দিল্লির বুরারি কাণ্ড, সিসিটিভি ফুটেজ দেখিয়ে দিল ১১ জনের মৃত্যু কী ভাবে

বুরারি কাণ্ডদিল্লির বুরারির একই পরিবারের ১১ জনের মধ্যে এঁরাও ছিলেন।

জাস্ট দুনিয়া ডেস্ক: দিল্লির বুরারি এখন গোটা দেশের চর্চার বিষয়। কী ভাবে বুরারির ভাটিয়া পরিবারের ১১ জনের একসঙ্গে মৃত্যু হল? প্রশ্নের সোজাসাপ্টা উত্তর এখনও মেলেনি। তবে বুধবার দিল্লি পুলিশ ওই এলাকার একটি সিসিটিভি ফুটেজ জোগাড় করেছে। সেখান থেকেই একটা ধারণা পাওয়া যাচ্ছে, কী ভাবে মৃত্যু হয়েছিল ওই ১১ জনের।

দিল্লি পুলিশ যে ফুটেজ আজ প্রকাশ্যে এনেছে, তাতে দেখা যাচ্ছে, ওই পরিবারের গৃহবধূ এবং অন্য এক সদস্য পাঁচটি টুল জাতীয় জিনিস একে একে বাড়িতে নিয়ে ঢুকছেন। পরিবারের সবচেয়ে ছোট দুই সদস্য ধ্রুব এবং শিবম, যাদের বয়স মাত্র ১৫ বছর, তারা দড়ি জাতীয় জিনিস কিনে বাড়ি ফিরছে। আর সমস্তটাই হচ্ছে যখন, তখন ঘড়িতে বাজে রাত ১০টা। শনিবার ওই সময়ে পাড়ার অন্য বাড়িগুলোতে যখন ডিনারের তোড়জোড় চলছে, তখন ভাটিয়া পরিবারে চলছিল মৃত্যুর আয়োজন।

তবে শুধুই যে মৃত্যুর আয়োজন চলছিল এমনটাও নয়। সেখানে দেখা যাচ্ছে খাবারের অর্ডারও দেওয়া হয়েছে। ২০টি বাটার রুটি। যার দাম ২০০ টাকা। পৌনে ১১টা নাগাদ সেই রুটি বাড়িতে পৌঁছেও দিয়ে গিয়েছিল একটি ছেলে। বাড়ির বড়ছেলে ভবনেশকে দেখা গিয়েছে রাত ১১টা বাজার কয়েক মিনিট আগে বাড়ির বাইরে কুকুর নিয়ে বেরোতে। ১১টা বাজার কয়েক মিনিট পরেই যদিও তিনি বাড়ির ভিতর ঢুকে যান।

বুরারির ভাটিয়া বাড়িতে রহস্য আরও ঘনীভূত, বাড়ির বাইরে ১১টা পাইপ কেন?

এর পর ভোর ৬টা নাগাদ ভবনেশের দোকানের সামনে দুধের গাড়ি এসে পৌঁছয়। কয়েক কার্টন দুধ নামিয়ে রেখে সেই গাড়ি হর্ন বাজিয়ে চলেও যায়। এর পর প্রতিবেশীরা সকাল সাড়ে ৭টা নাগাদ ভাটিয়াদের বাড়িতে ঢুকে তাঁদের ১০ জনকে ঝুলন্ত অবস্থায় দেখতে পান। পুলিশ এসে ওই ১০ জনের দেহ উদ্ধার করে। পাশের ঘরের মেঝে থেকে উদ্ধার হয় বাড়ির সবচেয়ে প্রবীণ মানুষটির দেহ।

তদন্তের জন্য পুলিশ এ বার সাইকোলজিক্যাল ময়নাতদন্তের কথা ভাবছে। ওই পরিবারের ঘনিষ্ঠ মানুষদের সঙ্গে কথা বলে মনোবিদেরা ভাটিয়াদের মানসিক অবস্থা বোঝার চেষ্টা করবেন। সেই তথ্য আদালতে পেশ করবে পুলিশ।

একই পরিবারের ১১ জনের দেহ উদ্ধার দিল্লিতে, তদন্তে নেমে ধন্দে পুলিশ

তবে, তদন্তকারীদের দাবি, কোনও মোক্ষ লাভের উদ্দেশে ওই গণআত্মহত্যার ঘটনা ঘটেছে। বাড়ির ছোটছেলে ললিত আই সব আধ্যাত্মিক চর্চা করতেন। সেই মতো বাড়ির সকলে তাঁর ভাবনায় বিশ্বাসী হয়ে পড়ে। ললিতের বাবা সেনাবাহিনীতে কাজ করতেন। মৃত সেই বাবাকে মাঝে মাঝে দেখতে পেতেন ললিত। ওই দিন সেই বাবার নির্দেশেই সকলে আত্মহত্যা করেন বলেই পুলিশের অনুমান। সকলের মুখ-চোখ বাঁধা ছিল। এক জনই সেই কাজটা করেছিলেন বলে পুলিশের ধারণা। কারণ, তার মুখ-চোখ খোলাই ছিল। তিনি বাড়ির ছোট বউ অর্থাৎ ললিতের স্ত্রী।