কী ভাবে নিজেদের পাঁচতারা ব্যবসা চালাচ্ছে বেসরকারি হাসপাতালগুলো

প্রাইভেট হাসপাতালে গেলে ভাল চিকিৎসা হবে ভাবছেন? সব সময় যে ঠিক তাও নয়। তবুও সরকারি হাসপাতালের থেকে তো ভাল। কিন্তু পকেটের কথা ভেবে পিছিয়ে আসছেন তো? এটাই স্বাভাবিক। যদি সুস্থ হয়ে হাসপাতাল থেকে বাড়ি ফেরেন তার পর সাধারণ মধ্য বিত্তের ঘরের ঘটি-বাটি সব বিক্রি হয়ে গেছে। খাবেন কী, তার উপর দীর্ঘকালীন খরচ তো আছেই। কিন্তু সমস্যাটা কোথায়? এক একটা ফাইভস্টার হোটেল বানিয়ে ফেলা হাসপাতালগুলোর লাভের হিসেব শুনলে চোখ কপালে উঠবে।

একটা সমীক্ষা বলছে বেসরকারি হাসপাতালগুলো মেডিসিন, পরীক্ষা-নিরিক্ষা ও বাদ বাকি বিষয়ে লাভ করেছে ১৭৩৭ শতাংশ। তা হলেই ভাবুন এই লাভের অংশ যাচ্ছে আপনার রক্ত জল করা রোজগার থেকে। ন্যাশনাল ফার্মাসিউটিক্যাল প্রাইসিং অথরিটি সমীক্ষা চালিয়েছিল দিল্লি ও এনসিআর-এর চারটি বেসরকারি হাসপাতালের উপর। আর তাদের সেই সমীক্ষাই এই তথ্য ফাঁস করেছে। এবং এর থেকে বেরিয়ে আসা হিসেব বলছে হাসপাতালের বিলের ৪৬ শতাংশ আসে এখান থেকেই। মঙ্গলবার এই সমীক্ষার তথ্য সামনে এনেছে এনপিপিএ। যেখানে তারা বলেছে, যে সব খাতে বিশাল পরিমান লাভ করছে হাসপাতালগুলো সেখানে এমআরপি হাসপাতালের নিজের তৈরি করা থাকে। যে সংস্থা থেকে নেওয়া হয় তাদের থাকে না।

এনপিপিএ এও জানিয়েছে বেশিরভাগ ওষুধ বা পরীক্ষার জন্য একবার ব্যবহার করা বস্তু, সবই হাসপাতালের ফার্মাসিউটিক্যালের তৈরি। বাইরে থেকে কম দামে কেনার তাই কোনও রাস্তা থাকে না সাধারণ মানুষের। আর এখানেই লাভের অঙ্কটা মিলিয়ে নেয় বেসরকারি হাসপাতালগুলো। এখানেই শেষ নয়। এই সংস্থার সমীক্ষায় জানা গিয়েছে, হাসপাতালগুলো যখন বাইরে থেকে একসঙ্গে অনেক ওষুধ কেনে সেখানেও চলে নানান কারচুপি। বাইরে থেকে কেনা ওষুধের সংস্থাগুলোকে বাধ্য করা হয় এমআরপি বারিয়ে লিখতে। এক কথায় আসল দাম বিকৃত করা হয়। আর সেই দাম রোগীকে বইতে হয়। হাসপাতল কিন্তু কেনে সংস্থার দামেই।

যে জিনিসগুলোর দাম হাসপাতাল বিলের অর্ধেক সেগুলোকে প্যাকেজের মধ্যে ধরা হয় না। এনপিপিএ এই তদন্ত শুরু করে এক পরিবারের অভিযোগের ভিত্তিতে। ডেঙ্গুতে মৃত্যু হয়েছিল সেই পরিবারের একজনের। কিন্তু দেখা যাচ্ছে এই সবের নির্ধারিত কোনও আইন নেই। যে কারণে এই ঘটনা রোখাও যাচ্ছে না। বিভিন্ন শহরে প্রায় প্রতিদিনই ঘটছে এরকম নানা ঘটনা। সমীক্ষার ফলাফলে রীতিমতো স্তম্ভিত এপিপিএ। কিন্তু কী ভাবে নিয়ন্ত্রণে আনা যাবে সেই রাস্তারই খোঁজ নেই।