রাজস্থানে উচ্চবর্ণের ‘ক্ষোভ’ জ্বালিয়ে দিল দুই দলিত নেতার বাড়ি

দলিত নেতার পুড়ে যাওয়া বাড়িদলিত নেতার পুড়ে যাওয়া বাড়ি

জাস্ট দুনিয়া ডেস্ক: প্রায় ৫ হাজার মানুষের ‘ক্ষোভ’ জ্বালিয়ে দিল দুই দলিত নেতার বাড়ি। বেশ কয়েকটি রাজ্য জুড়ে দলিত বিক্ষোভ এবং তাঁদের একাধিক সংগঠনের ডাকা ভারত বন্‌ধের পর ২৪ ঘণ্টাও কাটল না। যে রাজস্থানে সোমবারই পুলিশের সঙ্গে বিক্ষোভকারীদের সংঘর্ষে ১ জনের মৃত্যু হয়েছিল, সেই বিজেপি শাসিত রাজ্যই মঙ্গলবার এমন ঘটনার সাক্ষী হল।

ঘটনাচক্রে, ওই দুই নেতার মধ্যে রাজ্যের শাসক দল বিজেপি-র বর্তমান বিধায়ক এক জন। অন্য জন, কংগ্রেসের প্রাক্তন বিধায়ক। তিনি বিগত কংগ্রেস মন্ত্রিসভার মন্ত্রীও ছিলেন। রাজস্থানের করৌলি জেলার হিন্দুয়ানে এই ঘটনার পর পুলিশ কার্ফু জারি করেছে। বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে ইন্টারনেট পরিষেবাও।

তবে যে সময় এই আগুন লাগানোর ঘটনা ঘটে, দুই নেতার কেউই তখন বাড়িতে ছিলেন না। বর্তমান বিধায়ক রাজকুমারী জাটভ এবং প্রাক্তন বিধায়ক ভরোসিলাল জাটভ তখন শহরের বাইরে ছিলেন বলে সংবাদ সংস্থা পিটিআইকে জানিয়েছেন করৌলির বরিষ্ঠ এক জেলা আধিকারিক অভিমন্যু কুমার।

ভারত বন্‌ধ, তফসিলি জাতি-উপজাতি নিগ্রহ প্রতিরোধ আইন নিয়ে কেন্দ্রের আর্জি শুনবে সুপ্রিম কোর্ট

তফসিলি জাতি ও উপজাতিদের উপর নিগ্রহ প্রতিরোধের জন্য ১৯৮৯ সালে রাজীব গান্ধীর সরকার একটি আইন তৈরি করে। সেই আইনে ২০১৫ সালে কিছু সংশোধনীও আনা হয়েছিল। সম্প্রতি তার অপপ্রয়োগ রুখতে সুপ্রিম কোর্ট একটি রায় দিয়েছে। সেই রায়ে ওই সম্প্রদায়ের মানুষের মনে হয়েছে, এর ফলে আইনটি লঘু হয়ে গিয়েছে। এবং তাতে নরেন্দ্র মোদী সরকারের সায় ছিল। কারণ, রায় লঘু হয়ে যাওয়ার ক্ষেত্রে সরকারের প্রত্যক্ষ কোনও অমত ছিল না বলে ওই অংশের দাবি। তারই বিরোধিতায় সোমবার ভারত বন্‌ধের ডাক দিয়েছিল একাধিক দলিত সংগঠন। বন্‌ধকে ঘিরে বিভিন্ন রাজ্য উত্তাল হয়ে ওঠে। রাজস্থানের বিভিন্ন অংশেও ছড়িয়ে পড়েছিল হিংসার আঁচ। হিন্দুয়ান শহরের বহু দোকানে দলিত বিক্ষোভকারীরা ভাঙচুর চালান বলে অভিযোগ। জেলা প্রসাসনের কর্তাদের সঙ্গেও দেখা করতে গিয়ে প্রত্যাখ্যাত হয়েছিলেন দলিত নেতারা।

সে দিনের সেই ভাঙচুরের প্রতিবাদে এ দিন মিছিল বার করেছিলেন হিন্দুয়ানের ব্যবসায়ীরা। উচ্চবর্ণের লোকজনও সেই মিছিলে ছিলেন। সেই মিছিল থেকেই বিধায়ক ও প্রাক্তন বিধায়কের বাড়িতে হামলা হয় বলে জানা গিয়েছে। রাজস্থান পুলিশের এডিজি (আইন-শৃঙ্খলা) এন আর কে রেড্ডি জানিয়েছেন, শহরের যে অংশে তফসিলি জাতি বা উপজাতি-ভুক্ত সম্প্রদায়ের মানুষ বেশি থাকেন, সেই এলাকায় ঢোকার চেষ্টা চালিয়েছিল মিছিলের মানুষজন।

হিংসাত্মক ওই পরিস্থিতি সামলাতে পুলিশ লাঠি চালায়, কাঁদানে গ্যাস এবং রাবার বুলেটও ছোড়ে বলে অভিযোগ। করৌলির পুলিশ সুপার অনিল কয়াল জানিয়েছেন, এ দিনে আগুন লাগানোর ঘটনায় জড়িত থাকার অভিযোগে ৪০ জনকে আটক করা হয়েছে।