সোহরাবউদ্দিন মামলায় বেকসুর খালাস, মুক্তি দেওয়া হল তন্দুর মামলার খুনিকেও

সোহরাবউদ্দিন মামলায় বেকসুর খালাসকওসর বাঈ, শেখ সোহরাবউদ্দিন, সুশীল শর্মী এবং নয়না সাহানি

জাস্ট দুনিয়া ডেস্ক: সোহরাবউদ্দিন মামলায় বেকসুর খালাস পেয়ে গেলেন ২২ অভিযুক্ত। একই দিনে মুক্তির নির্দেশ পেলেন তন্দুর মামলায় দোষী সাব্যস্ত হয়ে জেল খাটা সুশীল শর্মাও। দুই আদালতের এমন দু’টি রায় শুক্রবার সাড়া ফেলে দিয়েছে গোটা দেশে।

২০০৫ সাল। হায়দরাবাদ থেকে মহারাষ্ট্রের সাংলিতে স্ত্রীকে নিয়ে বাসে করে যাচ্ছিলেন গ্যাংস্টার সোহরাবউদ্দিন শেখ। কিন্তু, মাঝ পথে তাঁদের বাস থেকে নামিয়ে নিয়ে যায় পুলিশ। কয়েক দিন পরে গুজরাতের আমদাবাদে ভুয়ো সংঘর্ষে পুলিশের গুলিতে মারা যান সোহারাবউদ্দিন। তার তিন দিন পরে তাঁর স্ত্রী কওসর বাঈয়ের পচাগলা দেহ উদ্ধার হয়।

এরও এক বছর পরে সোহরাবউদ্দিনের সহযোগী তুলসীরাম প্রজাপতি গুজরাত-রাজস্থান সীমানায় পুলিশের সঙ্গে ভুয়ো সংঘর্ষে মারা যান। সিবিআই তদন্তে উঠে আসে, পুলিশ ভুয়ো সংঘর্ষে তাদের খুন করেছে।

নাসিরুদ্দিন শাহ: আমার সন্তানদের ঘিরে ধরে যদি জিজ্ঞেস করে হিন্দু না মুসলমান, কী জবাব দেবে ওরা?

ওই মামলায় ৩৮ জনের নামে চার্জশিট দাখিল করে সিবিআই। তাদের মধ্যে ১৬ জনকে আগেই উপযুক্ত প্রমাণের অভাবে খালাস করে আদালত। এ দিন বাকি ২২ জনকেও একই কারণে মামলা থেকে অব্যাহতি দিয়েছে‌ন সিবিআই আদালতের বিশেষ বিচারক এস জে শর্মা। তিনি জানান, আদালত তথ্যপ্রমাণের ভিত্তিতে চলে। কাজেই এমন একটা রায়ের জন্য তিনি দুঃখিত।

আগে যে ১৬ জনকে রেহাই দেওয়া হয়েছিল তাঁদের মধ্যে ছিলেন গুজরাতের তৎকালীন স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী অমিত শাহ। তিনি এই মুহূর্তে বিজেপির সর্বভারতীয় সভাপতি। তালিকায় ছিলেন রাজস্থানের তৎকালীন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী গুলাবচাঁদ কাটারিয়া, গুজরাতের প্রাক্তন পুলিশ প্রধান পিসি পাণ্ডে, গুজরাতের প্রাক্তন সিনিয়র পুলিশ কর্তা ডিজি বানজারাও।

এ দিন যে ২২ জনকে বেকসুর খালাস করা হল উপযুক্ত তথ্যপ্রমাণের অভাবে, তাঁরা মূলত জুনিয়র পুলিশ অফিসার। মামলায় ২১০ জন সাক্ষীর বয়ান রেকর্ড করা হয়। কিন্তু, পরিশেষে প্রমাণিত হয়, কোনও ভুয়ো সংঘর্ষে সোহরাবউদ্দিনের মৃত্যু হয়নি। বরং গুজরাতের তৎকালীন মুখ্যমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীকে খুনের চক্রান্ত করার মূল চক্রী সোহরাবউদ্দিন পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষেই মারা যান।

অন্য দিকে, এ দিন দিল্লির আদালত তন্দুর মামলায় প্রাক্তন কংগ্রেস নেতা সুশীল শর্মীকে মুক্তির নির্দেশ দিয়েছে। আদালতের যুক্তি ১৯৯৫ সালে স্ত্রীকে খুন করে টুকরো টুকরো করে কেটে তন্দুরে পোড়ানোর অভিযোগে ধৃত সুশীল সাজার নির্দিষ্ট মেয়াদের চেয়ে বেশি দিন জেলে কাটিয়েছে। ফলে, মানবাধিকারের কারণেই তাঁকে অবিলম্বে মুক্তি দেওয়া উচিত।

১৯৯৫ সালে ওই খুনের ঘটনা ঘটে। তদন্তের সেই শুরুর দিন থেকেই জেলে আছেন সুশীল। ২০০৩ সালে নিম্ন আদালত তাঁর মৃত্যুদণ্ডের নির্দেশ দেয়। ২০০৭ সালে দিল্লি হাইকোর্ট সেই মৃত্যুদণ্ড বহাল রাখে। ২০১৩ সালে সুপ্রিম কোর্ট জানায়, স্ত্রীর দেহ টুকরো টুকরো করে কেটে তন্দুরে পুড়িয়ে ফেলেছিলেন সুশীল, এমন কোনও প্রমাণ নেই। তাঁর মৃত্যুদণ্ড বাতিল করে শীর্ষ আদালত।

নাসিরুদ্দিন শাহ: আমার সন্তানদের ঘিরে ধরে যদি জিজ্ঞেস করে হিন্দু না মুসলমান, কী জবাব দেবে ওরা?