূত। কারণ এলজিবিটি সম্প্রদায়ের সমানাধিকারে ওই ধারা হস্তক্ষেপ করে। সমাজের নৈতিক ধ্যান ধারণা এক জন নাগরিকের অধিকারও লঙ্ঘন করতে পারে না।’’

মেইন লাইনে বাতিল প্রচুর ট্রেন, বসবে অটোমেটিক সিগনাল সিস্টেম

২০০৯-এ নাজ ফাউন্ডেশন নামে এক সংস্থার আর্জির প্রেক্ষিতে দিল্লি হাইকোর্ট ৩৭৭ ধারাকে অসাংবিধানিক আখ্যা দিয়ে জানিয়ে দেয়, সমকামিতা কোনও অপরাধমূলক কাজ নয়। কিন্তু দিল্লি হাইকোর্টের সেই রায়ের বিরুদ্ধে সুপ্রিম কোর্টে আবেদন করেন এক ব্যক্তি। ২০১৩ সালে সুপ্রিম কোর্টের দুই বিচারপতির বেঞ্চ দিল্লি হাইকোর্টের রায়কে খারিজ করে দিয়ে ৩৭৭ ধারাকে মান্যতা দেয়। এর পর ফের নাজ ফাউন্ডেশন সুপ্রিম কোর্টে আবেদন করে। সেই আবেদনের শুনানি শেষে এ দিন সুপ্রিম কোর্ট নিজেদের পুরনো রায়কেও খারিজ করে দিয়েছে।

গত বছর সুপ্রিম কোর্ট ব্যক্তি পরিসরের অধিকারকে মৌলিক অধিকারের স্বীকৃতি দেওয়ার পরেই বোঝা গিয়েছিল, ৩৭৭ ধারাতে এ বার আর ছাড় দেওয়া হবে না। কারণ, ৩৭৭ ধারায় পুলিশকেই ব্যক্তি পরিসরে হস্তক্ষেপ করার ক্ষমতা দেওয়া ছিল। এর পরে মানসিক স্বাস্থ্য আইনেও কেন্দ্রীয় সরকার কার্যত সমকামিতাকে আইনত স্বীকৃতি দিয়েছে। বলা হয়েছে, সমকামিতা মানসিক অসুস্থতা নয়। এ দিন বিচারপতিরা এই দুই আইনের উপর দাঁড়িয়ে সমকামিতা আইনি অপরাধ নয় বলে জানিয়ে দিল।