কোভিড সাহায্যে ক্রিকেটাররা, সমালোচনা করার আগে একবার ভাবুন

কোভিড সাহায্যে ক্রিকেটাররা

জাস্ট দুনিয়া ডেস্ক: কোভিড সাহায্যে ক্রিকেটাররা যে এগিয়ে আসবেন সেটাই স্বাভাবিক। এক এক জনের সাহায্যের ধরণ এক এক রকম। সে তিনি সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায় হোন বা বিরাট কোহলি, লক্ষ্মী রতন শুক্লা বা সচিন তেন্ডুলকর। সকলেই হাত লাগিয়েছেন দেশের কঠিন পরিস্থিতিকে সামলে তোলার লক্ষ্যে। ক্রিকেটারদের নিয়ে সমালোচনা সব থেকে সহজ। কারণ তাঁরা সব থেকে বেশি সংবাদ মাধ্যমের নজরে থাকে, থাকেন সব থেকে বেশি প্রচারে। কিছুদিন আগে ক্রিকেটারদের নিয়ে প্রশ্ন তুলেছিলেন শুটার অভিনব বিন্দ্রা। সোশ্যাল মিডিয়ায় সাধারণ মানুষ তো প্রশ্ন তুলতেই থাকেন। কিন্তু কখনও খোঁজ নিয়ে দেখেছেন কি কে কী করছে? সবাই সনু সুদ হবে না এটাই স্বাভাবিক। সনু সুদ একজনই হয়। এখনও পর্যন্ত আমাদের দেশে তা একজনই আছেন। বাকিরাও হাত গুটিয়ে বসে নেই।

মানুষ ভাল নেই, ভাল নেই এই দেশ। কাঁদছে গোটা দেশ। কেউ হারিয়েছে বাবা, কেউ মা তো কেউ সন্তান। কোভিড একটু একটু করে চোখের সামনে কেড়ে নিয়েছে প্রিয় মানুষকে। অসহায়ের মতো দেখতে হয়েছে প্রিয় মানুষের সারাজীবনের জন্য চলে যাওয়া। একটু অক্সিজেনের হাহাকার গোটা দেশ জুড়ে। নিঃশ্বাস নিতে পারছে না মানুষ। সঙ্গে জন্ম নিচ্ছে রাগ, ক্ষোভ। প্রশ্ন উঠছে নির্বাচনগুলো কি পড়ে করলে হত না? মানুষই যদি না বাঁচে তাহলে কিসের রাজপাট!

যাক সে সব কথা। আইপিএল নিয়ে প্রচুর সমালোচনা চারদিকে। শেষ পর্যন্ত বন্ধ হয়েছে আইপিএল। আইপিএল চলতে চলতেই ক্রিকেটাররা সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দিয়েছেন। বিদেশি প্লেয়াররাও এগিয়ে এসেছেন ভারতকে কোভিড পরিস্থিতিতে সাহায্য করতে। ভারতীয়রা তো রয়েছেনই। নিজে কোভিড থেকে সুস্থ হয়ে সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দিয়েছেন সচিন তেন্ডুলকর। এদিন সেই পথে হাঁটলেন ভারত অধিনায়ক বিরাট কোহলি।

মুম্বই ফিরেই তিনি দেখা করেন শিবসেনার যুব দলের সদস্য রাহুল কানালের সঙ্গে। এদিন টুইট করে সেই খবর জানিয়েছেন রাহুল নিজেই। তিনি জানিয়েছেন, বিরাট সাহায্যের সম্পূর্ণ আশ্বাস দিয়েছেন। দেশের মধ্যে কোভিডে সব থেকে ক্ষতিগ্রস্ত রাজ্য মহারাষ্ট্র। রাহুল লেখেন, ‘‘আমাদের অধিনায়কের সঙ্গে দেখা করলাম। তিনি কোভিড পরিস্থিতিতে সাহায্যের জন্য যে ভাবে এগিয়ে এসেছেন তাঁর তাঁকে অনেক শ্রদ্ধা।’’ আগেই এই কথা জানিয়েছিলেন অনুষ্কা শর্মা।

এর আগে ইরফান ও ইউসুফ পাঠান দক্ষিণ দিল্লিতে ফ্রিতে ঢালাও খাওয়ার ব্যবস্থা করেছেন। প্রচুর মানুষ সত্যিই খাওয়ার পাচ্ছিলেন না। এরকম প্রচুর মানুষ এগিয়ে এসেছেন কোভিড ফ্রন্টলাইনার না হলেও সেকেন্ড লাইনার হয়ে।

এবার সেই তালিকায় নাম লেখালেন বাংলার ক্রিকেটার লক্ষ্মীরতণ শুক্লা। এই বছরই রাজনীতি থেকে সরে দাঁড়িয়েছেন তিনি। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বিশ্বস্ত সৈনিক ছিলেন তিনি। তবে বাকিদের মতো অন্য কোনও দলে গিয়ে যোগ দেননি। বরং ফিরেছেন ক্রিকেটে। আইপিএল-এ ধারাভাষ্য করতে দেখা  গিয়েছে লক্ষ্মীকে। সেই ধারাভাষ্য থেকে যে টাকাটা তিনি রোজগার করেছিলেন তার পুরোটাই তিনি দান করলেন মুখ্যমন্ত্রীর ত্রাণ তহবিলে।

এদিন তাঁর জন্মদিনে তাঁর ধারাভাষ্য থেকে রোজগারের সম্পূর্ণ টাকাটাই দিয়ে দিলেন কোভিডের কাজে। এদিন টুইট করে তিনি লেখেন, ‘‘আজ আমার জন্মদিন। আমি আইপিএল ধারাভাষ্যের জন্য যে টাকাটা পেয়েছি তা মুখ্যমন্ত্রীর ত্রাণ তহবিলে দিয়ে দিতে চাই। কোভিডের দ্বিতীয় ঢেউয়ের ভয়ঙ্কর পরিস্থিতির মধ্যে সাধারম মানুষের জন্য আমার ছোট্ট প্রয়াস।’’

এভাবে আরও অনেকে কাজ করে চলেছেন নেপথ্যে। যাঁরা সামনে আসেন না। তাই কে কী করছেন বা করছেন না সেই হিসেব না করে নিজে ময়দানে নেমে পড়াটা অনেক সহজ। তাহলেই দেখা যাবে কত কত মানুষ সব স্বার্থ জলাঞ্জলি দিয়ে নিরলস কাজ করে চলেছেন। কারও প্রচারের লোভ নেই। তবে মাঝে মাঝে প্রচারও করতে হয়ে না হলে মানুষ বোঝে না কাজ হচ্ছে।

(প্রতিদিন নজর রাখুন জাস্ট দুনিয়ার খবরে)

(জাস্ট দুনিয়ার ফেসবুক পেজ লাইক করতে ক্লিক করুন)