ছ’মাসে সাড়ে তিন হাজার ফোন, হোয়াটস্অ্যাপ-মেসেঞ্জারের ইয়ত্তা নেই নিখিল-শৈলজার!

ছ’মাসে সাড়ে তিন হাজার ফোনমিসেস ইন্ডিয়া আর্থ’-এর ফাইনালিস্ট শৈলজা দ্বিবেদী।

জাস্ট দুনিয়া ডেস্ক: ছ’মাসে সাড়ে তিন হাজার ফোন করেছিলেন শৈলজা দ্বিবেদীকে। অর্থাৎ দিনে প্রায় ২০ বার করে প্রেমিকাকে ফোন করতেন সেনাবাহিনীর মেজর নিখিল হান্ডা! সেনাবাহিনীর মেজর অমিত দ্বিবেদীর স্ত্রী শৈলজা খুনের তদন্তে নেমে দিল্লি পুলিশ এমনটাই জানতে পেরেছে।

শুধু ফোন নয়, হোয়াট্‌সঅ্যাপ থেকে শুরু করে ফেসবুক মেসেঞ্জার-সহ একাধিক অ্যাপ থেকে চ্যাট করতেন নিখিল এবং শৈলজা। চলত সেক্সটিং এবং ভিডিয়ো চ্যাটও। তদন্তে নেমে দিল্লি পুলিশ নিখিলের বাড়ির কাছের একটি ডাস্টবিন থেকে তাঁর ভাঙাচোরা মোবাইলটি উদ্ধরা করে। সেখান থেকে বেশ কিছু অ্যাপ ডিলিট করে দিয়েছিলেন নিখিল। শুধু তাই নয়, খুনের পর শৈলজার মোবাইল থেকেও একাধিক অ্যাপ ডিলিট করে দেন তিনি। এমনকি, ফোনের কললিস্টও মুছে ফেলা হয়। সেগুলি সবই রিস্টোর করার চেষ্টা করছে দিল্লি পুলিশ।

শনিবার দিল্লির ক্যান্টনমেন্ট এলাকা থেকে উদ্ধার হয় শৈলজার গাড়িচাপা দেহ। তার গলার নলি কাটা ছিল। তদন্তে নেমে পুলিশ জানতে পারে, শৈলজার সঙ্গে সম্পর্ক ছিল নাগাল্যান্ডের ডিমাপুরে কর্মরত মেজর নিখিল হান্ডার সঙ্গে। এর পরেই শৈলজার স্বামীর অভিযোগের ভিত্তিতে রবিবারেই উত্তর প্রদেশের গ্রেফতার করা হয় নিখিলকে। ধীরে ধীরে রহস্য উন্মোচিত হয়।

বিয়েতে নারাজ মেজরের স্ত্রী, খুন করলেন আর এক মেজর

দিল্লির এক পুলিশ কর্তা জানিয়েছেন, নিখিলের সঙ্গে ডিমাপুরেই পরিচয় হয় শৈলজার। তাঁর স্বামী অমিত সেই সময় ডিমাপুরে বদলি হয়ে যান। ,এটা ২০১৫ সাল। এর পর সম্প্রতি অমিত দিল্লিতে বদলি হয়ে আসেন। তাঁর সঙ্গে শৈলজাও চলে আসেন দিল্লি। কিছু দিনের মধ্যেই রাষ্ট্রপুঞ্জের বিশেষ অফিসার হিসাবে দায়িত্ব নিয়ে অমিতের সুদান যাওয়ার কথা ছিল। কিন্তু, ডিমাপুর থেকে গত জানুয়ারিতে দিল্লিতে আসার পরেও শৈলজার সঙ্গে নিখিলের সম্পর্ক অটুট ছিল। সারা দিনই প্রায় ফোনে কথা হত।

শৈলজা দ্বিবেদী

শৈলজা দ্বিবেদী

শৈলজার সুদান চলে যাওয়ার বিষয়টি নিখিল মেনে নিতে পারেনি। বার বার ফোনে বারণ করে। কিন্তু, শৈলজা তা মেনে নেননি। এর পরেই স্ত্রীকে না জানিয়ে ডিমাপুর থেকে দিল্লি চলে আসেন নিখিল। মাইগ্রেনের সমস্যা দেখিয়ে ভর্তি হয়ে যান দিল্লির সেনা হাসপাতালে। সেখানে আবার ফিজিওথেরাপি করাতে মাঝে মাঝেই আসতেন শৈলজা। শনিবার তাঁকে হাসপাতাল চত্বরে ফোন করে ডাকেন নিখিল। এর পর একটি হোন্ডা সিটি গাড়িতে তাঁকে তুলে নিয়ে বিয়ের জন্য চাপ দিতে থাকেন। কি‌ন্তু নিখিলের বিয়ের প্রস্তাবে কোনও রকম সাড়া দেননি শৈলজা। এর পরেই ছুরি দিয়ে শৈলজার গলা কেটে দেন নিখিল। তার পর বিষয়টি অন্য দিকে ঘোরাতে শৈলজার দেহ গাড়ি থেকে ফেলে দিয়ে তার উপর গাড়ি চালিয়ে দেন নিখিল।

হাসপাতাল থেকে বেরনোর আধ ঘণ্টার ভিতরেই শৈলজার গাড়িচাপা দেহ উদ্ধার হয় ক্যান্টনমেন্ট এলাকা থেকে। এর পর ওই গাড়ি নিয়ে পালিয়ে ৎআন নিখিল। কিন্তু, মেরঠ থেকে রবিবার দিল্লি পুলিশ তাঁকে গ্রেফতার করে। পুলিশের জেরায় তিনি জানান, সৈলজাকে অসম্ভব বাল বাসতেন। তাই তাঁকে বিয়ে করতে চেয়েছিলেন নিখিল। কিন্তু, মেজরপত্নী রাজি না হওয়ায় তাঁকে রাগের মাথায় খুন করেন নিখিল। সোমবার নিখিলকে আদালতে বিচারকের সামনে হাজির করানো হলে তিনি তাঁকে চার দিন পুলিশি হেফাজতে রাখার নির্দেশ দেন।