পুজোর ছুটিতে মেদ বেড়েছে? ব্রেকফাস্টে রাখুন এই খাবারগুলো

পুজোর ছুটিতে মেদ বেড়েছে

জাস্ট দুনিযা ডেস্ক: পুজোর ছুটিতে মেদ বেড়েছে ? এখনও অবশ্য বাকি রয়েছে কালীপুজো, ভাইফোটার মতো উৎসব। খাওয়া-দাওয়া যে জমিয়ে হয়েছে তা নিয়ে কোনো সন্দেহ নেই। এতদিনের সুন্দর, মারকাটারি ফিগারে একটু মেদ জমেছে মনে হচ্ছে। টাইট ফিটং টি-শার্ট ছাপিয়ে একচু ভুড়িও মনে হয়ে উঁকি মারছে। আয়নায় নিজেকে দেখেই মাথা খারাপ হওয়ার জোগার। এতদিন তো উৎসবের মেজাজে কিছুই খেয়াল করেননি। চিন্তা করবেন না। আপনিই পারেন আপনার সব সমস্যা মিটিয়ে ফেলতে।

সুস্থ থাকতে আপনি কী খাচ্ছেন, কখন খাচ্ছেন এটা খুবই জরুরী জিনিস। আমার আমাদের খাওয়ার মধ্যে সব থেকে গুরুত্বপূর্ণ সময় হল ব্রেকফাস্ট। এটা যদি আপনি নিয়মে ফেলে দিতে পারে‌ন তাহলেই কেল্লাফতে। আপনার ফিগার ঠিক রাখা আটকায় কে?

ডাক্তাররা বলেন, সারা রাত খালি পেট থাকার পর ব্রেকফাস্ট পেটপুরে খেতে হয়। তার পর আপনি লাঞ্চে শুধু ফল খেলেন বা দই বা ব্রেড তাতে কিছু এসে যায় না, কিন্তু বাহালি ব্রেকফাস্ট একটু চটকদার হয়। যেমন লুচি-তরকারি। মানে তেলে ভাজা। এই খাবার মোটেও চলবে না রোজ। মাসে একবার হতে পারে। স্বাস্থকর ব্রেকফাস্টের জন্য সব থেকে উপাদেয় খাবার হল দক্ষিণ ভারতীয় কুইজি। যা সব সময়ই খুব স্বাস্থ্যকর।

মুক্তিস কিচেন ও তার উঠে আসা একটা কাহিনী

এ বার দেখে নেওয়া যাক আপনি কী কী খাবেন

১) মুগডাল চিলা

মুগ ডালের মধ্যে রয়েছে ভাল প্রোটিন। যে প্রোটিন মানুষের হজমশক্তি নির্ধারণ করা হর্মোনের খেয়াল রাখে। এটা একবার খেয়ে নিলে সহজে খিদে পায় না। এবং ওজন কমে। বানিয়ে ফেলুন ঘরেই।

খোসা ছাড়ানো মুগ ডাল, ঝিরিঝিরি করে কাটা কাঁচা লঙ্কা, একইভাবে কাটা ধনে পাতা, নুন, অলিভ অয়েল অথবা ঘি, মাশরুম সরু করে কাটা, তেল, পনীর, গোলমরিচ, পেঁয়াজ। মুগ ডালের পেস্ট বানিয়ে নিন। কড়াইতে তেল ও ঘি দিয়ে তার মধ্যে ডালের মিশ্রনটা দিয়ে গোল শেপ বানিয়ে দিন।২-৩ মিনিট করে দুই পাশ ভেজে নিন। কনা থেকে নামিয়ে পনীর, মাশুরুম ভাজা দিয়ে সার্ভ করুন।

২) ডিমের ভুর্জি

ডিমের মতো ব্রেকফাস্টের ভাল বিকল্প আর কিছু হতে পারে না। সে আপনি ব্রেড খান বা অন্য কিছু। শুধু হাফ বয়েল ডিম সেদ্ধর সঙ্গে দুটো ফল খেয়ে নিলেই ব্রেকফাস্ট হয়ে যাবে। তবে আজ বলব ডিমের ভুর্জির কথা। শুধু টাই করবেন  কম তেলে।

ডিম, কুচি করে কাটা পেঁয়াজ, টমেটো। কাঁচা লঙ্কা, ক্যাপসিকাম, আদা, ধনে পাতা, কারিপাতা, ভেজিটেবল অয়েল, জিরা, লাল লঙ্কাগুরো, পাওভাজি মসলা চাইলে ব্যবহার করতে পারেন। সামান্য তেল কড়াইতে গরম করে  তার মধ্যে জিরে, পেঁয়াজ, হিং, কাচা লঙ্কা, কারিপাতা, ক্যপাসিকাম ও আদাদা দিয়ে ৩-৪ মিনিট ভেজে তার মধ্যে টমেটো আর অল্প ধনেপাতা দিয়ে দিন। ২ মিনিট পর নুন দিন। এর পর ডিম ভাল করে ফেটিয়ে এই মিশ্রনের মধ্যে দিয়ে দিন। যতক্ষণ না পুরো রান্না হচ্ছে নাড়ুন। হয়ে গেলে ব্রেড বা তাওয়া রুটির সঙ্গে পরিবেশন করুন। শুধুও খাওয়া যেতে পারে।

৩) ধোকলা

ধোকলা বেসন দিয়ে তৈরি হয় বলে এর প্রোটিনের পরিমান বেশি। তার মধ্যে ধোকলা স্টিমড। ভাজা না হওয়ায় তেল নেই তাতে। এটাও ওজন কমাতে সাহায্য করে। সহজ পাচ্যও। হজম শক্তি বাড়ায়।

১৫ মিনিটেই ঘরে বানিয়ে ফেলতে পারেন ধোকলা। বেসন, সুজি এবং আদা ও কাচালঙ্কা পেস্ট একসঙ্গে মিশিয়ে নিন। এর পর নুন ও লেবুর রস দিন।  হলু দিন জল দিয়ে ভাল করে মিশিয়ে নিন। থকথকে একটা মিশ্রন তৈরি করুন। এর পর সেই মিশ্রনটি মাইক্রোওভেনে হাই ফ্লেমে ৬-৮ মিনিট রাখুন। এর সঙ্গে বানিয়ে নিন এর তরকা। কড়াইতে তেলের মধ্যে সর্ষে, কারিপাতা, কাচালঙ্কা দিয়ে ভেজে জল দিন। এই ভাজা মিশ্রনচি মাইক্রোওভেনে বেকড হওয়া ধোকলার উপর দিয়ে দিন।

৪) পোহা

পোহা আম বাংলায় চিরের পোলাও। ক্যালরি, ওজন সব নিয়ন্ত্রণে রাখে এই পোহা। যা বানাতেও বেশি কষ্ট করতে হয় না। আজকাল বাজারেই তৈরি পোহার প্যাকেট পাওয়া যায়। শুধু জলে ফেলে দিলেই হল।

ভাল করে চিরেটি ধুয়ে নিন। জল পুরো ঝড়ে গেলে কড়াইতে তেল গরম করে তার মধ্যে সর্ষে, কারিপাতা, পেঁয়াজ ও লাললঙ্কা দিয়ে ভেজে নিন।  আলুও দিতে পারেন কুচি করে কেটে। হালকা লাল হয়ে উঠলেতার মধ্যে হলুদগুড়ো দিয়ে দিন। এর পর নুন আর জল ঝড়ানো চিরে দিয়ে ভাল করে নাড়তে থাকুন। হয়ে গেলে আঁচ বন্ধ করে তার মধ্যে লেবুর রস, কাচা লঙ্কা ও ধনেপাতা দিন দিয়ে পরিবেশন করুন।

৫) ইডলি

দক্ষিণ ভারতের এই খাবার এখন গোটা ভারতেই বিখ্যাত। ইডলি ধোসা বাঙালিদেরও খুবিই প্রিয়। খেতেও ভাল, সঙ্গে স্বাস্থ্যকরও। আর এই জাতীয় খাবারে মোটেও তেল-মশলা থাকে না। যাতে হজমের সুবিধে হয়। বাড়িতে তো ওটকস খান। ওটস খেতে খেতে একঘেয়ে হয়ে গেলে তা দিয়ে বানিয়ে ফেলতে পারেন ইডলি।

একটি প্যানে দু’কাপ ওটস সোনালী হওয়া পর্যন্ত শুকনো করে ভাজুন। এর পর ঠান্ডা করে মিক্সিতে দিয়ে ওটারই পাউডার বানিয়ে নিন। একটি বড় প্যানে তেল গরম করুন। সর্ষে দিয়ে ভাজুন। এর পর ছোলা আর অরহর ডাল দিন তাতে। হলুদগুড়ো, কাঁচালঙ্কা, দিয়ে ভাল করে ভাজুন। এরসঙ্গে ঝিড়িঝিড়ি করে কাটা গাজর, কারিপাতা ও অল্প নুন দিয়ে মিনিট দু’য়েক রান্না করুন। ঠান্ডা হতে দিন।

ওটসের পাউডারে নুন, আর দই দিয়ে ভাল করে মিশিয়ে নিন। থকথকে হয়ে গেলে ইডলির পাত্রে ঘি মাখিয়ে তাতে এই মিশ্রনটি দিয়ে দিন। মাঝারি আঁচে ১৫ মিনিট ঢেকে বসিয়ে রাখুন। হয়ে গেলেই নামিয়ে আনুন।