আদিল আহমেদ দার, বাড়ি ছেড়ে পালিয়ে ছেলের জঙ্গি দলে নাম লেখানোর কথা জানতেন না বাবা!

আদিল আহমেদ দারআদিল আহমেদ দার

জাস্ট দুনিয়া ডেস্ক: আদিল আহমেদ দার, এই মুহূর্তে দেশে সবচেয়ে আলোচিত একটি নাম। জইশ-ই-মহম্মদের ফিদায়েঁ এই জঙ্গিই পুলওয়ামায় সিআরপি কনভয়ে বিস্ফোরক ঠাসা গাড়ি নিয়ে ঢুকে পড়ে। তার পরেই বিস্ফোরণে প্রাণ যায় ৪৪ জওয়ানের।

কিন্তু, আদিল আহমেদ দার-এর বাবা গুলাম দার জানতেনই না, ছেলে বাড়ি থেকে পালিয়ে জঙ্গি দলে নাম লিখিয়েছে! তিনি জানিয়েছেন, ছেলে আদিল আহমেদ দার-এর কোরান পাঠে আগ্রহ ছিল। মসজিদে নমাজও পড়াত সে। ধর্মীয় জীবন যাপন করার ইচ্ছে ছিল। কিন্তু কী করে যে জঙ্গি হয়ে গেল সে, তা এখনও বুঝতে পারছেন না গুলাম দার।

প্রাথমিক তদন্তে গোয়েন্দারা জানতে পেরেছেন, ১৯ মার্চ ২০১৬ তৌসিফ এবং ওয়াসিমের সঙ্গে বাড়ি ছেড়েছিল ২০ বছরে আদিল ওরফে ওয়াকাস। গোয়েন্দারা মনে করছেন, তখন থেকেই জইশ-ই-মহম্মদে নাম লিখিয়েছিল সে। হামলার আগে তিন মাস ধরে গাড়ি নিয়ে কনভয়ে ঢুকে হামলা চালানোর অনুশীলন করে। জম্মু-শ্রীনগর জাতীয় সড়কের উপর যে জায়গায় সেনা কনভয়ে বিস্ফোরক ঠাসা স্করপিও নিয়ে হামলা চালায় আদিল,  সেখান থেকে তার গ্রাম গান্ধীবাগ ১০ কিলোমিটার দূরে।

পুলওয়ামায় সিআরপি কনভয়ে জঙ্গি হামলা, নিরাপত্তা বাহিনীকে পূর্ণ স্বাধীনতা প্রধানমন্ত্রীর

দ্বাদশ শ্রেণি অবধি পড়াশোনা করে স্কুল ছাড়ে আদিল। রাজমিস্ত্রীর কাজ শুরু করে। পাশাপাশি মসজিদে নিয়মিত নমাজ পড়াত। স্থানীয় বাসিন্দারা জানিয়েছেন, জঙ্গি দলের প্রতি আদিলের আকর্ষণ আগে থেকেই ছিল। আদিলের আগে তার পরিবারের আরও এক সদস্য নাম লিখিয়েছিল জঙ্গি দলে। ২০১৬ সালে লস্কর-ই-তৈবার সক্রিয় সদস্য হিসেবে যোগ দেয় আদিলের তুতো ভাই মনজুর রশিদ দার। তবে জঙ্গি দলে যোগ দেওয়ার ১১ দিন পরেই সেনার গুলিতে প্রাণ হারায় সে। ওই বছরই হরকত উল মুজাহিদিন কমান্ডার বুরহান ওয়ানির সেনা বাহিনীর সঙ্গে সংঘর্ষের পর গোটা উপত্যকা জুড়ে বিক্ষোভ-আন্দোলন শুরু হয়। তার রেশ ছড়ায় পুলওয়ামাতেও। সেই সময় বিক্ষোভে যোগ দিতে দেখা গিয়েছিল আদিলকে।

গোয়েন্দাদের কথায়, গত বছর জইশের ফিদায়েঁ জঙ্গি ফারদিন আহমেদ খান্ডের মৃত্যুর পর সেই জায়গা নেয় আদিল। জোরকদমে শুরু হয় তার প্রশিক্ষণ। বছর ঘুরতেই আদিল হয়ে ওঠে দক্ষ ফিদায়েঁ জঙ্গি। সেনা কনভয়ে ঢুকে কী ভাবে আত্মঘাতী বিস্ফোরণ ঘটাতে হবে তার প্রশিক্ষণ তাকে দেওয়া হয়েছিল তিন মাস ধরে।

কিন্তু এ সব যখন উঠে আসছে, তখন আদিলের বাবার দাবি, ২০১৬ সালে আদিল সেনার হাতে মার খেয়েচিল। তার পর থেকেই ছেলেটা বাড়ি ছেড়ে চলে যায়। হয়তো সেই আক্রোশ থেকেই তার জঙ্গি দলে যোগ!

(জাস্ট দুনিয়ার ফেসবুক পেজ লাইক করতে ক্লিক করুন এখানে)