ভারতীয় অভিবাসীর মার্কিন নাগরিকত্ব কেড়ে নেওয়া হল

মার্কিন মহিলাকে বিয়ে করে সে দেশের নাগরিকত্ব পেয়েছিলেন বলজিন্দর সিংহ। কিন্তু, ভারত থেকে যাওয়া ওই ব্যক্তির নাগরিকত্ব এ বার বাতিল করে দিচ্ছে ট্রাম্প সরকার। কারণ, তিনি অবৈধ ভাবে মার্কিন মুলুকে ঢুকেছিলেন। প্রশাসনের দাবি, অবৈধ ভাবে বসবাসকারীদের মধ্যে বলজিন্দরই প্রথম, যাঁর স্বাভাবিক নাগরিকত্ব কেড়ে নেওয়া হচ্ছে।

বছর তেতাল্লিশের বলজিন্দর ২০০৬-এ এক মার্কিন মহিলাকে বিয়ে করেন। সেই সুবাদেই তিনি মার্কিন নাগরিকত্ব পেয়েছিলেন। তার পর থেকে স্ত্রীকে নিয়ে নিউ জার্সিতেই থাকতেন।

প্রশাসন সূত্রে খবর, ২০০৬-এ বিয়ে করলেও তার অনেক আগেই বলজিন্দর আমেরিকা এসেছিলেন। সেটা ১৯৯১ সাল। বৈধ কোনও কাগজপত্র, পরিচয়পত্র ছাড়াই তিনি সান ফ্রান্সিসকো উড়ে গিয়েছিলেন। সেখানে তিনি নিজের পরিচয় দেন দাভিন্দর সিংহ হিসাবে। ধরা পড়ার পর মামলাটি আদালতে ওঠে। সেই সময় তিনি দিনের পর দিন শুনানি এড়িয়ে যেতেন। আদালতে হাজিরা দিতেন না। ১৯৯২তে আদালত দাভিন্দরকে দেশ থেকে বের করে দেওয়ার নির্দেশ দেয়।

এর ঠিক এক মাস পরেই দাভিন্দর নাম পরিবর্তন করে মার্কিন প্রশাসনের কাছে আশ্রয়প্রার্থী হিসাবে আবেদন করে। নাম পাল্টে তিনি তখন বলজিন্দর। বিয়ের পর যদিও সেই ‘আশ্রয়প্রার্থী’ পরিচিতি ঘুচে যায় বলজিন্দরের। কিন্তু, গত শুক্রবার নিউ জার্সির এক ফেডারেল জাজ বলজিন্দরের মার্কিন নাগরিকত্ব প্রত্যাহারের নির্দেশ দেন। শুধু তাই নয়, তাঁকে স্থায়ী ঠিকানায় ফিরিয়ে দেওয়ার নির্দেশও দেন তিনি।

মার্কিন নাগরিকত্ব এবং অভিবাসন দফতরের ডিরেক্টর ফ্রান্সিস সিসনা ফেডারেল জাজ-এর এই রায়কে অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ বলে মনে করছেন। তাঁর কথায়, ‘‘অবৈধ ভাবে এ দেশে প্রবেশ এবং বসবাসকারীদের উদ্দেশে এই রায় একটা বড়সড় বার্তা দিল। এতেই বোঝা যাচ্ছে ট্রাম্প সরকার এ ধরনের ঘটনাকে কোনও ভাবেই প্রশ্রয় দেবে না।’’

ট্রাম্প সরকারের বিচার বিভাগের দাবি, অবৈধ ভাবে বসবাসকারীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে স্বাভাবিক নাগরিকত্ব প্রত্যাহার করে নেওয়ার এটাই প্রথম ঘটনা। গত বছরের সেপ্টেম্বরে মার্কিন প্রশাসন প্রায় ৩ লাখ ১৫ হাজার নাগরিকের ক্ষেত্রে নিশ্চিত হয়েছে, যেখানে তাঁদের বায়োমেট্রিক তথ্য নেই। কেন নেই, তা খুঁজে দেখার পাশাপাশি ১ হাজার ৬০০ জনের বিরুদ্ধে মামলাও দায়ের করা হয়েছে। এর মধ্যে কারও কারও ঘাড়ে ফৌজদারী মামলা ঝুলছে। বাকিদের নাগরিকত্বের প্রমাণ খতিয়ে দেখা হচ্ছে।