জ্ঞানেশ্বরী এক্সপ্রেস দুর্ঘটনা থেকে বেঁচে যাওয়া ‘মৃত’ ছেলে’র ক্ষতিপূরণ ভোগ

জ্ঞানেশ্বরী এক্সপ্রেস দুর্ঘটনা

জাস্ট দুনিয়া ডেস্ক: জ্ঞানেশ্বরী এক্সপ্রেস দুর্ঘটনা ঘটেছে ১১ বছর আগে। ভারতীয় রেলের ইতিহাসে ভয়ঙ্করতম রেল দুর্ঘটনার মধ্যেই ধরা হয় এটিকে। প্রচুর মানুষের প্রান চলে গিয়েছিল এক ধাক্কায়। সে এক মর্মান্তিক পরিস্থিতি। কিন্তু ভয়ঙ্কর পরিস্থিতির সুযোগ যে কেউ এত বছর ধরে নিয়ে যেতে পারে তা কে জানত। কিন্তু ঘটেছে এমনটাই। গত ১১ বছর ধরে মৃত ঘোষিত ব্যক্তির কারণে রেলের দেওয়া চাকরী করে চলেছেন পরিবারের এক আত্মীয়। কিন্তু এত বছর পর জানা গিয়েছে যাঁকে মৃত দেখিয়ে টাকা ও চাকরী হাতিয়েছিল পরিবার তিনি তো বেঁচেই রয়েছেন। এবার বিপাকে সই পরিবার।

সেদিন জ্ঞানেশ্বরী এক্সপ্রেসের যাত্রী ছিলেন কলকাতার অমৃতাভ চৌধুরী। মৃতদের সঙ্গে জুড়ে যায় তাঁরও নাম। অনেকেরই দেহ শনাক্ত করা সম্ভব হয়নি এতটাই তা খারাপ হয়ে গিয়েছিল। শেষ পর্যন্ত ডিএনএ পরীক্ষা করা হয় এবং তার নিরিখেই অমৃতাভকে মৃত বলে ঘোষণা করা হয়। সেই মৃত্যু নিশ্চিত হওয়ার পর দক্ষিণ-পূর্ব রেলের তরফে অমৃতাভর পরিবারকে ক্ষতিপূরণ বাবদ দেওয়া হয় ৪ লাখ টাকা।

সেই সময় মৃতদের পরিবারের একজন সদস্যকে রেলে চাকরীও দেওয়া হচ্ছিল। তাও হাতছাড়া করেনি সেই পরিবার। অমৃতাভর বোন মহুয়া রেলে চাকরী পান। টাকা ও চাকরী পেয়ে যেন লোভটাই দ্বিগুন হয়ে গিয়েছিল তাই বেমালুম পরিবারের ছেলের মৃত্যুর খবর চেপে যায় সকলে। ৪ লাখ টাকা নেহাৎই কম নয় সঙ্গে কেন্দ্র সরকারের চাকরী।

কথায় আছে এই জীবনের পাপের শাস্তি এই জীবনেই পেয়ে যেতে হবে। সময়টা ১১ বছর পেরিয়ে গেলে কী হবে, জ্ঞানেশ্বরী এক্সপ্রেস দুর্ঘটনা ইতিহাস হয়ে গেলে কী হবে, দাদার ভূত হঠাৎই জেগে উঠেছে। আর এবার কঠিন শাস্তির মুখে পড়তে হতে পারে গোটা পরিবারকে। মহুয়ার সতীর্থদেরই সন্দেহ হয়। দাদা প্রসঙ্গে কথা ওঠে মাঝে মাঝেই কারণ তাঁর চাকরীর খবরটা সকলেরই জানা। তাঁরা সদয়ই ছিল মহুয়ার প্রতি। কিন্তু বিধি বাম। সন্দেহের খবর যায় রেলের  উপর তলায় সেখান থেকে ভিজিল্যান্সে। তারাই শেষ পর্যন্ত সিবিআইকে জানায় পুরো ঘটনা।

সেই সময় তদন্তে নেমেছিল সিবিআই। শনিবার সিবিআই-এর হাতে ধরা পড়েন অমৃতাভ চৌধুরী ও তাঁর বাবা মিহির চৌধুরী। সিবিআই-এর জেরার সামনে উঠে আসে সত্যি। এই পরিস্থিতিতে প্রশন উঠছে ডিএনএ রিপোর্ট নিয়ে। রেল অবশ্য দা। ঝেড়ে ফেলেছে এ ব্যাপারে। তারা জানিয়েছে, ডিএনএ রিপোর্টের দায়িত্ব থাকে পুলিশের হাতে। সেটা রাজ্যের অংশ। যে কারণে রেলের কোনও গাফিলতি নেই।

জানা গিয়েছে অমৃতাভ চৌধুরীর বোন মহুয়া এখন শিয়ালদহের সিগন্যাল অ্যান্ড টেলিকম বিভাগে কর্মরত। দক্ষিণ-পর্ব রেলের ভিজিল্যান্সের মুখ্য এসডিজিএম জানিয়েছেন অনেক পুরনো মামলা হওয়ায় তা ভাল মতো খতিয়ে দেখতে হবে। এর সঙ্গে খতিয়ে দেখা হবে এর পিছনে কোনও সরকারি কর্মী জরিত রয়েছেন কিনা। তবে তদন্ত শেষ দোষ প্রমান হলে আইনি পথেই ব্যবস্থা নেওয়া হবে অভিযু্ক্তদের বিরুদ্ধে।

(প্রতিদিন নজর রাখুন জাস্ট দুনিয়ার খবরে)

(জাস্ট দুনিয়ার ফেসবুক পেজ লাইক করতে ক্লিক করুন)