জঙ্গি অধ্যাপক মহম্মদ রফি ভাট বাবাকে শেষ ফোনে বলেছিলেন, ‘কষ্ট দিয়ে থাকলে ক্ষমা করে দিও!’

জঙ্গি অধ্যাপক মহম্মদ রফি ভাটজঙ্গি অধ্যাপক মহম্মদ রফি ভাট

জাস্ট দুনিয়া ডেস্ক: জঙ্গি অধ্যাপক মহম্মদ রফি ভাট শেষ বার তাঁর বাবাকে ফোন করেছিলেন। সেই ফোনে তিনি বাবাকে বলেছিলেন, ‘আমি যদি তোমাদের কোনও ভাবে কষ্ট দিয়ে থাকি, তবে ক্ষমা করে দিও!’ এটাই ছিল রবিবার সকালে ফৈয়াজ আহমেদ ভাটের কাছে আসা ছেলের প্রথম ফোন। এবং শেষ ফোনও।

শুক্রবার বিকেল থেকেই ছেলে রফির কোনও খোঁজ পাওয়া যাচ্ছিল না। একেবারেই নিরুদ্দেশ। থানা-পুলিশ করে কোনও লাভ হয়নি। শ্রীনগর থেকে ২০ কিলোমিটার দূরে চুন্দিনার গন্ডরবলে রফির বাড়ি। কৃতি ওই ছাত্র কাশ্মীর বিশ্ববিদ্যালয়ে সমাজবিদ্যার অধ্যাপক ছিলেন। ছেলে নিরুদ্দেশের পর থেকেই পৈয়াজ এবং তাঁর স্ত্রী দু’জনেই উৎকণ্ঠায় কাটাচ্ছিলেন। শুক্রবার দুপুর সাড়ে তিনটে নাগাদ বাড়ি থেকে বেরিয়েছিলেন। তার পর আর কোনও খবর পাওয়া যায়নি।

এ দিন সকালে বাড়ির দাওয়ায় ঝাপসা চোখে বসে ছিলেন ফৈয়াজ। সেই সময় তাঁর মোবাইল বেজে ওঠে। ও পারে ছেলে রফি। শান্ত, ধীর গলায় ৩৩ বছরের রফি তাঁকে আরও বলেন, ‘‘আব্বা, এটাই আমার সেষ ফোন। আমি খুব শীঘ্রই আল্লার কাছে চলে যাব।’’ ব্যস! ফোন কেটে যায়। ফোন কাটার পর তখনও বৃদ্ধ ফৈয়াজ বাইরের দিকে তাকিয়ে ছিলেন ঝাপসা চোখে। এর কিছু ক্ষণ পর নিরাপত্তাবাহিনীর সঙ্গে এনকাউন্টারে মারা গিয়েছে ছেলে রফি। সঙ্গে হিজবুলের এক কমান্ডারও ছিল।

ছেলে কাশ্মীর বিশ্ববিদ্যালয়ের নামী অদ্যাপক। কিন্তু, তলায় তলায় যে জঙ্গি সংগঠনে নাম লিখিয়েছেন তা ঘুণাক্ষরেও টের পা‌ননি ফৈয়াজ। তাঁর স্ত্রী পুলিশকে জানিয়েছেন, শুক্রবার যে ও একেবারেই বাড়ি ছেড়ে চলে গিয়েছিল, তা-ও তাঁরা টের পাননি। এ দিন সোপিয়ানের বাদিগামে জঙ্গিদের আস্তানার খবর পেয়ে অভিযান চালায় নিরাপত্তা বাহিনী। সেই সময় গোটা গ্রাম ঘিরে ফেলা হয়। জঙ্গিদের আত্মসমর্পণ করার কথাও বলা হয়। কিন্তু, সে কথায় কান না দিয়ে তারা পাল্টা লড়াই চালায়।

কানে আরশোলা, অনেক চেষ্টার পর বেরলো ৯ দিন পর

আত্মসমর্পণের আবেদন জানানোর জন্য ঘটনাস্থলে নিয়ে আসা হয় মহম্মদ রফি ভাটের পরিবারকে। রফি সহ অন্যান্য জঙ্গিদের আত্মসমর্পণের জন্য তাঁরা আবেদন জানিয়েছিলেন। কিন্তু তাতে কাজ হয়নি। ওই এনকাউন্টারে রফি-সহ পাঁচ জনের মৃত্যু হয়েছে। তাদের মধ্যে রয়েছে আদিল মালিক ও বিলাল মৌলবি এবং হিজবুল কম্যান্ডার সাদ্দাম পাদ্দের। ২০১৬ সালের ৮ জুন নিরাপত্তারক্ষীর হাতে মৃত জঙ্গি বুরহান ওয়ানির ঘনিষ্ঠ সহযোগী ছিল এই সাদ্দাম। দীর্ঘদিন ধরেই তাঁর সন্ধান চলছিল।