কাবেরী নিয়ে সুপ্রিম রায়ে খুশি কর্নাটক

দীর্ঘ দিনের গণ্ডগোল। এ বার তা মেটানোর চেষ্টা করে রায় শোনাল শীর্ষ আদালত। সেই রায় মোতাবেক, এখন থেকে কাবেরী নদীর জলের ভাগ আগের থেকে বেশি পাবে কর্নাটক। তামিলনাডুর ভাগ থেকে বেশ কিছুটা কমিয়ে দেওয়া নির্দেশ দিয়েছে সুপ্রিম কোর্ট।
কাবেরী নদীর জল নিয়ে কর্নাটক এবং তামিলনাডুর বিবাদ বহু বছরের পুরনো। তখন কর্নাটক আসলে স্টেট অব মহীশূরের অংশ। তার বহু বছর পর নামকরণ হবে কর্নাটক। আর তামিলনাডু তখন মাদ্রাজ প্রেসিডেন্সির অন্তর্গত। সেই সময় থেকেই গণ্ডগোল। জল ভাগাভাগি নিয়ে দুই রাজ্যের বিবাদ এক সময় দাঙ্গা-হাঙ্গামার তেহারা নেয়।
শনিবার সকালে সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতি দীপক মিশ্র, বিচারপতি অমিতাভ রায় এবং বিচারপতি এএম খালউইলকারের ডিভিশন বেঞ্চ জানিয়ে দেয়, কাবেরী থেকে এ বার কর্নাটক অতিরিক্ত ১৪.৭৫ হাজার মিলিয়ন কিউবিক ফুট (টিএমসিএফটি) জল পাবে। তামিলনাড়ু এত দিন ১৯২ টিএমসিএফটি জল পেত। আজকের পর থেকে তারা ১৭৭.২৫ টিএমসিএফটি জল পাবে।
‘‌কাবেরী জলবন্টন বিবাদ ট্রাইব্যুনাল’-এ‌র ২০০৭ সালের শেষ রায়কে চ্যালেঞ্জ জানিয়ে ২০১৬ সালে শীর্ষ আদালতের দ্বারস্থ হয় তামিলাডু, কর্নাটক এবং কেরল। ওই রায়ে বলা হয়, কাবেরী থেকে ২৭০ টিএমসিএফটি জল কর্নাটক পাবে । ১৯২ টিএমসিএফটি পাবে তামিলনাডু। ৩০ টিএমসিএফটি কেরল এবং ৬ টিএমসিএফটি পাবে পুদুচেরী। সেই সময় তামিলনাডুকে জল দেওয়ার জন্য সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশের তীব্র বিরোধিতা করেন বিজেপি এবং জেডিএস নেতারা। তাদের দাবি ছিল, ১৯২ টিএমসিএফটি-র বদলে তামিনলাডুকে ১৩২ টিএমসিএফটি জল দেওয়া হোক। আদালতের নির্দেশ না মানার জন্য শীর্ষ আদালতে সমালোচনার মুখে পড়তে হয় কর্নাটক সরকারকে। জল বিবাদের শান্তিপূর্ণ মীমাংসার জন্য কেন্দ্রকে কাবেরী ম্যানেজমেন্ট বোর্ড গঠনের নির্দেশ দেয় সুপ্রিম কোর্ট।
কাবেরী জলবন্টন নিয়ে আগের রায় পাল্টে ওই বছরেরই সেপ্টেম্বরে নতুন নির্দেশ দেয় সুপ্রিম কোর্ট। তাতে বলা হয় আগামী ২০ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত প্রতিদিন তামিলনাডুকে ১২ হাজার কিউসেক করে জল দিতে হবে। সেই নির্দেশেরও বিরোধিতা করে কর্নাটক। জলযুদ্ধে জমি ছাড়তে নারাজ ছিল তামিলনাডুও। ফলে, বিরোধ শুধুমাত্র শীর্ষ আদালতের গণ্ডিতেই সীমাবদ্ধ থাকেনি। তামিল-কন্নড় সংঘর্ষে এক সময় উত্তাল হয়ে ওঠে বেঙ্গালুরু। কর্নাটক জুড়ে বিক্ষোভ দেখান কৃষকেরা। চলতি বছর ৯ জানুয়ারি শীর্ষ আদালত জানিয়েছিল, এক মাসের মধ্যে জলবন্টন নিয়ে প্রয়োজনীয় রায় দেওয়া হবে। এ দিন সেই রায়ই শোনাল আদালত।