সঞ্জি রাম মেনে নিলেন, ছেলেকে বাঁচাতেই ওই ছোট্ট মেয়েকে খুন

সঞ্জি রাম

জাস্ট দুনিয়া ডেস্ক: সঞ্জি রাম লোকটির নাম। কাঠুয়ার আট বছরের ছোট্ট মেয়েটিকে খুনের ঘটনায় মূল ষড়যন্ত্রী সঞ্জি রাম। পুলিশের কাছে জেরায় সঞ্জি রাম স্বীকার করেছে, ছেলেকে বাঁচাতেই ওই বাচ্চাটিকে খুনের পরিকল্পনা করেছিল।

সঞ্জির ছেলে এবং নাবালক ভাইপো ছোট্ট ওই মেয়েটিকে অপহরণ করে একাধিক বার ধর্ষণ করে। ঘটনার ঠিক চার দিন পর নাকি সঞ্জির কাছে অপরাধের কথা স্বীকার করে ভাইপো। এর পরেই বাচ্চাটিকে খুনের পরিকল্পনা করা হয়। সেই মতো তাকে খুন করে জঙ্গলে ফেলে দেওয়া হয় দেহ। তদন্তকারীরা এমনটাই জানিয়েছেন সংবাদ সংস্থা পিটিআইকে।

তদন্তকারীরা জানিয়েছেন, গত ১০ জানুয়ারি ছোট্ট মেয়েটিকে অপহরণ করা হয়। সেই দিনই রামের ছেলে ও ভাইপো তাকে ধর্যণ করে। ১৪ তারিখে মেয়েটিকে খুন করা হয়। জঙ্গলে তার দেহ মেলে ১৭ তারিখে।

নাবালক ভাইপো, ছেলে বিশাল এবং অন্য পাঁচ জন এই অপহরণ, ধর্ষণ এবং খুনের ঘটনায় অভিযুক্ত। গোটা দেশকে নাড়িয়ে দিয়েছে কাঠুয়ার এই কাণ্ড। এমনকী, একপ্রকার বাধ্য হয়েই কেন্দ্রীয় সরকারকে ১২ বছরের নীচে শিশুদের ধর্ষণের ঘটনায় দোষীদের সর্বাধিক শাস্তি প্রাণদণ্ড করার অধ্যাদেশও জারি করতে হয়।

ষোল বছরের নাবালিকাকে ধর্ষণে দোষী আসারাম 

তদন্তকারীদের দাবি, বাকরওয়াল সম্প্রদায়ের ছোট্ট ওই মেয়েটিতে অপহরণ করে একটি মন্দিরে রাখা হয়েছিল। ওই মন্দিরেরই পুরোহিত ছিলেন সঞ্জি রাম। প্রাথমিক ভাবে তদন্তকারীদের ধারণা, যাযাবর বাকরওয়াল ও গুজ্জর সম্প্রদায়ের মানুষদের হিন্দু অধ্যুষিত এলাকা থেকে বিতাড়িত করতেই ওই অপহরণ করা হয়েছিল। সঞ্জি রামের আইনজীবী অঙ্কুর শর্মা যদিও এ নিয়ে কোনও মন্তব্য করতে রাজি হননি। সঞ্জি তদন্তকারীদের জানিয়েছে, সে অপহরণ এবং যৌন হেনস্থার কথা জেনেছিল ১৩ তারিখ। ভাইপোই তার কাছে স্বীকার করে।

দেবীস্থানেই ছোট্ট মেয়েটিকে ধর্ষণ করা হয় বলেও জানায় সে। এর পর সঞ্জি তাকে বলে, দেবীস্থানে পুজো দিয়ে সে বাড়ি আসছে। ভাইপোকে প্রসাদ নিয়ে বাড়ি যেতে বলে। কিন্তু, ভাইপো দেরি করায়, তাকে গেরে গিয়ে মারধরও করে সঞ্জি। জেরায় সঞ্জি জানায়, তখনই সে ঠিক করে ফেলে ছেলে-ভাইপোকে বাঁচাতে মেয়েটিকে খুন করতে হবে। সেই মতো, ১৪ তারিখ ছেলে বিশাল, তার বন্ধু প্রবেশ কুমার ওরফে মান্নু মেয়েটিকে মন্দিরের বাইরে নিয়ে আসে। তাদের সঙ্গে পরে যোগ দেয় পুলিশ অফিসার দীপক খাজুরিয়া। খুন করার আগে এই দীপক নাকি মেয়েটিকে আরও এক বার ধর্ষণ করতে চেয়েছিল। ১৪ তারিখ রাতেই ছোট্ট মেয়েটিকে খুন করা হয়।

প্রথমে ঠিক করা হয়েছিল, হিরানগরের খালে তার দেহ ফেলে দেওয়া হবে। কিন্তু, সময় মতো গাড়ির ব্যবস্থা করতে না পারায়, সেই কাজ করা যায়নি। এর পর বিশাল, খাজুরিয়া এবং মান্নু মেয়েটির দেহ মন্দিরে ফেরত নিয়ে আসে। চার্জশিটে তদন্তকারীরা তেমনটাই জানিয়েছেন। পর দিন সঞ্জি তাদের জানায়, তার বন্ধু গাড়ি দেবে বলেছিল। কিন্তু, এখন বলছে দেবে না। তাই দেহ জঙ্গলে ফেলে দেওয়ারই নির্দেশ দেয় সে। দেহ মন্দিরে ভারী মাদুর দিয়ে ঢেকে রাখা ছিল। পরে সেই দেহ ফেলে দেওয়া হয় জঙ্গলে। সেখান থেকেই পরে উদ্ধার হয় ওই নাবালিকার দেহ।