আম্ফানের পর ইয়াস, তৈরি মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় অ্যান্ড টিম

আম্ফানের পর ইয়াস

জাস্ট দুনিয়া ডেস্ক: আম্ফানের পর ইয়াস মোকাবিলায় তৈরি রাজ্য সরকার। সময়টা গত বছরের ঠিক এই সময়। কয়েকটা দিন আগে পড়ে। বাংলার উপর আছড়ে পড়েছিল আম্ফান। তছনছ হয়ে গিয়েছিল শহর, শহরতলী থেকে সমুদ্র তীরবর্তী এলাকা। প্রচন্ড পরিমানে ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছিল সুন্দরবন ও তৎসংলগ্ন অঞ্চল। ঝড় থামার পর কলকাতা শহরের যে রূপ দেখা গিয়েছিল তা এই প্রজন্ম অতীতে দেখেনি। কিন্তু গতিতে ছন্দে ফিরেছিল শহর। একটু বেশি সময় লেগেছিল শহরতলির। তবে বসে থাকেনি সরকার। বসে নেই এখনও। যে ক্ষতি আম্ফানে গত বছর হয়েছিল তা থেকে এখনও পুরোপুরি বেড়িয়ে আসতে পারেনি বাংলা। এই অবস্থায় নতুন ঝড়ের হাতছানি। ইয়াস। যা কখনও শোনা যাচ্ছে আম্ফানের থেকেও ভয়ঙ্কর আবার শোনা যাচ্ছে না অতটা প্রভাবও পড়বে না বাংলার উপর।

আম্ফানের গতি প্রকৃতি আগাম নিশ্চিত করা গিয়েছিল কিন্তু ইয়াস সম্পর্কে শেষ মুহূর্ত পর্যন্ত নিশ্চিত করে কিছু বলতে পারছেন না আবহাওয়াবিদরা। কখন কোন দিকে সে ঘুরে যাচ্ছে তাও ঠিক নেই। এই অবস্থায় আশঙ্কা অনেকবেশি। যদিও গত বছরের অভিজ্ঞতাকে কাজে লাগিয়ে বাংলার প্রশাসন ইতিমধ্যেই কোমর বেঁধে নেমে পড়েছে রাস্তায়। জেলায় জেলায় তৈরি হয়েছে  কন্ট্রোলরুম। যেখানে বিপদে পড়লেই করা যাবে যোগাযোগ। শুধু তাই নয় নেতা-মন্ত্রীদের মধ্যে ভাগ হয়ে গিয়েছে সব দায়িত্ব।

বিশেষত, কলকাতা ছাড়া, পূর্ব ও পশ্চিম মেদিনীপুর, উত্তর ও দক্ষিণ ২৪ পরগনার দিকে বেশি নজর থাকবে। ইয়াসের দাপট সব থেকে বেশি পড়ার কথা এই জেলাগুলিতেই। ইতিমধ্যেই দীঘায় জলোচ্ছ্বাসের খবর পাওয়া গিয়েছে। বাঁধ টপকে সুন্দরবনের গ্রামের বাড়িগুলোতে ঢুকে পড়েছে জল। বাধগুলো আম্ফানের পর মেরামতি হলেও নতুন করে আবার তাঁকে পোক্ত করার কাজ শুরু হয়েছিল ইয়াসের খবরে। কিন্তু জলের উচ্চতা আটকাতে পারেনি অনেক জায়গায়।

সদ্য নতুন সরকার গঠন করেছে তৃণমূল। ভোটের তাণ্ডব চলেছে দু’মাস এই রাজ্যে। যার ফল কোভিড সংক্রমণ হাতের বাইরে চলে গিয়েছে। মুখ্যমন্ত্রী পদে তৃতীয়বার বসেই সবার আগে কোভিড নিয়ে যুদ্ধে নামতে হয়েছে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে। সঙ্গে তাঁর সৈনিকরা। পর পর ব্যবস্থা নিতে হয়েছে কোভিড থেকে বাংলাকে মুক্ত করতে। এখনও যদিও তা নিয়ন্ত্রণে নয়। কারণ ভোটের কারণে হাল ধরতে অনেকটাই দেড়ি হয়ে গিয়েছিল।

তার মধ্যে শিরে সংক্রান্তির মতো এই ঝড়। গত বছরও কোভিড পরিস্থিতির মধ্যেই এসেছিল আম্ফান। তবে থেমে নেই মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সরকার। প্রশাসনিক ভবনের কন্ট্রোলরুমে রাত জাগবেন স্বয়ং মুখ্যমন্ত্রী। তার সঙ্গে গোটা রাজ্যে রাত জাগবেন তাঁর সেনারা। আম্ফানের সময়ও সারারাত জেগে বসেছিলেন তিনি। এবার গতবারের থেকে পরিস্থিতি অনেকবেশি নিয়ন্ত্রণে। অভিজ্ঞতাকে কাজে লাগিয়ে আগাম সতর্কতা নেওয়া হয়েছে। সবার আগে নজর দেওয়া হয়েছে মানুষের প্রাণ বাঁচানোর দিকে। ঝুঁকিপূর্ণ জায়গা থেকে সরিয়ে দেওয়া হয়েছে মানুষকে। শুকনো খাবার থেকে ত্রিপল সঙ্গে মাথায় রাখতে হচ্ছে কোভিড পরিস্থিতিকেও।

কিছুদিন আগে ঝড় বয়ে গিয়েছে গুজরাত ও মহারাষ্ট্রে। এবার প্রকৃতির তাণ্ডবের জন্য প্রমাদ গুণছে বাংলা ও ওড়িশা। তার মধ্যেই তৈরি মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় অ্যান্ড টিম। গৃহবন্দি হয়ে কাজ করে চলেছেন ফিরহাদ হাকিম। সরকার গঠনের হ্যাটট্রিক করেছে তৃণমূল। মানুষ বেছে নিয়েছে কাজের মানুষকেই। তার প্রমান প্রতিপদক্ষেপে দিচ্ছে এই সরকার। একটাই প্রশ্ন ঘুরছে এখন বাংলার প্রতি কোণায়, যাঁরা দলে থেকে কাজ করতে পারছিলেন না তাঁরা কোথায়? বাংলার মানুষের পাশে দাঁড়িয়ে কাজ করার তো এখন অনেক সুযোগ। ওই দেখুন, দীপ্সিতাসহ রেড ভলেন্টিয়ার্সরা করছেন, কান্তি গঙ্গোপাধ্যায়কে দেখুন, নেমে পড়েছেন কোমর বেঁধে। তাঁর কিন্তু নিজের রাজ্যের মানুষদের পাশে দাঁড়াতে জয়ীর পতাকার দরকার হয়নি। আপনি কোথায়?

(প্রতিদিন নজর রাখুন জাস্ট দুনিয়ার খবরে)

(জাস্ট দুনিয়ার ফেসবুক পেজ লাইক করতে ক্লিক করুন)