হানান হামিদ, কেরলের সেই ট্রোলড হওয়া মেয়ে নিজের পুঁজি দিয়ে দিল বন্যাত্রাণে

হানান হামিদমুখ্য়মন্ত্রীর তহবিলে টাকা জমা দেওয়ার পর।

জাস্ট দুনিয়া ডেস্ক: হানান হামিদ … কেরলের সেই মেয়েটিকে মনে আছে নিশ্চই। যে নিজের পড়াশোনার খরচ চালানোর জন্য মাছ বিক্রি করে। আর সেই ছবি সোশ্য়াল মিডিয়ায় দিয়ে ট্রোলড হতে হয়েছিল তাকে। সেই কলেজ পড়ুয়া মাছ বিক্রেতা এ বার কেরলের মুখ্যমন্ত্রীর বন্যা তহবিলে তাঁর রোজগারের প্রায় সবটাই দিয়ে দিল। দেড় লাখ টাকা, হয়ত তিল তিল করে জমিয়েছিল উচ্চ শিক্ষার জন্য় হানান।  পুরো ধরে বন্য়াত্রানে দিয়ে দিল সেই ছোট মেয়েটি। সেদিন যাঁরা ট্রোল করেছিলেন আজ তাঁরা কোথা?

এই টাকা দিয়ে হানান বলেন, ‘‘এই টাকা আমি মানুষের কাছ থেকেই পেয়েছি। সেটা তাদের ফিরিয়ে দিতে পেরে আমি খুশি।’’ হানান মাছ বিক্রি ছাড়াও নিজের পড়া ও পরিবার চালাতে কখনও সঞ্চালনার কাজ করে তো কখন বিভিন্ন অনুষ্ঠানে ফ্লায়ার গার্লের ভূমিকায়ও দেখা যায় তাঁকে। এ বার সেই মেয়েই সবাইকে অনুরোধ জানিয়েছে কেরলের মানুষের পাশে দাড়াতে।

ইদুক্কির একটিই প্রাইভেট কলেছে বিএসসি পড়ে হানান। কয়েকমাস আগে মালয়লাম ডেইলির একটি খবর আর হানানের সোশ্য়াল মিডিয়া পোস্ট ভাইরাল হয়ে যায় রাতারাতি। ঠিক কী হয়েছিল জানতে একটু পিছন ফিরে তাকাত হবে।

সকালে কলেজ, বিকেলে বাজারে মাছ বিক্রি

কেরলের কোচির কাছে থাম্মানামে থাকে হানান। বয়স ২১। সকালে কলেজ আর সন্ধেতে থাম্মানাম বাজারে তাকে মাছ বিক্রি। এটাই হানানের জীবন। সেই জীবন যুদ্ধেরই একটা টুকরো ছবি ভেসে উঠেছিল সোশ্য়াল মিডিয়ায়। বাজারে দাঁড়িপাল্লায় মাছ চাপিয়ে কলেজ ইউনিফর্মে হানান মাছ বিক্রি করছে। হানানের জীবন যুদ্ধ নিয়ে সমালোচনার ঝড় না উঠে হতে পারত লড়াইয়ের গল্প।

কিন্তু এক দল মানুষ সোশ্যাল মিডিয়ায় ছড়িয়ে দেন, চলচ্চিত্র পরিচালক অরুণ গোপীর পরবর্তী ছবিতে কাজ করছেন হানান। বাজারে হানানের মাছ বিক্রি করার ছবি এবং ভিডিও সেই ছবিরই প্রোমোশনের অংশ। এই ‘খবর’ জানার পর থেকেই নেটিজেনরা হানানের সমালোচনায় নেমে পড়েন। ওই ছাত্রীর বেঁচে থাকার সংগ্রাম নিয়ে ব্যঙ্গ শুরু হয় সোশ্যাল মিডিয়ায়। শেষ পর্যন্ত তাতে হস্তক্ষেপ করতে হয় প্রশাসনের। যাতে কলেজ পড়ুয়া ওই মেয়ের কোনও ক্ষতি না হয়। তার পর সব থেকে গিয়েছিল।

হঠাৎ আবার শিরোনামে উঠে এল হানানের নাম। বন্য়া বিদ্ধস্ত কেরলের পাশে সেই মাছ বিক্রেতা কলেজ পড়ুয়া হানান। না সোশ্য়াল মিডিয়ায় তাকে ট্রোল করা মানুষগুলো এখনও ময়দান নামেননি।