আইনের নামে ঠান্ডা মাথায় খুন, সেটাই ফাঁসি, আদালতে জানাল নির্ভয়াকাণ্ডের আসামীরা

ঠান্ডা মাথায় খুননির্ভয়া-কাণ্ডে ফাঁসির সাজাপ্রাপ্তেরা

জাস্ট দুনিয়া ডেস্ক: ফাঁসি আসলে আইনের নামে ঠান্ডা মাথায় খুন, সুপ্রিম কোর্টে এমনটাই দাবি করল নির্ভয়া-কাণ্ডে দোষী এবং ফাঁসির সাজাপ্রাপ্ত চার অপরাধী।

২০১২-র ডিসেম্বরে রাজধানী দিল্লিতে বাসের ভেতর ভয়াবহ সেই ঘটনা ঘটে। গণধর্ষণ এবং মারধরের ওই ঘটনার ১৬ দিন পর হাসপাতালে মারা যায় ওই তরুণী। প্রতিবাদে ফেটে পড়ে গোটা দেশ। ওই মামলায় দোষী সাব্যস্ত ছয় জন। তাদের মধ্যে এক জনের বয়স ১৮ বছরের কম হওয়ায় তাকে জুভেনাইল হোমে পাঠানো হয়। অন্য পাঁচ জনকে ২০১৭ সালের মে মাসে ফাঁসির সাজা শোনায় শীর্ষ আদালত। তার মধ্যে রাম সিংহ নামে এক জন জেলের ভিতরেই আত্মহত্যা করে।

বাকি চার আসামী সুপ্রিম কোর্টে তাদের মৃত্যুদণ্ড রদের আবেদন জানায়। শুক্রবার শীর্ষ আদালতে প্রধান বিচারপতি দীপক মিশ্রের এজলাসে সেই মামলারই শুনানি ছিল। শুনানি শেষে এ দিন কোনও রায় দেয়নি আদালত।

কোর্ট এ দিন দুই খুনি-ধর্ষকের কথা শোনে। বিনয় কুমার এবং পবন কুমার নামে ওই দুই ব্যক্তি এ দিন আদালতে হাজির ছিল। তাদের হয়ে সওয়াল করেন আইনজীবী এপি সিংহ। তিনি এ দিন আদালতকে বলেন, ‘‘আসামীরা কেউই স্বভাবগত ভাবে খুনি নয়। তাদের কোনও পুরনো ক্রিমিনাল রেকর্ড নেই। সুতরাং আদালত তাদের সংশোধনের একটা সুযোগ দিতেই পারে।’’

জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার প্রদান করা নিয়ে প্রতিবাদ

আইনজীবী সিংহ আদালতের কাছে আরও জানান, বিশ্বের অনেক দেশেই মৃত্যুদণ্ডের এখন বিলুপ্তি ঘটেছে। মৃত্যুদণ্ড অপরাধীকে মারে, অপরাধকে নয়। তিনি আদালতে জানান, যে সময় তাঁর মক্কেলকে গ্রেফতার করা হয়েছিল, তখন তারা কমবয়সী ছিল। যে সব যুক্তি দেখিয়ে সাজা কমানোর কতা বলা হয়েছে, তাতে সরকারি আইনজীবী সিদ্ধার্থ লুথরা ক্ষুব্ধ। তিনি এ দিন আদালতে বলেন, ‘‘যে সব আর্জি জানানো হয়েছে, সেগুলো শোনার পরেই তো ২০১৭-য় ফাঁসির নির্দেশে দেওয়া হয়েছিল। তা নিয়ে আবার কথা কেন?’’

সাজাপ্রাপ্তদের বয়ান এবং তাদের আইনজীবীদের সওয়াল শোনার পর আদালত কোনও রায় দেয়নি।  প্রধান বিচারপতি দীপক মিশ্র শুধু বলেন, ‘মৃত্যুদণ্ড এ দেশে আইনসম্মত।’’

যে ভাবে দিল্লির রাস্তায় বাসের ভিতর ওই গণধর্ষণ করা হয়েছিল, নৃশংস ভাবে অত্যাচারের পর ওই তরুণীকে বাস থেকে ফেলে দেওয়া হয়েছিল রাস্তায়— প্রতিবাদের বন্যা বয়ে গিয়েছিল দেশ জুড়ে। দোষীদের কঠোর সাজার দাবি করেছিল তরুণীর পরিবার।