লালুপ্রসাদ যাদব দিল্লি গেলেন ট্রেনে, বিতর্কে বিজেপি

লালুপ্রসাদ যাদবলালুপ্রসাদ যাদব

জাস্ট দুনিয়া ডেস্ক: লালুপ্রসাদ যাদব দিল্লি যাবেন। শারীরিক পরিস্থিতি ভাল নয়। চিকিৎসকেরাই পরামর্শ দিয়েছেন, দিল্লির ‘অল ইন্ডিয়া ইনস্টিটিউট অফ মেডিক্যাল সায়েন্সেস’ (এআইআইএমএস)-এ রেখে তাঁর চিকিৎসা করালে ভা‌ল হয়।

সেই মতো ঝাড়খণ্ড সরকারের কাছে আবেদন করেন লালুপ্রসাদ। আবেদনে সাড়া দেয় সরকার। কিন্তু, দিল্লি যাওয়ার জন্য বিমানের খরচা তারা দেবে না বলে জানিয়ে দেয়। এর পর রাঁচী থেকে প্রায় ১৬ ঘণ্টা ট্রেন সফর করে দিল্লি পৌঁছন রাষ্ট্রীয় জনতা দল (আরজেডি) প্রধান। ঘটনায় প্রচণ্ড ক্ষুব্ধ আরজেডি সমর্থকরা। রাঁচী স্টেশনে বিপুল সংখ্যক সমর্থক অসুস্থ লালুকে বিদায় জানাতে হাজির হয়েছিলেন। আবার দিল্লি স্টেশনও তাঁদের হাজিরা ছিল চোখে পড়ার মতো।

পশুখাদ্য কেলেঙ্কারি মামলায় দোষী সাব্যস্ত হয়ে লালুপ্রসাদ ঝাড়খণ্ডের বিরসা মুণ্ডা জেলে ছিলেন। বুকে ব্যথার কারণে গত ১৭ মার্চ তাঁকে রাঁচীরই ‘রাজেন্দ্র ইনস্টিটিউট অফ মেডিক্যাল সায়েন্সেস’ (রিমস)-এ ভর্তি করা হয়। এর আগে ২০১৪ সালে তাঁর ওপেন হার্ট সার্জারি হয়েছে। কাজেই বুকে ব্যথা নিয়ে চিকিৎসকেরা আর ঝুঁকি নিতে চাননি। তাঁরা লালুকে দিল্লির বড় কোনও হাসপাতালে রেখে চিকিৎসার পরামর্শ দেন। এত দিন পর বুধবার সেই অনুমতি দেয় সিবিআইয়ের বিশেষ আদালত। তার পরেই দিল্লি যাওয়ার জন্য ঝাড়খণ্ডের বিজেপি সরকারের কাছে যাতায়াতের ব্যবস্থা করার জন্য আবেদন জানান ৬৯ বছরের লালুপ্রসাদ। কিন্তু, অবশেষে তাঁকে বৃহস্পতিবার ট্রেনে চেপেই দিল্লি যেতে হয়।

সিবিএসই প্রশ্ন ফাঁসে নয়া মোড়, নতুন করে হবে পরীক্ষা

এ বিষয়ে ঝাড়খণ্ডের বিজেপি মন্ত্রী সরযূ রায় প্রকাশ্যেই তাঁর সরকারের সমালোচনা করেছেন। এমনিতে পশুখাদ্য কেলেঙ্কারি নিয়ে লালুপ্রসাদের বিরুদ্ধে যে মামলাগুলি হয়েছিল, সেই মামলাকারীদের মধ্যে সরযূও ছিলেন। লালুপ্রসাদের বিরোধী বলে পরিচিত সেই সরযূ জানিয়েছেন, ঝাড়খণ্ড সরকারের এই আচরণ আসলে অপরিণতমনস্ক। এটা রাজনৈতিক অসৌজন্যও বটে। তাঁর মতে, ঝাড়খণ্ড সরকার এমনটা না করলেই ভাল হত। অন্তত বিতর্কটা তো এড়ানো যেত! তিনি আরও জানিয়েছেন, লালুপ্রসাদের শারীরিক অবস্থার কথা বিবেচনা করে তাঁর আবেদনে সাড়া দিয়ে বিমানের যাওয়ার ব্যবস্থা করাই উচিত ছিল সরকারের।

ঝাড়খণ্ড সরকারের এই আচরণ আসলে ক্ষমতার বড়াই! এমনটাই মনে হয়েছে আরজেডি নেতা শিবানন্দ তিওয়ারির। তিনি জানিয়েছেন, এত বড় একটা ঘটনা ঘটে গেল, আর বিজেপি-র তাবড় নেতারা সকলে চুপ! তাঁর কথায়, ‘‘এই বিজেপি-র কী হয়েছে! তারা কেন ক্ষমতার এত বড়াই দেখাচ্ছে! বুঝতে পারছি না!’’ তিনি মনে করিয়ে দিয়েছেন ১৯৯০ সালে অক্টোবর মাসের সেই ঘটনা। রথযাত্রায় বেরনো লালকৃষ্ণ আডবাণীকে গ্রেফতার করেছিল লালুর সরকার। তখনও বিহার ভাগ হয়নি। লালকৃষ্ণকে গ্রেফতার করে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল দুমকার জেলে। তখন কিন্তু লালু সরকারি হেলিকপ্টারে করেই আডবাণীকে পাঠিয়েছিলেন। পরে তাঁর পরিবার আডবাণীর সঙ্গে দিল্লি থেকে দেখা করতে এলে, লালু তখনও ওই হেলিকপ্টারের ব্যবস্থা করেন। সেই সৌজন্য কী করে ভুলে গেল বিজেপি? প্রশ্ন তুলেছেন শিবানন্দ।