করোনার ভয়ে অন্য রোগকে ভুলে গেলে বিপদ আরও বাড়বে

করোনার ভয়েকরোনার ভয়ে

করোনার ভয়ে এতটাই গুটিয়ে রয়েছেন যে গোটা বিশ্ব জুড়ে সারা বছর যে সব রোগ মানুষের চিন্তা বাড়ায় সেই সব কথা ভুলেই গিয়েছেন, জানেন কি এটাই সব থেকে বড় ভুল করছেন। করোনাভাইরাস থাকবে তার সঙ্গে বাকিগুলোও কিন্তু নির্মূল হয়ে যায়নি পৃথিবী থেকে, খেয়াল রাখুন অন্য রোগে আক্রান্ত হচ্ছেন না তো আপনি? কী বলছেন বিশিষ্ট হোমিওপ্যাথি চিকিৎসক ও স্বাস্থ্যপ্রশিক্ষক ধ্রুবজ্যোতি লাহিড়ী


সকলের ভিতরেই করোনাভাইরাস নিয়ে আতঙ্ক প্রবল। কিন্তু, এক রোগের ভয়ে অন্য রোগের চিকিৎসা না করালে কিন্তু ভুগতে হবে। সেটা আমাদের সকলের মাথায় রাখা উচিত।

এক দিকে যেমন চিকিৎসা চেয়েও অনেকে পাচ্ছেন না, অন্য দিকে গুরুতর অসুস্থ হয়েও অনেকে ডাক্তারখানা বা ক্লিনিকে যেতে ভয় পাচ্ছেন। করোনা-আতঙ্ক সকলকে এতটাই ভয় পাইয়ে দিয়েছে যে, অনেকেই তার পুরনো রোগকে চেপে রাখছেন। ফলে, অনেকের ক্ষেত্রেই সেই সব পুরনো রোগের প্রকোপ বাড়ছে। আসলে করোনার দাপটে মানুষ ভুলে যাচ্ছেন আরও একটি গুরুত্বপূর্ণ কথা— একটি রোগ অতিমারির আকার নিয়েছে বলে বাকি  রোগগুলো যে বিদায় নিয়েছে এমনটা নয়।

কিন্তু হার্ট বা কিডনির অসুখ বা ক্যানসারের মতো অনেক রোগ আছে যেগুলি করোনা থেকেও অতি ভয়ঙ্কর। এবং বর্ষাকালে ডেঙ্গি বা ম্যালেরিয়ার প্রাদুর্ভাব তো আছেই। তবে এই সমস্যায় শুধুমাত্র রোগীদের ভাবলেই চলছে না, অনেক চিকিৎসকই তাঁদের ডাক্তারখানা বা ক্লিনিক বন্ধ রেখেছেন। বিশেষত সেই সব চিকিৎসক, যাঁদের সঙ্গত কারণেই রোগীদের একেবারে কাছে আসতে হয়। এর পাশাপাশি চিকিৎসকেরাও বিভিন্ন ধরনের পরীক্ষা-নিরীক্ষা করাতে ভয় পাচ্ছেন। হ্যাঁ, সংক্রমণের ভয়ে।

এখানেই শেষ নয়, চিকিৎসকদের বিভিন্ন রকমের প্রোটেকশন কিট নিয়েও সমস্যা রয়েছে। কিছু রোগের ক্ষেত্রে চিকিৎসকদের প্রেসক্রিপশন ফলো করলেই চলে। কিন্তু হার্ট অ্যাটাকের মতো এমারজেন্সি কিছু ক্ষেত্রে চিকিৎসকের পরামর্শ সঙ্গে সঙ্গে না নিলেই নয়। সেই জন্য বিভিন্ন হাসপাতাল বেসরকারি বা সরকারি বা বিভিন্ন চিকিৎসাকেন্দ্রগুলোতে পরিকাঠামোয় বদল এনেছেন। যে বদলের মাধ্যমে কোভিড রোগীর সঙ্গে নন-কোভিড রোগীরাও চিকিৎসা পেতে পারেন। এ ছাড়াও চিকিৎসকেরা রোগীর হিস্ট্রি জেনে তাকে কোভিড রোগীর সঙ্গে পৃথক করছেন। অর্থাৎ রোগীর উপসর্গ এবং তিনি কোথা থেকে আসছেন অর্থাৎ তাঁর কোভিড আক্রান্ত হওয়ার প্রবণতা কতটা, তা দেখে নেওয়া হচ্ছে।

জ্বর-কাশি-হালকা ব্যথা বা গলায় ব্যথা আছে কিনা ভাল করে শুনে নেওয়া হচ্ছে। সেই সঙ্গে কিছু পরীক্ষা-নিরীক্ষা করা হচ্ছে। যেমন এক্স-রে, সিটিস্ক্যান করে চিকিৎসকেরা বুঝে নেওয়ার চেষ্টা করছেন তিনি আদৌ কোন রোগে ভুগছেন। সেই অনুযায়ী খুব তাড়াতাড়ি ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে। কিছু রোগীর ক্ষেত্রে অতিরিক্ত সাবধানতা অবলম্বন করা দরকার। যেমন, যাঁদের ডায়ালাইসিস চলছে। এ সকল রোগীদের বার বার হাসাপাতালে যেতে হয়। এঁদের চিন্তার কারণ আছে বই কি। তবে যে সকল রোগীরা এক বার বা দু’বার ডাক্তারখানায় গেলেও সমস্যার সমাধান হচ্ছে সেখানে বাড়িতে বসে না থেকে ডাক্তারের পরামর্শ নেওয়া অবশ্যই জরুরি।

তাই শরীরে রোগকে বাসা বাঁধতে দেবেন না। তাড়াতাড়ি ডাক্তার দেখান। অবহেলা করবেন না, তাতে আপনারই সমস্যা বাড়বে বই কমবে না।

(এই বিষয়ে আরও তথ্য পেতে নজর রাখুন জাস্ট দুনিয়ার স্বাস্থ্য বিভাগে  www.justduniya.com/স্বাস্থ্য)

(জাস্ট দুনিয়ার ফেসবুক পেজ লাইক করতে ক্লিক করুন)