দলিত নাবালিকার ধর্ষণ ও খুন কাণ্ড ঘিরে উত্তাল রাজনৈতিক মহল

হায়দরাবাদ রেপ ও খুনে অভিযুক্তের মৃত্যু

জাস্ট দুনিয়া ডেস্ক: দলিত নাবালিকার ধর্ষণ ও খুন-এর ঘটনার কেটে গিয়েছে ৪ দিন। এখনও তার মৃত্যু কারণ নিয়ে পুলিশ কোনও নির্দিষ্ট সিদ্ধান্তে পৌঁছতে পারেনি। তার মধ্যেই রাজনীতির ছোঁয়া লেগেছে তাতে। সব মিলে ক্ষোভ বাড়ছে এলাকায়। দক্ষিণ-পূর্ব দিল্লির ঘিঞ্জি ওই ঘর এখন দেশের সংবাদ মাধ্যম থেকে রাজনৈতিক দলগুলোর নজরে। যা নিয়ে প্রশ্ন উঠছে সর্বত্র। ইতিমধ্যেই মৃত নাবালিকার পরিবারের সঙ্গে দেখা করেছেন রাহুল গান্ধী, দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী অরবিন্দ কেজরিওয়াল, তৃণমূলের বেশ কয়েকজন নেতা। তার পরিবারের তরফে শ্মশানের পুরোহিতের বিরুদ্ধে ধর্ষণ ও খুনের অভিযোগ করা হয়। সেই পুরোহিতসহ চারজনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।

রবিবার নাবালিকার বাবা ঠান্ডা জল খেতে চাইলে সে শ্মশানের কুলার থেকে জল আনতে যায়। কিন্তু অনেকক্ষণ কেটে যাওয়ার পরও সে ফেরে না। তখন সন্ধে ৬টা বাজে বলে জানিয়েছে তার পরিবার। সেই সময় বেশ কয়েকজন লোক তাদের বাড়িতে আসে। এবং তার পরিবারকে বলে যে পুরোহিত রাধে শ্যাম তাদের সঙ্গে কথা বলতে চায়। তারা সেখানে পৌঁছলে মেয়ের দেহ দেখতে পায়, যার সারা গায়ে ক্ষতচিহ্ন ছিল, ঠোঁট কালো হয়ে গিয়েছিল, জিভ নীল হয়ে গেছিল।

পুরোহিত তাঁদের জানায়, তাঁদের মেয়ে বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে মারা গিয়েছে। এবং সেই পুরোহিতই তার পরিবারের বিনা অনুমতিতেই নাবালিকার দেহ পুড়িয়ে দেয়। তার মা হাতে পায়ে ধরা স্বত্ত্বেও শোনেনি সে। তিনি জানিয়েছেন, যখন সে সাহায্যের জন্য ছুটে বেরতে যান তখন তাঁকে ধরে একটি ঘরে বন্ধ করে দেওয়া হয়। তাঁর চিৎকার কেউ শুনতে পায়নি। তার পর সেই পুরোহিত নাবালিকার মাকে বলে, বাড়ি গিয়ে ঘুমিয়ে পড়তে এবং এই বিষয়ে চিৎকার আর কান্নাকাটি না করতে।

নাবালিকার পরিবারের তরফে অভিযোগ করা হয়েছে, তাকে ধর্ষণ করে খুন করা হয়েছে। পুলিশের তরফে জানানো হয়েছে, যেহেতু এখন আর পোস্টমর্টেমের জায়গা নেই সে কারণে অভিযুক্তদের লাইডিটেক্টর টেস্ট এবং ড্রাগ টেস্ট করা হবে। মৃতার মা জানিয়েছেন, প্রথমে তিনি তাঁর মেয়ের দেহ দেখে অবাক হয়ে গিয়েছিলেন। আতর পরই তিনি পুরোহিতকে বলেন ১০০ নম্বরে ডায়াল করতে কিন্তু সে তা করেনি। এবং তাঁকে ভয় দেখিয়ে বলে, পুলিশে গেলে অনেক দীর্ঘ কেস চলবে আর ডাক্তাররা তাঁর মেয়ের দেহের অংশ বের করে বিক্রি করে দেবে।

তার পরিবারকে বলা হয় পরদিন সকাল ৮টায় ছাই নেওয়ার জন্য যেতে। মৃতার মাকে ছেড়ে দিলে তিনি দৌঁড়ে তাঁর পরিবারকে গিয়ে সবটা বলে। তারা সকলে ছুটে আসে এবং জল ঢেলে আগুন নেভানোর চেষ্টা করা হয়। কিন্তু ততক্ষণে অনেক দেড়ি হয়ে গিয়েছিল। শুধু পায়ের কিছুটা অংশ বেঁচেছিল। অভিযোগ পুলিশের কাছে গেলে উল্টে পুলিশ তাঁদের মারধোর করে। তাঁদের আলাদা ঘরে রাখা হয়।

তাঁদের অভিযোগের বিরুদ্ধে দক্ষিণ-পূর্ব দিল্লির ডেপুটি পুলিশ কমিশনার জানিয়েছেন, তাঁর স্টেটমেন্ট নেওয়ার ছিল। ভোর ৩টে পর্যন্ত সোশ্যাল ওয়ার্কারদের জন্য অপেক্ষা করতে হয়।  এবং সেটা মেজিস্ট্রেটের সামনে নিতে হত, যার জন্য সময় লাগাটা স্বাভাবিক। যা সময় লেগেছে তা ২৪ ঘণ্টার থেকেও কম। তিনি এও জানিয়েছেন, ফরেন্সিক বিভাগের পরীক্ষার ফলে দেখা গিয়েছে ওয়াটার কুলারের মধ্যে বিদ্যুৎ চলাচল করছে। অভিযুক্তদের জামা-কাপড় পরীক্ষা করা হবে বলেও জানিয়েছেন তিনি। দ্রুত চার্জশিট দেওয়া হবে বলে নিশ্চয়তা দিয়েছেন তিনি।

(প্রতিদিন নজর রাখুন জাস্ট দুনিয়ার খবরে)

(জাস্ট দুনিয়ার ফেসবুক পেজ লাইক করতে ক্লিক করুন)