অমৃতসরে রাবণপোড়া দেখতে গিয়ে ট্রেনের তলায় ছিন্নভিন্ন ৬০ জন

অমৃতসরে রাবণপোড়া দেখতে গিয়ে রেলে কাটাএই সেই ঘটনাস্থল

জাস্ট দুনিয়া ডেস্ক: অমৃতসরে রাবণপোড়া দেখতে গিয়ে রেলে কাটা পড়ে ছিন্নভিন্ন হয়ে গেল প্রায় ৬০ জনের দেহ। প্রায় ৭৫ জন গুরুতর জখম হয়ে হাসপাতালে ভর্তি।

শুক্রবার অমৃতসর এবং মানাওয়ালা স্টেশনের মাঝে জোড়া ফটক এলাকায় রাবণপোড়ার আয়োজন করা হয়। আয়োজক ছিলেন স্থানীয় এক কংগ্রেস নেতার ছেলে। ওই রাবণপোড়া দেখতে প্রচুর মানুষ ভিড় জমিয়েছিলেন রেললাইনের একেবারে গা ঘেঁষা একটি মাঠে। ওই মাঠ এবং রেললাইনের মাঝখানে একটি পাঁচিল। তাই মানুষজন উঠে পড়েছিলেন রেললাইনে। সন্ধ্যা ৭টা নাগাদ রাবণপোড়ার অনুষ্ঠান শুরু হয়। কিছু ক্ষণের মধ্যেই ওই রেললাইনে ছুটে আসে জলন্ধর থেকে অমৃতসরমুখী একটি ডিএমইউ ট্রেন। রেললাইনের উপর দাঁড়িয়ে থাকা দর্শনার্থীরা তখন রাবণপোড়া দেখছেন। অনেকে মোবাইলে ছবিও তুলছিলেন। কাজেই ট্রেন আসছে, সেটা কেউ খেয়াল করেননি। দ্রুত গতির ওই ট্রেন লাইনের উপর দাঁড়িয়ে থাকা দর্শনার্থীদের ছিন্নভিন্ন করে দেয়।

এমন মর্মান্তিক ঘটনার পর উদ্যোক্তা, প্রশাসন এবং রেলের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন উঠছে। রেললাইনের একেবারে কাছে রাবণপোড়ানোর অনুষ্ঠান, তা সত্ত্বেও প্রশাসন কেন সতর্ক হল না? কেন পুলিশ দিয়ে রেললাইন থেকে মানুষজনকে সরিয়ে দেওয়া হল না? রেলই বা কেন ওই লাইনে ট্রেন চালানোর বিষয়ে আরও সতর্ক হল না? অত লোক লাইনে দাঁড়িয়ে আছে দেখেও কেন অত দ্রুত গতিতে ট্রেন চালালেন চালক? ঘটনাস্থলের ঠিক কাছেই রয়েছে একটি লেভেল ক্রসিং। সেখানকার রেলকর্মীও কেন সতর্ক করলেন না চালককে? এমন একাধিক প্রশ্নের কোনও জবাব এখনও মেলেনি।

শবরীমালা মন্দির: আজও ঢুকতে পারলেন না মহিলারা

ঘটনার খবর পেয়েই মৃতদের পরিবার প্রতি ৫ লাখ টাকা করে ক্ষতিপূরণ দেওয়ার কথা ঘোষণা করেছেন পঞ্জাবের মুখ্যমন্ত্রী অমরেন্দ্র সিং। শোকপ্রকাশ করেছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী, বিজেপি সভাপতি অমিত শাহ, কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী অরুণ জেটলি, কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী রাজনাথ সিংহ, কংগ্রেস সভাপতি রাহুল গাঁধী, পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়-সহ অনেকেই। কেন্দ্রের তরফে মৃতদের পরিবারকে ২ লাখ টাকা করে দেওয়ার কথা ঘোষণা করা হয়। ওই অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে হাজির ছিলেন স্থানীয় কংগ্রেস বিধায়ক নভজ্যোৎ কৌর সিধু। তিনি প্রাক্তন ক্রিকেটার নভজ্যোৎ সিং সিধুর স্ত্রী। দুর্ঘটনার খবর পেয়ে তিনি স্থানীয় হাসপাতালে গিয়েছিলেন।

সিভিল হাসপাতাল এবং গুরু নানক হাসপাতালের চিকিৎসকেরা জানিয়েছেন, মৃত ৬০ জনের মধ্যে এখনও পর্যন্ত ৩৯ জনের দেহ শনাক্ত করা গিয়েছে। রেলে কাটা পড়ে দেহ ছিন্নভিন্ন হয়ে যাওয়ায় শনাক্তকরণে দেরি হচ্ছে বলে জানিয়েছেন তাঁরা।