‘হীরক রাজা’ নীরবেই হাতিয়ে নিলেন ব্যাঙ্কের ১১ হাজার কোটি!

তিনিও মোদী। তবে নীরব। হিরে ব্যবসায়ী হিসাবে তাঁর বিশ্বজোড়া খ্যাতি।

আসলে নামটাই নীরব। আর নীরবেই তিনি পঞ্জাব ন্যাশনাল ব্যাঙ্কের প্রায় সাড়ে ১১ হাজার কোটি টাকা হজম করে ফেলেছেন। তবে, শেষমেশ সেই প্রতারণা ধরেও ফেলেছে ব্যাঙ্ক কর্তৃপক্ষ। তাঁরা নালিশ ঠুকেছেন সিবিআইয়ের কাছে। কেন্দ্রীয় ওই গোয়েন্দা সংস্থা ইতিমধ্যে তদন্ত শুরুও করে দিয়েছে।

একা সিবিআই নয়, প্রতারণার কথা জানতে পেরে মাঠে নেমেছে এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট (ইডি)-ও। বৃহস্পতিবার তাঁরা নীরব মোদীর বাড়ি ও শোরুম মিলিয়ে প্রায় ৯টি জায়গায় হানা দিয়েছে। জানা গিয়েছে, এই মুহূর্তে নীরব দেশ থেকে পগারপার। তবে, কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক সে কথা মানতে চায়নি। তাদের কাছে নাকি এমন কোনও খবর নেই।

নীরবের সংস্থার হিরে অস্কারের মঞ্চে কেট উইন্সলেটকে পরতে দেখা গিয়েছে। নিউ ইয়র্ক থেকে লন্ডন, বেজিং থেকে মুম্বই, ‘নীরব মোদী’ ব্র্যান্ডের হিরের গয়নার বুটিক সর্বত্র। তাঁর নকশা করা অলঙ্কারের জন্য দুনিয়া খুঁজে আনা হয় দুষ্প্রাপ্য হিরে। দাম পৌঁছয় ৫০ কোটি টাকা পর্যন্ত। সেই ধনকুবের নীরব মোদীর বিরুদ্ধেই এ বার প্রতারণার অভিযোগ আনল পঞ্জাব ন্যাশনাল ব্যাঙ্ক।

সিবিআইয়ের কাছে নীরব, তাঁর স্ত্রী, ভাই, মামা এবং তাঁদের অলঙ্কার সংস্থার বিরুদ্ধে জোড়া অভিযোগ দাখিল করেছে রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্কটি। একটি অভিযোগ গত মাসেই জমা পড়ে। প্রতারণার অঙ্ক ২৮০ কোটি টাকা। মঙ্গলবার রাতে আর এক দফা অভিযোগ জমা পড়েছে। বুধবার পিএনবি শেয়ার বাজারকে জানিয়েছে, তারা প্রায় সাড়ে ১১ হাজার কোটি টাকা প্রতারণার শিকার, যা মোট পুঁজির প্রায় তিন ভাগের এক ভাগ।

সিবিআই সূত্রের খবর, ২০১১ সালে মুম্বইয়ে পিএনবি-র ব্র্যাডি হাউস শাখা থেকে কোনও নিয়মকানুন ছাড়াই বিরাট অঙ্কের ঋণের গ্যারান্টি হাতিয়ে নেয় নীরব ও তাঁর সংস্থা ফায়ারস্টার ডায়মন্ড। লক্ষ্য ছিল হংকং থেকে হিরে কেনা। যার মানে, টাকা মেটানো না হলে তার দায়িত্ব ব্যাঙ্কের। সেই নথি দেখিয়ে আবার এলাহাবাদ ও অ্যাক্সিস ব্যাঙ্কের হংকং শাখা থেকে ২৮০ কোটি টাকা ঋণ জোগাড় করেন নীরব। সংশ্লিষ্ট সূত্রের খবর, ইতিমধ্যেই পিএনবি-কে ওই ২৮০ কোটি টাকা শোধ করতে হয়েছে।