জমজভাই, কোভিড আক্রান্ত হয়ে জন্মের মতো মৃত্যুও এক সঙ্গে

জমজভাই

জাস্ট দুনিয়া ডেস্ক: জমজভাই, এক আত্মা এক প্রান। দু’জনের জন্মের মধ্যে ছিল মাত্র তিন মিনিটের পার্থক্য।  ২৩ এপ্রিলই দুই ভাইয়ের এক সঙ্গে জন্মদিন পালন হয়েছে। ২৪ বছরেই পা দিয়েছিলেন উত্তরপ্রদেশ মিরাটের দুই ভাই। তার পর দিনই কোভিডে আক্রান্ত হন তাঁরা। প্রায় এক মাসের লড়াই। শেষ পর্যন্ত শেষরক্ষা হল না। জন্মের মতো তিন মিনিট না হলেও এক দিনের ব্যবধানে মৃত্যু হল দুই ভাইয় জোফ্রে ও রালফ্রে গ্রেগরির। দু’জনেই ভর্তি ছিলেন একই হাসপাতালে। কোভিডের রিপোর্ট নেগেটিভও এসেছিল। কিন্তু তার তিন দিনের মধ্যেই মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়লেন দুই ভাই।

১ মে দু’জনকে ভর্তি করা হয় হাসপাতালে। ১০ মে তাঁদের রিপোর্ট নেগেটিভ আসে। তাঁদের পাশাপাশি গোটা পরিবার তাঁদের সুস্থ হয়ে ওঠার খবরে খুশি ছিল। ফিরে গিয়েছিলেন বাড়িতেও। ১৩ মে হঠাৎই এক ভাইয়ের শ্বাসকষ্ট শুরু হয়। অবস্থার অবনতি হচ্ছে দেখে সঙ্গে সঙ্গে তাঁকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। রাত ১১টা নাগাদ সেই রাতেই মৃত্যু হয় একজনের। আর এক ভাই সেই সময় বাড়িতেই ছিলেন।

তাঁদের বাবা-মা গ্রেগরি রেমন্ড ও সোজা রাফেল দু’জনেই স্কুল শিক্ষক। তাঁদের কাছে খবর আসে জোফ্রের মৃত্যু হয়েছে হাসপাতালে। এই জমজ ভাইয়ের এক দাদাও রয়েছেন, নাম নেলফ্রে। তিনিও কোভিড আক্রান্ত হয়ে ভর্তি একই হাসপাতালে। রালফ্রে জমজভাইয়ের আর এক ভাই তাঁর দাদাকে ফোন করে জন্মদিনের শুভেচ্ছা জানানোর জন্য। তখনই তিনি তাঁর মা-র কাছে তাঁর জমজভাই সম্পর্কে জানতে চান। তাঁকে তখন পরিষ্কার করে ভাইয়ের মৃত্যুর খবর দেওয়া হয়নি।

পরদিন অসুস্থ হয়ে পড়েন রালফ্রে। ১৪ মে মৃ্ত্যু হয় তাঁরও। তাঁদের বড়ভাই এখনও কোভিড আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি। দুই ছেলের পর পর মৃত্যুতে গোটা পরিবারটাই তছনছ হয়ে গিয়েছে। ডাক্তাররা জানিয়েছেন, কোভিড নেগেটিভ এলেও দু’জনের ফুসফুস ভয়ঙ্করভাবে ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছিল।

দুই ভাই সব সময় সব কিছুই প্রায় এক সঙ্গে করেছে। এক রকমের জামা-কাপড় থেকে এক কলেজ। দু’জনেই কোয়েম্বাটর থেকে বি টেক করেন। জোফ্রে কাজ করতেন অ্যাকসেঞ্ডারে ও রালফ্রে  হুন্ডাই মুবিসে। তাঁদের বিদেশ পাড়ি দেওয়ার পরিকল্পনাও ছিল। জোফ্রে মিরাটের বাড়ি থেকেই অফিস করছিলেন। হাতে চোটের জন্য হায়দ্রাবাদ থেকে ছুটি নিয়ে বাড়িতে ফিরেছিলেন রালফ্রে।

অনেক যন্ত্রণার মধ্যেও দুই সন্তানকে হারানো বাবা এক ছেলের মৃত্যুর পরই বুঝতে পেরেছিলেন আর একজনকে ধরে রাখা যাবে না। কারণ ওদের আলাদা করা সম্ভব নয়। তিনি বলেন, ‘‘আমাদের পরিবারটা পুরো ভেঙে গেল। কোভিড আমার দুই ছেলেকে নিয়ে গেল যারা কোনও দিন কারও ক্ষতি করেনি তাদের সারাজীবনে।’’ ভেঙে পড়েছেন বাবা, অসুস্থও হয়েছে পড়েছেন। বাবাকে সুস্থ করতে শক্ত হাতে সামলাচ্ছেন ছেলে হারা মা।

(প্রতিদিন নজর রাখুন জাস্ট দুনিয়ার খবরে)

(জাস্ট দুনিয়ার ফেসবুক পেজ লাইক করতে ক্লিক করুন)