বিয়েতে নারাজ মেজরের স্ত্রী, খুন করলেন আর এক মেজর

বিয়েতে নারাজ মেজরের স্ত্রীশৈলজা দ্বিবেদী

জাস্ট দুনিয়া ডেস্ক: বিয়েতে নারাজ মেজরের স্ত্রী, আর সেটাই মেনে নিতে পারেননি আর এক মেজর। কয়েক বছরের সম্পর্কের পাশাপাশি শেষ করে দিলেন নিজের ‘প্রেমিকা’কেও। রবিবার খুনের অভিযোগে গ্রেফতার করা হয় নিখিল হান্ডা নামে সেনাবাহিনীর ওই মেজরকে।

দিল্লি পুলিশ জানিয়েছে, শৈলজা দ্বিবেদী নামের ওই মহিলাকে ধারালো অস্ত্র দিয়ে খুন করার পর গাড়ির চাকায় পিষে দেওয়া হয়। খুনের ঘটনাকে দুর্ঘটনার রূপ দিতেই এম‌নটা করেছিলেন নিখিল। যাতে মনে হয়, শৈলজার পথ দুর্ঘটনায় মৃত্যু হয়েছে। কিন্তু, শেষ রক্ষা হয়নি। শৈলজার স্বামী অমিত দ্বিবেদীর অভিযোগের ভিত্তিতে তদন্তে নেমে পুলিশ সত্যিটা জানতে পেরে নিখিলকে গ্রেফতার করে।

দিল্লি ক্যান্টনমেন্ট এলাকায় শনিবার বিকালে শৈলজার গাড়িচাপা পড়া ক্ষতবিক্ষত দেহ উদ্ধার হয়। সেনাবাহিনীর মেজর অমিত দ্বিবেদীর স্ত্রী শৈলজা ওই দিন বিকালে সেনা হাসপাতালে ফিজিওথেরাপির জন্য গিয়েছিলেন। অস্বাভাবিক ওই মৃত্যুর ঘটনার তদন্তে নেমে পুলিশ হাসপাতালের সিসিটিভি ফুটেজ খতিয়ে দেখে। সেখানে দেখা যায়, শৈলজা হাসপাতাল থেকে বেরিয়ে একটি গাড়িতে উঠছেন। গাড়ির ভিতরে চালক ছাড়া আর কেউ ছিলেন না। এই গাড়িতে ওঠার আধ ঘণ্টার মধ্যেই ওই এলাকার রাস্তার ধার থেকে শৈলজার গাড়িচাপা পড়া দেহ উদ্ধার করে পুলিশ।

প্রাথমিক ভাবে পুলিশ বিষয়টিকে দুর্ঘটনা হিসেবেই ভেবেছিল। কিন্তু, সন্দেহ বাড়িয়ে দেয় শৈলজার গলাকাটা দেহ। পুলিশের ধারণা হয়, ধারা‌লো কিছু দিয়ে শৈলজার মুখে আঘাত করা হয়েছে। এর পর ময়নাতদন্তের রিপোর্টে জানা যায়, ধারা‌লো অস্ত্রের একাধিক আঘাতেই তাঁর মৃত্যু হয়েছে। পুলিশের কাছে অমিত তাঁর আশঙ্কার কথা জানান। আর সেই সূত্রেই পুলিশ নিখিলকে গ্রেফতার করে।

তদন্তকারীরা এর পরে জানতে পারেন, ‌নিখিলের সঙ্গে শৈলজার বেশ কয়েক বছরের সম্পর্ক ছিল। কিন্তু, সম্প্রতি বিয়ের জন্য অত্যাধিক চাপ দিচ্ছিলেন নিখিল। কিন্তু, শৈলজা তাতে মোটেই রাজি ছিলেন না। নারাজ প্রেমিকাকে তাই দুনিয়া থেকে সরিয়ে দেওয়ার ছক কষে নিখিল। সেই মতো নিখিল ওই দিন শৈলজার পিছু নেয়। হাসপাতাল থেকে বেরনো মাত্র তাঁকে গাড়িতে তুলে নেন তিনি। এর পর ধারালো ছুরি দিয়ে তাঁকে বারংবার আঘাত করে খুন করেন। এর পর গাড়ি থেকে শৈলজার দেহ ফেলে দিয়ে তাঁর উপর গাড়ি চালিয়ে দেয় নিখিল। যাতে মনে হয়, গাড়ি দুর্ঘটনায় মৃত্যু হয়েছে তাঁর।

এই গরমে আপনার ডায়েটে এগুলো মাস্ট

২০১৫ সালে নাগাল্যান্ডে কর্মসূত্রে অমিতের স্ত্রী শৈলজার সঙ্গে নিখিলের পরিচয় হয়। অমিত, নিখিল— দু’জনেই সেনাবাহিনীর মেজর। নিখিলের সঙ্গে শৈলজার সেই সময়েই ঘনিষ্ঠতা বাড়ে। সম্প্রতি অমিত দিল্লি বদলি হয়ে আসে‌‌ন। শৈলজাও তাঁর সঙ্গে চলে আসেন দিল্লি। নিখিলের সঙ্গে যোগাযোগ তাতে বিচ্ছিন্ন হয়নি। সর্ব ক্ষণই দু’জনে মোবাইলে কথা বলতেন। ভিডিয়ো চ্যাট করতেন। এক দিন অমিত দু’জনকে ভিডিয়ো চ্যাট করা অবস্থায় দেখে ফেলেন। তিনি স্ত্রীকে নিখিলের সঙ্গে যোগাযোগ রাখতে বারণ করেন। নিখিলকেও ভর্ৎসনা করেন ফোনে। কিন্তু কোনও কিছুতেই কাজ হয়নি।

এর পরে গত শুক্রবার নিখিল দি‌ল্লিতে আসেন। তিনি পোস্টিং ছিলেন নাগাল্যান্ডের ডিমাপুরে। দিল্লিতে শৈলজাকে খুনের পর নিখিল পালানোর চেষ্টা করেন। শুধু তাই নয়, যে গাড়ির ভিতর তিনি শৈলজাকে খুন করেন, সেথান থেকে খুনের সমস্ত প্রমাণ লোপাট করার চেষ্টাও করেন। একটি তোয়ালে দিয়ে সিটের গায়ে লেগে থাকা রক্তের দাগ মোছেন। কিন্তু, পুলিশ তাঁরে মোবাইল লোকেশন ট্র্যাক করে উত্তরপ্রদেশের মেরঠ থেকে গ্রেফতার করে।