জাস্ট দুনিয়া ডেস্ক: নরেন্দ্র মোদী সরকারের চার বছর পূর্তি হয়ে গেল। লোকসভা নির্বাচন বছর ঘুরলেই। কর্নাটক থেকে শিক্ষা নিয়ে আপাতত কংগ্রেস ও বাকি বিরোধী শিবিরের মধ্যে ঐক্যে ফাটল ধরাতে উদ্যোগী হয়েছেন বিজেপি নেতৃত্ব। একটাই লক্ষ্য, কংগ্রেসের সঙ্গে যাতে একই ছাতার তলায় শামিল না হতে পারে অন্য বিরোধী দলগুলি। তাতে ভোট ভাগ হবে। তার লাভ পাবে বিজেপি।
সরকারের চতুর্থ বছর পূর্তির দিনে শনিবার দিল্লি থেকে বিজেপি সভাপতি অমিত শাহ এবং কটক থেকে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী একযোগে আক্রমণ শানালেন কংগ্রেস-সহ গোটা বিরোধী শিবিরকে। কংগ্রেস সভাপতিকে নেতা বলেই মানতে নারাজ অমিতের কটাক্ষ, ‘‘রাহুল গাঁধী প্রধানমন্ত্রী হওয়ার বাসনা জানালেও কংগ্রেসের নেতারাই তা নিয়ে মন্তব্য করতে চাননি।’’ বিজেপি বিরোধী জোটের বাকি নেতারাও যে রাহুলের প্রধানমন্ত্রিত্বের ইচ্ছাকে ভাল ভাবে নেননি, তা-ও কৌশলে বুঝিয়ে দিতে চেয়েছেন তিনি। আর কংগ্রেসের পরিবারতন্ত্রকে কটাক্ষ করে প্রধানমন্ত্রীর দাবি, ইউপিএ জমানায় জনমতের ভিত্তিতে নয়, সরকার চলত জনপথ রোড থেকে। কর্নাটকে এইচ ডি কুমারস্বামীর শপথে অভূতপূর্ব বিরোধী সমাবেশকে কটাক্ষ করে মোদীর মন্তব্য, ‘‘দুর্নীতিবাজরা নিজেদের ও পরিবারকে বাঁচাতেই এক মঞ্চে ভিড়েছেন।’’
উত্তরপ্রদেশে উপনির্বাচনে হার ও কর্নাটক সরকার গঠনে ব্যর্থতা যে দলের অন্দরে প্রশ্ন তুলে দিয়েছে, তা বিলক্ষণ বুঝতে পারছেন মোদী-অমিত। এই অবস্থায় কর্মীদের মনোবল ধরে রাখতে অমিত বলেন, ‘‘ভুললে চলবে না আগের লোকসভাতেও মমতা থেকে চন্দ্রবাবু নায়ডু, সকলেই আমাদের বিপক্ষে ছিলেন। তা সত্ত্বেও আমরা জিতেছি।’’ অমিত বোঝাতে চেয়েছেন অতীতের বিরোধীরা এখনও বিরোধীই আছেন। এ বারেও জিতবে বিজেপি। আগামী এক বছরে পরিস্থিতি ঘোরানোর জন্যও দল নেমে পড়েছে বলেও উল্লেখ করেন বিজেপি সভাপতি। উত্তরপ্রদেশের উপনির্বাচনে হার নিয়ে বিজেপি সভাপতির সাফাই, ‘‘উপনির্বাচনে এমন হয়েই থাকে। লোকসভায় মানুষ স্থায়ী সরকারের কথা ভেবেই ভোট দেবেন।’’
ক’দিন ধরেই মোদী-অমিত শাহদের দফায় দফায় বিভিন্ন মন্ত্রকের সাফল্যের রিপোর্ট কার্ড তুলে ধরে প্রচারের বিরুদ্ধে আজ আক্রমণে নামেন রাহুল। তাঁর টুইট, ‘‘কৃষি, বিদেশনীতি, তেলের দাম, কর্মসংস্থান— সবেতেই ব্যর্থ মোদী সরকার। কিন্তু স্লোগান বা আত্মপ্রচারে তারা চরম সফল। অমিতের পাল্টা আক্রমণ, ‘‘চার বছরে এক কোটি মানুষ ঘর পেয়েছেন। সাত কোটি শৌচালয় তৈরি হয়েছে। ১৯ হাজার গ্রামে বিদ্যুৎ পৌঁছেছে।’’ রাহুলের ধাঁচেই আক্রমণে নেমে মায়াবতী আজ বিএসপি কর্মীদের লোকসভা ভোটের জন্য তৈরি হওয়ার ডাক দেন। তাঁর ভবিষ্যৎবাণী, ‘‘মোদী সরকারের বিদায়ঘণ্টা বেজে গিয়েছে।’’
বিশ্বভারতীর সমাবর্তন অনুষ্ঠান নিয়ে তোলপাড় দেশ, রাজ্য, প্রধানমন্ত্রীর দফতর
বর্ষপূর্তির আবহেও ফাটলের চিহ্ন এনডিএ শিবিরে। কর্নাটক থেকে তেলের দাম— বিভিন্ন প্রসঙ্গেই সংঘাতের মুখে দাঁড়িয়ে বিজেপি-শিবসেনা সম্পর্ক। দলিত নিগ্রহ নিয়ে সরব রামবিলাস পাসোয়ান। জোট ছেড়েছেন চন্দ্রবাবু। যদিও ভাঙনের যুক্তি মানতে চাননি অমিত। বলেছেন, ‘‘চন্দ্রবাবু গেলেও নীতীশ এসেছেন। সুতরাং শরিক দলের সংখ্যার বিচারে এনডিএ একই আছে।’’ বিরোধীদের মতে, নাকের বদলে নরুন পেয়ে খুশি বিজেপি। লোকসভা ভোটে এই খুশি টিকবে না।