সাংবাদিক খুনে যাবজ্জীবন ছোটা রাজনের, ছাড় জিগনা ভোরাকে

সাংবাদিকসাংবাদিক জ্যোতির্ময় দে। ইনসেটে ছোটা রাজন।

জাস্ট দুনিয়া ডেস্ক:  সাংবাদিক খুনের কেটে গিয়েছে প্রায় সাত সাতটি বছর। দুষ্কৃতীদের গুলিতে সেই ২০১১ সালে শেষ হয়ে গিয়েছিল জলজ্যান্ত এক সাংবাদিকের প্রাণ। তিনি জ্যোতির্ময় দে। খুনের ঘটনায় সেই সময়ই জড়িয়ে গিয়েছিল গ্যাংস্টার ছোটা রাজনের নাম। এত বছর পর শেষ পর্যন্ত শাস্তি হল খুনিদের। মুম্বইয়ের বিশেষ আদালত বুধবার রায় দিল এই মামলার।

সাংবাদিক জ্যোতির্ময় দে হত্যা মামলায় যাবজ্জীবন কারাদন্ড দেওয়া হল মূল অভিযুক্ত ছোটা রাজনকে। অভিযুক্তের তালিকায় রয়েছে সতীশ কালিয়া সহ মোট ন’জন। এদের সকলকেই দোষী সাব্যস্ত করা হয়েছে। সতীশ কালিয়াই জ্যোতির্ময়ের উপর  গুলি চালিয়েছিল। এই খুনের পিছনে নাম জড়িয়ে গিয়েছিল এক জাতীয় স্তরের সংবাদপত্রের ব্যুরো চিফ জিগনা ভোরাসহ  মোট ১৩ জনের। তাঁদের মধ্যে বেকসুর খালাস করা হয়েছে জিগনা বোরা ও আরও দু’জনকে। একজন এখনও ফেরার। মামলা চলাকালীন মৃত্যু হয়েছে একজনের।

৫৬ বছরের জ্যোতির্ময় ক্রাইম রিপোর্টার হিসেবে কাজ করতেন মিডডে ইভিনিংজারে। প্রকাশ্য দিবালোকে মুম্বইয়ে তাঁকে দীর্ঘ সময় লক্ষ্য করে এসে গুলি করে মারা হয়। তখন তিনি বাইক চালিয়ে যাচ্ছিলেন। ২০১১ সালের জুন মাস সেটা। পুলিশ জানিয়েছিল, ছোটা রাজনই তাঁকে খুনের নির্দেশ দিয়েছিল। তার কাছে খবর ছিল এই সাংবাদিক তাকে নিয়ে কিছু লেখার পরিকল্পনা করছেন। ইনভেস্টিগেশন জার্নালিজমের জন্য পরিচিত ছিলেন জ্যোতির্ময়। তাঁর পরিকল্পনা ছিল ২০জন গ্যাংস্টারের গল্প নিয়ে একটি বই বের করার।

কাঠুয়ার ঘটনা খুবই ছোট, খুব একটা গুরুত্ব দেওয়ার দরকার নেই

ছোটা রাজন, যার আসল নাম রাজেন্দ্র এস নিখালজি পাঁচ লাখ টাকার বিনিময়ে সুপারি কিলারকে ভাড়া করে। যার নাম সতীশ কালিয়া। সতীশকে জ্যোতির্ময় সম্পর্কে বিস্তারিত কিছু বলা হয়নি। শুধু চেহার বিবরণ ও বাইকের নম্বর দেওয়া হয়েছিল। সাত জনের দল নিয়ে এই খুন করেছিল সতীশ।

১১ জুন বাড়ি ফিরলেন জ্যোতির্ময়। পাওয়াই বাজারের মধ্যেই তাঁকে গুলি করা হয়। দু’দিক দুটো বাইক তাঁকে কী ভাবে ঘিরে ধরে গুলি করে সবটাই ধরা পড়ে বাজারের সিসিটিভি ফুটেজে। পিছনে একটি কোয়ালিস গাড়ি পুরো ঘটনাটি লক্ষ্য করছিল। পাঁচটি গুলি করা হয়েছিল। সঙ্গে সঙ্গেই তাঁকে স্থানীয় হিরানন্দানি হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। কিন্তু সেখানে তাঁকে মৃত বলে ঘোষণা করা হয়।

তাঁর খুনের তিন মাস পর জিগনা ভোরাকে গ্রেফতার করে পুলিশ। মুম্বই এশিয়ান এজের কাজ করতেন জিগনা। তখন বলা হয়েছিল, পেশাদার শত্রুতার কারণেই জিগনাই ছোটা রাজনকে দিয়ে জ্যোতির্ময়কে খুন করিয়েছিলেন। তিনিই বাইকের নম্বর দিয়েছিলেন। কিন্তু জিগনা ভোরা সব অভিযোগ অস্বীকার করেন। তিনি সেই সময় জানিয়েছিলেন, ছোটা রাজনকে সাক্ষাৎকারের জন্য ফোন করেছিলেন। পরে বেল পেয়ে যান জিগনা। ২০১৫র নভেম্বরে ইন্দোনেশিয়া থেকে ছোটা রাজনকে গ্রেফতার করা হয়। এই মুহূর্তে দিল্লির তিহার জেলে রয়েছে রাজন।